STORYMIRROR

Shantanu Das

Romance

4  

Shantanu Das

Romance

অবহেলার পরিনতি (১৮+)

অবহেলার পরিনতি (১৮+)

9 mins
387

   অনুপম আজ আই স্পেসালিস্ট ডঃ আশীষ মালাকার এর কাছে যাবে বলে তার রয়েল এনফইল্ড টা নিয়ে বেরিয়েছে। অনুপম সাউ বয়স ৩৫বছর, ৫.৮"ফুট লম্বা, সুন্দর চেহারা না রোগা না মোটা,গায়ের রং হালকা বাদামী, মাথা ভর্তি চুল ব্যাক ব্রাস করা। অনুপমদের বাড়ি খরগপুর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছোট্ট একটি শহর বেলদায় (কাঁথি রোড)।    ৪৫ মিনিট বাইক চালানোর পর অনুপম পৌঁছল ডঃ আশীষ মালাকারের বাড়ি। ডাক্তার বাবুর বাড়িটা খরগপুরের মালঞ তে। তার বাড়িটা ইংরেজি ইউ অক্ষরের মতো, দুই তলা, নিচের তলার একদিকের সামনে তার ডিস্পেনসারি আর অন্য দিকে সামনে একটি ফার্মেসি সেটা অবশ্য ভারা দিয়েছে, মাঝখানে একটা সুন্দর রাধাকৃষ্ণ মন্দির। উপরে তার রেসিডেন্স।

   অনুপম ডিস্পেনসারির ভিতরে ঢুকলো,দেখল একটি সুন্দরী মেয়ে রিসেপশন কাউন্টারে বসে আছে। অনুপম আগেও অনেকবার এখানে এসেছে, কিন্তু মেয়েটা কে আগে কখনো দেখেনি।ঐ জায়গায় একজন বুড়ো লোক বসতেন। অনুপম সেই মেয়েটির কাছে গিয়ে বলল গুড মর্নিং, মেয়েটি মাথা নিচু করে কম্পিউটারে কিছু এন্ট্রি করছিল। অনুপমের কথা সুনে ওর দিকে তাকিয়ে বলল গুড মর্নিং স্যার, বলুন? অনুপম বলল আমার নাম অনুপম সাউ , আমার নাম এন্ট্রি করে নম্বরটা দিন আর এখন কতো নম্বর চলছে একটু বলে দিন প্লিজ। মেয়েটি হাসি মুখে বলল সিওর স্যার। তারপর মেয়েটি অনুপমের নাম এন্ট্রি করে বলল আপনার নম্বর ২২আর এখন ১৫নম্বর চলছে । অনুপম বলল থ্যাংইউ, মেয়েটি ও একটু হেসে সম্মান জানালো। কাউন্টার পেরিয়ে দুই দিকের দেয়ালে ঘেসা দুটি বড়ো সোফা রাখা আছে,তারই একটি তে বসলো সে। 

    সেই কলেজের সময় থেকে সে চোখে চশমা ব্যবহার শুরু করে। ইদানিং তার চোখের পাওয়ার একটু বেড়েছে মনে হয়। কারণ আগের সপ্তাহে দুই বার কাজে ভুল হয়ে গেছে। সেই জন্যই আজ সে চোখের পরীক্ষা করাতে এসেছে। অনুপম সোফায় বসে চারিদিক দেখতে লাগলো, তখনই ও খেয়াল করে, যেই সোফায় সে বসে আছে তার অন্য প্রান্তে একটি ভাঁজ করা খবরের কাগজ রয়েছে।ও হাত বাড়িয়ে কাগজটি নিয়ে পড়তে সুরু করলো। হঠাৎ ছোট্ট একটি খবর তার চোখে পড়ে 'বৌয়ের ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে স্বামীর আত্মহত্যা'। অনুপমের মনটা খারাপ হয়ে গেল,সে। মনে মনেই বলল স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অবহেলা দূর ব্যাবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। মাত্রাতিরিক্ত চাহিদা, পূরণ না হলেই অবহেলা আর দূর ব্যাবহার।

   অনুপম আর মালতীর বিয়ে হয়েছে সাত বছর হয়ে গেছে। দুই বছর পর ওদের দুটি যমজ মেয়ে সন্তান হয়, তাদের নাম সেলি ও পলি‌। প্রথম প্রথম বেশ ভালোই কাটছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে মালতীর মধ্যে বেশ পরিবর্তন লক্ষ্য করে অনুপম।মালতীর মধ্যে আত্ম অহংকার ও মানুষকে ছোট করে দেখার একটা মানসিকতা তৈরি হয় ফলে দিন দিন ওর চাহিদাও বারতে থাকে।আজ এইটা এনে দাও কাল এটা দাও।আর না এনে দিলেই ঝগড়া,রাগ, দূর ব্যাবহার, অবহেলা। অনেক বোঝানোর চেষ্টা করছে অনুপম কিন্তু কোন লাভ হয়নি, বরং মেয়েদের সামনে অপমানিত হতে হয়েছে অনেক বার। ও মাইনের অর্ধেক এর বেশি মালতীর পিছনে খরচ করে, তবুও তার মনভরে না।এক এক সময় ওর মনে হয় সবকিছু ছেড়ে কোথাও চলে যায়। কিন্তু সেলি আর পলি তাদের বাবাকে খুব ভালোবাসে, অনুপম ও তাদের খুব ভালোবাসে। তাদের মুখের হাসি দেখে ও সব দুঃখ ভুলে যায়।

   অনুপম ডিস্পেনসারির সোফায় বসে যখন নানান চিন্তায় ডুবেছিল তখনই একটি প্রায় ৩০ বয়সি মহিলা ডিস্পেনসারিতে ঢুকলো,এমন অপূর্ব সুন্দরী খুব কম দেখা যায়। মহিলা টি রিসেপশনিস্ট মেয়ে টির সাথে কথা বলছে। অনুপম এক দৃষ্টিতে মহিলাটি কে দেখছে, ওর সব চিন্তা ভাবনার তার ছিরে গেছে। মহিলা টি ৫.৪" ফুট লম্বা,গোল মুখ, মাথা ভর্তি কেশরাশি কোমর পর্যন্ত নেমে আসে, কেশরাশি গুলো একটি রবার ব্যান্ড দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছে আর বাঁ দিকের কপাল থেকে কিছুটা কেশ তার ঠোঁটের উপর পরছে, কথা বলতে বলতে বারবার সে ঐ কেশ গুলোকে তার কানের পেছনে গুঁজে দিচ্ছে।পরনে রানি কালারের শাড়ি,কালো রং এর ব্লাউস, সাদা রঙের হিল জুতো, আঙ্গুল কালো রং এর নেলপালিশ ও ঠোঁটে রানি কালারের লিপস্টিক। মহিলার সারা শরীর থেকে যেন যৌবন ঠিকরে বেরোচ্ছে। 

    মহিলাটি রিসেপশন কাউন্টার থেকে বেরিয়ে যখন ভিতরে আসলো তখন অনুপমের মহিলা টিকে খুব চেনা চেনা মনে হতে লাগলো। কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছেনা। মহিলাটি ভিতরে ঢুকে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে, মনে হচ্ছে বসার জন্য জায়গা খুঁজছে। তখনি অনুপমের সঙ্গে চোখাচোখি হলো। মহিলাটি অনুপমের দিকে কিছুক্ষণ দেখল তারপর একটু হেসে ওর কাছে গিয়ে বলল কেমন আছো অনুপম দা। অনুপম একটু হেসে বলল ভালো আছি। মহিলা টি মনেহয় ওর মনের কথা বুঝতে পারল, তেমনি হেসে বলল আমি তোমার বন্ধু হেমন্ত কুমার বসাক এর বোন নীলিমা।এ বার অনুপমের মনে পরলো। কিন্তু ও একটু অবাক হলো, মনে মনে বললো নীলিমা, সেই নীলিমা?১২-১৩ বছর আগে ও যে নীলিমাকে চিনত এই কি সে? মে মেয়ে সাজ পোশাকের কিছুই বুঝতো না, চুল উস্কোখুস্কো কোনো রকম একটা চুরিদার আর হাওয়াই চটি পড়ে গ্ৰাম থেকে আমাদের বাড়ির কাছে টিউনস পরতে আসতো। তার আজকে এতো পরিবর্তন? এতোগুলো প্রশ্ন মনের মধ্যে চেপে রেখে আবার আগের মত হাসি মুখে বলল ও হ্যা হ্যা চিনতে পেরেছি, কেমন আছো তুমি?বসো এখানে। নীলিমা বসলো তারপর বলল ভালো আছি।আর তোমার দাদা কেমন আছে? অনেক দিন হয়ে গেলো হেমন্তের সঙ্গে দেখা হয়নি। নীলিমা বলল দাদা বৌদি সবাই খুব ভালো আছে। এবার অনুপম জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে তোমার চোখে? নীলিমা একটুখানি হেসে উওর দিল আর বোলো না কাল সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় আচমকা হাওয়াই খানিকটা ধুলো চোখে পড়ে,কাল সারাদিন চেষ্টা করেও বার করতে পারেনি,তাই ডাক্তারবাবু কে দেখাতে এলাম। অনুপম বলল ও, কিন্তু স্কুল? হ্যা আমি এখন এই মালঞ তে একটি প্রাইভেট স্কুলে টিচার।এমন সময় ভিতর থেকে একজন নার্স বেরিয়ে এসে থাকলো, ২২ নম্বর অনুপম সাউ। অনুপম নীলিমাকে বলল ঐ আমার নাম ডাকছে, আমি ঘুরে এসে তোমার সঙ্গে আমার কথা বলবো ঠিক আছে? আচ্ছা ঠিক আছে বলল নীলিমা।

    অনুপম ভিতরে যাওয়ার পর নিলীমার প্রায় ভুলে যাওয়া স্মৃতি গুলো আবার মনে পরতে থাকে। ওদের বাড়ি বেলদা থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে শিউরি গ্ৰামে। ওরা দুই ভাই বোন, নীলিমা আর ওর থেকে পাঁচ বছরের বড়ো দাদা হেমন্ত।এই হেমন্ত আর আর অনুপম এক সময় খুব ভালো বন্ধু ছিল। কতো বার ওদের বাড়ি এসেছে অনুপম। খুব মন খোলা ছেলে ছিল, কোনো কাজ করার আগে একবার ও ভাবতো না,মা মন চায় তাই করতো।আর সেই কারণেই মনে মনে পছন্দ করতো তাকে নীলিমা।ওর এখনো মনে আছে সেই ঝর বৃষ্টির সন্ধ্যার কথা। সপ্তাহে দুই দিন বিকেলে নীলিমা বেলদার কলেজ রোডে টিউশন পরতে আসতো।ও খানেই অনুপমদের বাড়ি। টিউশন শেষ হতে সন্ধ্যা হয়ে যেতো তাই ওর দাদা হেমন্ত ওকে নিতে আসতো। একদিন বাড়ির কাজে আটকে গিয়েছে তাই ওকে আনতে যেতে পারেনি।তাই হেমন্ত অনুপম কে ফোন করে রিকোয়েস্ট করে নীলিমাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার জন্য। অনুপম এক কথায় রাজি হয়ে গেছিলো। নীলিমা টিউশন শেষ করে বেরিয়ে এসে এদিক ওদিক দেখছিলো তখনই একটা দোকান থেকে বেরিয়ে আসে অনুপম। নীলিমার সামনে এসে বলে হেমন্ত আসতে পারছে না তাই আমি তোমাকে বাড়িতে পৌঁছে দেব। নীলিমা কিছুই বললোনা সুধু একটু মাথা নাড়ে। অনুপম বলল এসো ঐ সামনে আমার বাইক দাঁড়িয়ে আছে।ও মাথা নিচু করে অনুপম কে অনুসরন করে। অনুপম বাইকে বসে নীলিমাকে বলে উঠে বসতে। নীলিমা উঠে বসে,অনুপম বাইক চালানো সুরু করে। অনুপমের শরীর থেকে সিগারেটের গন্ধ নিলীমার সরা শরীরে শিহরন বইয়ে দিচ্ছে। নীলিমা অনুপমের কাঁধে পেশী শক্ত করে ধরে আছে আর দাঁত দিয়ে নিজের ঠোট কামড়ে ধরে আছে। ওরা যখন বেলদা থেকে বেরিয়ে এসে কাঁথি রোডে ঢুকলো তখনি হঠাৎ করে ঝর উঠতে সুরু করলো, তার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিদ্যুত চমকানো আর বৃষ্টি সুরু হয়ে গেল। অনুপম এদিক ওদিক দেখছিলো কোথায় দাঁড়ানো যায়। এমন সময় ওর চোখে পড়ে সামনে একটি অনেক দিন বন্ধ হয়ে থাকা ভাঙ্গাচোরা দোকান। অনুপম তাড়াতাড়ি বাইক চালিয়ে সেই দোকানের সামনে থামলো, তারপর দুই জনে দৌড়ে গিয়ে ঢুকে পড়লো। অনুপম রুমাল দিয়ে মুখ হাত মুছতে মুছতে বলল বৃষ্টিটা আর একটু আগে সুরু হলে বেলদা তেই কোথাও দাঁড়াতে পারতাম, তুমি বেশি ভিজেযাওনি তো ? নীলিমা বলল না। অনুপম পকেট থেকে সিগারেটের বাক্স বার করে তার মধ্যে থেকে একটা সিগারেট ধরালো। বাইরে তখন মুষলধারে বৃষ্টি সুরু হয়ে গেছে। সিগারেট আর ভেজা মাটির গন্ধে এক অচেনা উত্তেজনা নীলিমাকে যেন পাগল করে দিচ্ছে। ঠিক সেই সময় ওদের কাছেই খুব জোরে একটা বিদ্যুত চমকালো আর সেই আলোতে অনুপম দেখল নীলিমা ভয়ে কাঁপছে। অনুপম আরো একটু কাছে সরে নীলিমার কধে হাত রেখে বলল ভয় পেওনা তখনি আবার বিদ্যুত চমকালো, নীলিমা ভয়ে অনুপমকে আঁকরে ধরলো। অনুপম বুঝতে পারছিলো নীলিমার সারা শরীর ভয়ে কাঁপছে। নীলিমা তখন ভয় আর লজ্জায় অনুপমের বুকের মাথা গুঁজে দিয়েছে। অনুপম তখন হাতের সিগারেটা ধুরে ফেলে দিয়ে নীলিমার মুখটা উপরে ওঠালো, অন্ধকারের মধ্যেও ও বুঝতে পারলো লজ্জায় ওর মুখ লাল হয়ে গেছে। অনুপম আর নিজেকে সামলাতে পারেনা ও আস্তে করে নিজের ঠোঁট নীলিমার কম্পিত ঠোঁটে বসিয়ে দেয়। নীলিমা ও তাকে কোনো রকম বাধা দেয়নি। অনুপম ওর কোমর ধরে আরো নিজের কাছে টেনে নেয়, নীলিমা ও যেন নিজেকে সম্পুর্ন ভাবে সঁপে দিয়েছে ওর কাছে। তারপর সেই বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যার দুজনে প্রেমের সাগরে ডুবে গিয়েছিল।

   নীলিমা তখন অন্য মনস্ক ভাবে এসব কথা ভাবছে তখন অনুপম ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে ডাকলো নীলিমা। অনুপমের ডাক শুনে ওর হুঁস ফিরল। আবার ওর মুখে সেই হাসি ফুটে উঠল। অনুপম বলল এরপর বাড়ি ফিরবে তো? নীলিমা উওর দিল হ্যাঁ। ঠিক আছে তাহলে আমি তোমাকে বাড়িতে পৌঁছে দেব, আমি বাইক নিয়ে এসেছি। নীলিমার মনটা বেশ খুশি হয়ে গেল। অনুপম আবার বলল তোমার আর কতো জন পরে? নীলিমা বলল আর দুই জন পরে ওর নম্বর। ঠিক আছে আমি বাইরে ওয়েট করছি বলে অনুপম বেরিয়ে গেল। নীলিমার আজকে খরগপুরে অনেক গুলো কাজ ছিল কিন্তু সে অনুপমের সঙ্গে রাইডটা মিস করতে চাইছে না।তাই ওকে বললো যে এখান থেকে সোজা বাড়ি যাবে।

   অনুপম বাইরে বেরিয়ে একটা সিগারেট ধরালো। নীলিমাকে নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর ও নিজের মনের গভীরে খোঁজার চেষ্টা করছে। সেই ঝর বৃষ্টির সন্ধ্যার পর আর নীলিমার সাথে ওর সেরকম ভাবে দেখা হয়নি।করন তার কিছু দিন পরে ও দেরাদুন চলে যায়, কম্পিউটার সায়েন্স এর উপর মাস্টার ডিগ্ৰি করতে।ও চলে যাওয়ার কিছু দিন পরে খবর পেয়েছিলো নীলিমার বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু বিয়ে করতে আসার পথে বরের গাড়িটির এক্সিডেন্ট হয় বর সহ পাঁচ জনের স্পট ডেথ হয়। এরপর নীলিমা বেশ কিছুদিন মানসিক অবসাদে ভুগেছিলো। অনুপম এখন অনেক পাল্টে গেছে, অনেক কিছু বুঝতে শিখেছে।ও বুঝতে পারে সেই সব দিন নীলিমার কেমন কেটেছে।পাড়া, প্রতিবেশী,আত্তিও, সজনের না না কথা ওকে সহ্য করতে হয়েছে বা এখনও সহ্য করতে হয়। তাই নীলিমার মধ্যে এতো পরিবর্তন, এখন কে কি বলে তাতে ওর কিছু যায় আসে না।

   নীলিমা বাইরে বেরিয়ে এসে দেখলো অনুপম একটু দূরে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে।ও অনুপমের কাছে গিয়ে বলল তোমার সিগারেট খাওয়া হয়েছে, তাহলে এবার চলো, শোনো আমার খুব খিদে পেয়েছে, আমি আগে কিছু খাবো। অনুপমের হাসি পেল,ও আজ অনেক দিন পর হেসেছে। তারপর বলল হ্যাঁ আমারও খুব খিদে পেয়েছে। ওরা ওখান থেকে বেরিয়ে একটা ভালো রেস্টুরেন্টে ডুকলো। তারপর খাওয়া দাওয়া সেরে বেরিয়ে পরলো বাড়ির দিকে। খরগপুর থেকে বেরিয়ে ওরা যখন এন.এইচ.৬০ হাইওয়েতে উঠছে। এতক্ষন নীলিমা অনুপমের কাঁধে হাত রেখে বসেছিল, কিন্তু এবার সে অনুপমের হাতের নিচে দিয়ে নিজের হাত গলিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলো। আজও অনুপমের গায়ে সিগারেট ও ঘামের গন্ধ নীলিমাকে দিশেহারা করে তুলেছে। তখন পূর্ব দিকের আকাশ থেকে ঘন কালো মেঘ আসছে। নীলিমার মনটা খুশিতে ভরে উঠল, কিন্তু অনুপম একটু একটু ভয় পাচ্ছে করন এখন ও আর আগের মতো নেই, ওর বিয়ে হয়েছে, বাচ্চা আছে। তাছাড়া ও এখন অনেক কিছু বুঝতে শিখেছে, ওর মন কিছুতেই সাই দিচ্ছে না নীলিমার না বলা প্রস্তাবে। তাই অনুপম বাইকের স্পিড বাড়িয়ে দিলো বৃষ্টি আসার আগেই ওকে বেলদায় পৌঁছতে হবে। কিন্তু তার আর হোলো না।পোক্তাপোল ব্রিজ পেরোতেই ঝম ঝম করে বৃষ্টি নামলো আসে পাশে দাঁড়ানোর কোনো জায়গায় দেখা যাচ্ছে না। অনুপম আরো জোড়ে বাইক চালাতে লাগল, তারপর ওদের নজরে পড়ল একটা অর্ধ সমাপ্ত বাড়ি। নীলিমা বলল ঐ বাড়িটার সামনে দাঁড় করাও,না হলে আমার পুরো ভিজে যাবো। অনুপম দেখল আর কিছু করার নেই, ওখানেই দাঁড়াতে হবে,ও সেই বাড়ির সামনে এসে দাড়ালো। দুজনে সেখানে ঢুকে গেলো। নীলিমা মনে মনে একটু হাসলো। ভিতরে ঢুকে অনুপম এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো,কেউ নেই সেখানে। নীলিমা ওর বুকের উপর থেকে কাপড় সরিয়ে ঝাড়তে লাগলো, অনুপম এক দৃষ্টিতে নীলিমার সৌন্দর্য দেখে কেমন একটা ঘোরের মধ্যে চলে যায়,ওর মনে পড়ে কতো দিন হয়ে গেছে মালতি ওর কাছে আসেনি। এমন সময় হঠাৎ বিদ্যুত চমকালো, অনুপমের ঘোর যেন কেটে গেল,ও নিজেকে ঠিক রাখতে একটা সিগারেট ধরালো। সিগারেট আর ভেজা মাটির গন্ধ নিলীমার ভিতরে ঝড় বয়ে যাচ্ছে, ওর সেই পুরনো কথা মনে পড়ে যাচ্ছে,ও আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছে না, ধীরে ধীরে অনুপমের কাছে গিয়ে হাতটা চেপে ধরলো,আর বলল তোমার সেই দিনের কথা মনে আছে অনুপম দা। অনুপম কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু নীলিমা ওকে কোনো সুযোগ না দিয়েই ওকে জড়িয়ে ধরে, ওর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বসিয়ে দেয়, অনুপম আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।ও দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো নীলিমাকে। আবার দুজনে সেই বৃষ্টি ভেজা দুপুরে প্রেমের সাগরে গাঁ ভাসিয়ে দিল।

              সমাপ্ত


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance