অতীতের কথা
অতীতের কথা
একশো বছর আগের কথা।। যখন বিদেশিরা আমাদের ঘাড়ের ওপর চেপে আমাদের শাসন করতো।। অত্যাচারের কারণে সাধারণ মানুষ অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে।। বিদ্রোহ শুরু হয়, বিদেশি দের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে চেষ্টা করে।। তবে কিছু অর্থ লোভী মানুষ, বিদেশি দের মাথায় হাত বুলিয়ে, তাদের সাহায্য করে নিজের আখের গুছিয়ে নিতে চেষ্টা করে।। তাদের মধ্যে একজন গোপালগঞ্জ এর জমিদার।।
গোপালগঞ্জের জমিদার নারায়ণ রায়চৌধুরী খুব প্রভাবশালী ব্যক্তি।। গঙ্গার তীরে কয়েক হাজার বিঘা জমি তার জমিদারির দখলে।। প্রজারা তার কথা শুনে ভয় পায়, তবে ভয় তদের নেই যারা জমিদার এর কথায় উঠে বসে।। সেবারে দেশে অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ ফসল চাষ করতে পারেনি। । সরকারের পক্ষ থেকে দশ এর এক ভাগ রাজস্ব আদায়ের নির্দেশ এসেছে।। এলাকায় আকাল, খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে।। মানুষ বড়ো সমস্যায় পড়ে গেছে।। সারা বছর কিভাবে চলবে এই চিন্তা অধিকাংশ মানুষের।। আবদুল মান্নান, উচ্চ শিক্ষা লাভ করে এসেছে কলকাতা থেকে।। বিদেশি দের অধীনে চাকরি করবে না বলে শুরু করেছে চাষের কাজ ।। বাবার শরীর অসুস্থ হয়ে গেছে তাই, চাষবাস দেখা তার দায়িত্ব।। খুব পরিশ্রম ও মেহনত করে এবারে ফসল ফলানো সম্ভব হয়েছে, বৃষ্টির কারণে ফসলের পরিমাণ অন্য বছরের তুলনায় অনেক কম।। এই ফসলে খাজনা দিতে হলে সারা বছরের খাবার থাকবে না।। তবে জমিদার এর এলাকায় থাকো, কিছু তো দিতেই হবে, নাহলে লাঠিয়াল এনে ছিনিয়ে নিয়ে।। বেশি খাজনা বাকি থাকলে গরু, ছাগল যা পাবে জমিদারের লোকে নিয়ে যাবে।।
মাঘ মাস এর মাঝামাঝি থেকে জমিদার এর লোকে খাজনা আদায়ের কাজ শুরু করেছে।। প্রত্যেক চাষির কাছে গিয়ে চার ভাগের এক ভাগ খাজনা আদায় করে।। ফসল কম হয়েছে বলে কম দিতে চাইলে গরু, ছাগল দিয়ে খাজনা পরিশোধ করতে হয়। কত জন চাষিকে তাদের ফসলের দু চার সের রেখে জমিদার এর কাছে জমা দিতে হয়েছে।। আবদুল মান্নান এর কাছে জমিদার এর খাজনা আদায়ের লোক গেছে, সে জানে সরকারের নির্দেশ।। এবারে সে তার মোট ফসলের দশ ভাগের এক ভাগ খাজনা দেবে।। মান্নান এর কথায় রেগে গিয়ে লাঠিয়াল তাকে হুমকি দেখায়।। মান্নান তার কথায় ভয় না পেয়ে জমিদার এর বিরুদ্ধে মামলা করার ভয় দেখায়।। কলকাতায় পড়ার সময় বহু দিন রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন।।