নিশীথিনী
নিশীথিনী
সুদূরপ্রসারী অম্বর যদি সুধায় আমায় কভু,
"কুরঙ্গ ধায় নিশার মায়ায়, তবু কেন বিমূঢ়?"
উত্তর মোর, "রাত্রির ঘোর, মেলিতে পারিনা আঁখি।"
কার নিলীমায়, ছিন্ন ছায়ায় গিয়াছো মোরে রাখি?
মধ্যগগনে, মলয় পবনে, উত্তরী মায়া তলে,
হাসিয়া বেড়ায়, জোছনা সাজায়, কে সে তপোবনে?
নিদ্রার রেশে, ঈষৎ আলোতে দেখিনু অন্ধকারে,
ঝঙ্কার রাজে নুপুরের তালে, কেশের মাধুরী ঝরে।
খোঁপার খাঁজে, কানন সাজে, অদ্রির চূড়া নত,
যমুনার কুল, উতলা-ব্যাকুল, হৃদয় গভীরে ক্ষত।
চোখ যেন তার নিশার স্বপন, শত চিত্রার ন্যায়!
হাজারো পুষ্প হার মেনে যায় রূপ-কুজ্ঝটিকায়,
আঁচলে তাহার মুক্তা ঝরে, পান্না লুকায় লাজে,
কি দিয়া বলো সাজাইবো তারে, বলো কোন কারুকাজে?
হাসনাহেনার সুরভী লোটে সে, চন্দ্রের মতো চায়,
যতো ছিলো মোর, যাহা ছিলো মোর, বৃথা যেন সবই হায়!
মুখ তার জ্বলে জোনাকির মতো, হাসিলে যে নামে পূর্নিমা,
নৃত্যের ছলে হরে সে শান্তি, পল্লবে জমে কুহেলিকা।
মৃত্তিকা কাঁপে হৃদয়ের ন্যায়, ওগো কোথা যাও নিশীথিনী?
অম্বর মোরে কোথা নিয়ে যাও? ভরেনি যে মোর দুই আঁখি।
বাড়ুক রজনী, তবুও আমায় করুণা করো হে মেঘমালা,
পুলক ছাড়িয়া, দ্যুলোকের তরে নেই কোন মোর টান-তাড়া।
কাটিলো প্রহর, জাগিলো সূর্য, ফুটিলো সূর্যমুখী,
একরাশ ব্যথা জমে আছে যেন, বাজে সে কণ্ঠধ্বনি।

