শ্রাবণ ধারা
শ্রাবণ ধারা


বৃষ্টি মানে কি কোনো মনখারাপী সকাল?
কাদাময় পথঘাট, স্তিমিত বাতাস;
অজানায় কে যেন ধরেছে বেহাগ সুর!
দিগ্বিদিকে শূন্যতার রাসে মেতেছে শ্রাবণ
ফোঁটায় করে ঝরিয়ে দিচ্ছে পশলা বারি,
জানালার কাঁচে জমে অজস্র বিন্দুর সারি।
বৃষ্টি মানে কি কোনো বেখেয়ালি দুপুর?
খিচুড়ির সুখ যখন মনে গজায় ডানা
উড়ে যেতে ইচ্ছে হয় রহস্যের ঘন প্রদেশে--
হেডফোনটিকে কানের গহিনে ধরে।
মেঘলা গগনে নৈর্ঋত কোণে অস্তরাগের আলো;
বাতাসে খেলে বেড়ানো সিক্ত মাটির গন্ধে,
বিকেল ছুঁয়ে আঁধার নামে জীমূতেরই স্কন্ধে।
বৃষ্টি মানে কি কোনো ছত্রপরাগ বিকেল?
কুঞ্জ ঘিরে রেণুর শোভা, কুসুম সুবাস,
মাতোয়ারা মনপাখিটি পক্ষ মেলে দিচ্ছে উড়ান;
মাধুকরী তখন পূরবী রাগের সুর তুলেছে
পদ্মাদিঘির মেয়েটির গোছাভর্তি কেশের বাহারে,
উথালিপাথালি করছে আমার বুকের উত্তরে।
বৃষ্টি মানে কি কোনো প্রেমরাগিনী রাত?
হিমেল হাওয়ায় দুলছে দুটি হৃদয়
সিক্ত হতে চাইছে নক্ষত্রের জোয়ারে;
শ্রাবণের ধারার ছন্দে ঝরছে বর্ষণ।
আত্ম-অভিসারে মগ্ন দুই রজনীর চিরাগ,
মোহে মোহে কম্পান্বিত স্পন্দনের সুতান;
বৃষ্টি মানে কি তবে অপেক্ষার অবসান?