গরীব
গরীব
আলো ঝলমল প্রাচুর্যের অট্টালিকায় বসে
কি করে শুনবে তুমি-
অন্ধকার নিঝুম রাতের আর্তনাদ!
কি করে দেখবে বলো পথ শিশুদের হাহাকার!
তোমার ছোট এক শৌখিনতার মূল্য
গরীবের সারাদিনের পরিশ্রমের মাথার ঘাম,
গরীবের বিলাসিতা মিড ডে মিল
আর বস্তাপচা রেশনের চাল,
কি করে বুঝবে তুমি দারিদ্রের অভিশাপ!!
তোমার মনে গরীব মানে নোংরা ছেঁড়া জামা,
তোমার মনে গরীব মানে ভাঙা ঘরের চালা।
তোমার মনে গরীব মানে অশিক্ষিত- অশালীন -
তোমার মনে গরীব মানে শিষ্টাচার বিহীন।
তুমি ভাবো গরীব মানে গায়ে ঘামের গন্ধ,
তোমার মনের দরজা গরীবের জন্য চিরতরে বন্ধ।
কিন্তু ঐ গরীবই তোমার ঘরের বাসন ধোয়ার মাসী,
ঐ গরীবই তোমার বুড়ো বয়সের আয়া মাসী।
ঐ গরীবই বানায় তোমার স্বপ্নের বাড়ি,
ঐ গরীবই চালায় তোমার হাওয়া গাড়ী।
খাদ্য-শস্য,জামা-জুতো জীবনের সব প্রয়োজনেই ঐ গরীবই সহায়ক।
তাইতো তোমরা সবাই চাও
গরীবি নিঃশেষ না হোক।
তোমাদের কাজ করবে কে,
সেটা ভেবে ভয় পাও,
গরীব চিরদিন গরীব থাকুক-সেটাই তোমরা চাও।
রাজনৈতিক নেতারাও ভাবে-
সবাই শিক্ষিত-বড়লোক হয়ে গেলে ভোট কে দেবে?
অধিকার ফলাবে সে কার উপর,
তার প্রভুত্ব মানবে কে?
তাই মুখে বলো সহানুভূতির বড় বড় বুলি,
করো আন্দোলন ঘুরে অলি গলি।
অল্প কিছু খাবার দিয়ে বাঁচিয়ে রাখো এদের,
আশার আলো চোখে এঁকে দিয়ে
ভোট কিনে নেও তাদের।
সবাই ভাবে এত বড় মানুষ হয়েও তুমি কত মহান,
তারা সবাই করে তোমার জয়গান।
সেই অবসরে তুমি শুধু তোমার কথা ভাবো,
নিজের স্বার্থে গরীবি বাঁচিয়ে তুমি রাখো।