Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

সুমন সাঁতরা

Drama Romance Others

3  

সুমন সাঁতরা

Drama Romance Others

আমার নীলাঞ্জনা

আমার নীলাঞ্জনা

5 mins
384


না আমি আজ কোনো গল্প বলবো না।কিন্তু গল্প হিসাবেও ধরতে চাইলে ধরতে পারো l

ফেলে আসা কিছু স্মৃতির ভান্ডার থেকে একটা ছোটো গল্প শোনাবো তোমাদের l রবি সেন আমার নাম l বয়স তখন সাতাশ, ঘটনাটি আজ থেকে ১০ বছর আগেকার ঘটনা। তখন সবে কলেজ শিক্ষায় পা দিয়েছি l বি.এ. জেনারেল নিয়ে ভর্তি হয়েছি, এই নয় যে আমার নাম্বার ভালো ছিল না, উচ্চমাধ্যমিক খুব ভালোভাবেই পাস করে ছিলাম, তবুও আমার ইচ্ছা হয়নি,তারউপর বন্ধুরা সবাই জেনারেল নিয়ে পড়বে আর আমি কিনা তাদের থেকে আলাদা হয়ে অনার্স নেবো? তাই আমিও পাসে ভর্তি হলাম । তার জন্য বাড়িতে বকাও কম খায়নি কিন্তু l

কথা মতো সবাই দলে দলে আমরা কলেজে যাওয়া শুরু করলাম, আনন্দ উল্লাসে কাটতে লাগলো দিনগুলো l একদিন এমন হলো সেদিন আমার কোনো বন্ধুরা কলেজে আসেনি, তাই আমি কলেজ ক্যান্টিনে বসে সময় কাটাতে লাগলাম। ক্যান্টিন ফাঁকাই ছিল l তবে এদিন ওদিক চনমন করতে গিয়ে একটি মেয়েকে এক কোণে বসে থাকতে দেখলাম l মেয়েটিকে আগে কখনও কলেজে দেখেছি বলে মনে হল না l মেয়েটি কিছু একটা করছিলো আমাকে তার দিকে তাকাতে দেখে জানিনা কী ভাবলো, সেখান থেকে উঠে চলে গেলো। ব্যাপারটা বুঝতে পারলাম না, এক কাপ কফি বলে, কারণ ভাবতে লাগলাম l

তারপর আর একদিন মেয়েটাকে লাইব্রেরিতে দেখলাম l তবে এবার ভালোভাবে তার মুখটা আমি স্পষ্ট দেখলাম, মানে দেখার চেষ্টা করলাম কারণ তার মুখটা অর্ধেক চুলে ঢাকা ছিল । তবু ও দেখতে কেমন ছিল সে কথা বলবো না। আমার দৃষ্টি আটকে গেলো তার হাতে একটা মহাদেবের ছবির দিকে তাকাতে l দেখে টেটু মনে হল l মানে মহাদেবের ভক্ত l কিন্তু কেনো জানি না আমার কাছে তাকে স্বপ্নে দেখা রাজকুমারী লাগছিল। আমি ভাবলাম যদি কথা বলতে যায় আবার যদি উঠে চলে যায়, তাই দূর থেকে তাকে দেখতে লাগলাম হঠাৎ সে আমার দিকে তাকালো এবার তার মুখে মিষ্টি একটা হালকা হাসির রেস দেখা গেলো l আমি এবার সাহস করে কথা বলতে যাব কি সে আবার হুট করে চলে গেলো। সেদিন রাতে আর ঘুম হলো না, তার সেই হাসিটা আমি কিছুতেই ভুলতে পারলাম না l হয়তো ভুলতেও চাইছিলাম না l তাই ঠিক করে নিলাম যে পরেরদিন আগে গিয়ে তার সাথে কথা বলবো, তারপর অন্য কিছু l


যথারীতি কলেজ গেলাম সব জায়গায় খুঁজলাম তাকে , না পেলাম না l মন খারাপ হয়ে গেলো l আমদের কলেজের সামনে একটা পুকুর ছিল l যার চারপাশে বেড়া দিয়ে অনেক ফুল গাছ লাগিয়ে পার্ক মতো করা l আমি সেখানের একটা বেঞ্চে বসে ভাবতে লাগলাম এবার কী করবো l ঠিক তখন মেয়েটিকে আমি কলেজ থেকে বেরিয়ে চলে যেতে দেখলাম l অবাক কান্ড! আমি সব জায়গায় খুঁজলাম কিন্তু দেখতে পাইনি, তাহলে কোথায় ছিল? রহস্যটা আরও বেড়ে গেলো l বন্ধুদের সব কথা জানালাম l ভাবলাম তারা হেল্প করবে, কিন্তু সে গুড়ে বালি, উল্টে রবি প্রেমে পড়েছে গো, কেমন দেখতে, নাম কি পার্টি কবে দিচ্ছিস বলে রাগাতে লাগলো l আচ্ছা মুশকিলে পড়া গেলো! আরে নাম ধাম জানলে এখানে কী চুপচাপ বসে থাকি? আমি বুঝলাম যে আমার যুদ্ধ আমাকে লড়তে হবে l এমন ভাবেই কিছুদিন কাটলো আমি তার দেখা পেলাম না l কিন্তু সেদিন ছিল কলেজ অনুষ্ঠান আমি জানতাম যে সে এখানে আসবে না। সে ব্যাতিক্রমী l রহস্যময়ী l সে এই সব থেকে দূরে থাকতে ভালোবাসে সেটা বুঝতে বাকি নেই l কিন্তু না আমি আবার ভুল প্রমাণ হলাম l দেখলাম খুব সহজ-সরল একটা শাড়ী, হ্যাঁ মনে আছে আকাশি রঙের শাড়ী ছিল, চুল খোলা, কানে দুল, কপালে টিপ আর হ্যাঁ মহাদেবও আছেন l না আমি আজও বলবো না তাকে কেমন লাগছিলো l সেটা একান্ত আমার পাওয়া l মেয়েটি আমাকে আরও অবাক করে দিয়ে কাছে এসে জিজ্ঞেসা করলো, "বলুন কেমন আছেন?"

আমিতো আরো নার্ভাস হয়ে গেলাম l অনেক কষ্টে বললাম "আপনি কি আমাকে চেনেন?" 


সে কোনো উত্তর না দিয়ে সেদিনের মতো মিষ্টি করে হেসে পাশ কাটিয়ে ভিতরে চলে গেলো l আমি কিছুক্ষণ চুপচাপ কেবলার মত দাঁড়িয়ে রইলাম l হুঁশ হতে তখনই ভিতরে তাকে খুঁজতে গেলাম, না!দেখতে পেলাম না l হয়তো আমি নিজেই তাকে খুঁজে পেতে চাইছিলাম না, তার সেই মাঝে মাঝে দেখা পাওয়ার আনন্দটা অন্যরকম লাগছিলো, এক কাল্পনিক লুকোচুরি l এছাড়া সেই রহস্যময়ী আমার সেই মনের কথাটা জানতো বোধহয়, তাই মাঝে মাঝে আমাকে আনন্দ দিয়ে চলে যেতো। কিন্তু তার নাম জানাটা খুব দরকার ছিল, কারণ নিজেও জানি না আমি নিজের অজান্তে তাকে কখন ভালোবেসে ফেলেছি l এইভাবে অনেককটা দিন কেটে গেলো তার দেখা না পেয়েই। এক বছর কেটে গেলো তার দেখা পাইনি।


সেদিন ছিলো বরুণ এর জন্মদিন সেই জন্যই দিনটার কথা আমি আজও মনে রেখেছি। সবাই মিলে একসাথে মদ খাওয়া হচ্ছিল, একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন এলো আমার ফোনে, রেসিভ করলাম। ওপাশ থেকে অচেনা ও কিছুটা চেনা  গলারস্বর কানে এলো l

"বলুন কেমন আছেন?"

কি মিল ঐ দুই গলায় l আমি চুপ হয়ে শুনতে লাগলাম, ওপার

থেকে হ্যালো রবি

-হ্যালো, কে?

-আমি, নীলাঞ্জনা দাস বলছি, তোমার কলেজেপড়তাম।

-নীলাঞ্জনা, না ঠিক চিন্তে পারলাম না তো l

(এতো দিনে আমি তার নাম জানতে পারলাম )

-হ্যাঁ, জানি তুমি আমাকে চিনবে না, তোমার সাথে আমার কিছু দরকারি কথা আছে, দেখলে   হয়তো তুমি আমাকে চিনতে পারবে l

-কি কথা l

-সেটা দেখা হলেই জানতে পারবে, আমরা কি দেখা করতে পারি

-ঠিক আছে বলুন l কবে, কোথায় দেখা করতে চান?

-কাল, বিকাল ৪.৩০তে কলেজ পার্কে।

ঠিক আছে বলার আগেই ফোনটা খট করে কেটে গেলো l

আমি ভাবতে থাকলাম কি এমন হলো যে ও আমাকে দেখা করতে বললো! কি এমন কথা যা ফোনে বলা যায় না।

যথারীতি পরের দিন ঠিক ৪টের সময়, হ্যাঁ একটু আগেই গেলাম, যাকে নিয়ে আমার এতো ভাবনা-ভালোবাসা যার রহস্য ভেদ করার জেদ ছিলো এক সময়, সে নিজে থেকে তার রহস্য ভেদ করতে আসছে। একদিকে আনন্দর এক দিকে ভয় জানি না কি কথা বলার জন্য আমাকে ডেকেছে।

আমি অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর তাকে আসতে দেখলাম। বুকের ভিতরটা গন গণ করতে লাগলো,.....

অমনি বিকাশ বলে উঠলো স্যার এটা কি সত্যি নাকি, আমাদের বানিয়ে বানিয়ে গল্প শোনাচ্ছেন? আমি হাসলাম, কিছু বলতে যাবো অমনি আমার স্ত্রী চা নিয়ে ঘোরে ঢুকলো, আর সবাই তার হাতের সেই মহাদেবর সেই চিহ্নটা লক্ষ্য করলো, তখনই ব্যাপারটা বুঝতে পারলো। হাসি হাসি মুখ নিয়ে সবাই আমার দিকে চেয়ে নিজেদের নিজেদের বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলো।

নীলাঞ্জনার রহস্য এখনো আমি ভেদ করতে পারিনি...

     

সেই বিকালের সাক্ষাতটা না হয় অন্য একদিন আপনাদের শোনাবো। আজকের মত বিদায় নিলাম। থাক না কিছু রহস্য, রহস্য না থাকলে বেঁচে থাকার স্বাদ থাকে না। 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama