সুমন সাঁতরা

Romance Classics Inspirational

4  

সুমন সাঁতরা

Romance Classics Inspirational

অনুপমার পিছুটান

অনুপমার পিছুটান

9 mins
588


ট্রেন আসতে এখনো অনেকটা সময় বাকি আছে l চারদিকে ভিড় ঠাসা মানুষের কোলাহল কানে আসছে l দোকানদারগুলো ভিন্ন ভিন্ন ভঙ্গিমায়, ক্রেতাদের কাছে ডাকার চেষ্টা করছে l কিছু কিছু হকার অনুপমার সামনে গিয়েও বিক্রি চেষ্টা করলো, কিন্তু বিফল হয়ে ফিরে গেলো l প্লাটফর্মের একদম শেষ প্রান্তে অনুপমা বসে আছে l এদিকটা মানুষ জন কম থাকায়, প্ল্যাটফর্ম সিটে গা এলিয়ে দিয়েছে সে l পাশে আছে তার চার বছরের ছেলে সূর্য একমনে খেলছে l অনেকক্ষন বসে থাকতে থাকতে অনুপমা, পুরোনো স্মৃতির ডায়েরি ঘাঁটতে লাগলো l ফিরে গেলো পাঁচ বছর আগের নিজের জীবনে l

বিমলের সাথে প্রথম দেখা হয়েছিল কলেজে l প্রথম দেখাতে একে ওপরের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলো তারা l তারপর বিয়ে হয়েছিল দু-পরিবারের সম্মতিতে l বাড়িতে অনুপমা,বিমল ও তার মা l বিমলের বাবা অনেক দিন আগেই একটা গাড়ি একসিডেন্টে মারা যান l তিনজনের সুখী পরিবার ছিল তার l এমনকি শুভদৃষ্টির সময় বিমলের চোখ মারার কথাটা হঠাৎ মনে পড়ায় , নিজেই নিজে একটু হেসে ফেললো সে l সব কিছুই ঠিক-ঠাক চোলছিল l বিমলের অনুপমার প্রতি ভালোবাসার পরিমানটা  বিয়ের পরে আরো বেশি বেড়ে গিয়েছিলো l একটুও চোখের আড়াল করতো না তাকে l শাশুড়িমাও মেয়ের মতো ভালোবাসতো l তাই অনুপমা নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী মনে করত l এমনভাবে এক বছর কেটে গিয়েছিলো l তারপর শাশুড়ি মা জোর দিতে লাগলো বাড়িতে যেন এবার নতুন অতিথি নিয়ে আসা হয় l কিন্তু অনেক চেষ্টার পরও কোনো ফল হল না l তারপর মা একটু যেন বদলে যেতে লাগলো l মাঝে মাঝে তাকে কথা শোনাতে লাগলো l এমনভাবে আরো এক বছর কেটে গেলো l দুবছর পরেও তাদের যখন কোনো সন্তান হলনা l মা বলতে গেলে পুরো-পুরি বদলে গিয়েছিলো l সব সময়ই খোটা দিতে লাগলো l পুজো ঘরেও ঢুকতে দিতো না l

অনুপমা রাতে ঘুমানোর সময়, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতো l বিমল তাকে বোঝাতো,'দেখো এতে তো কারোরই কিছু করার নেই l প্লিজ কেঁদো না l দেখো আমি সব ঠিক করে দেবো l' শাশুড়িমা অর্থাৎ নিরূপমাদেবী বিমলকে আবার বিয়ে করতে জোর করতে লাগলো l অনুপমার সামনেই বিমলকে বিয়ে করতে বলতো, কিন্তু অনুপমার তাতে কিছু বলার সাহস হতোনা l

একদিন ঘর ঝাঁট দিতে দিতে ঘরের টেবিলে একটা ফাইল পরে থাকতে দেখলো l অনুপমার বুঝতে অসুবিধা হলোনা যে এটা তাঁদের মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট l অনুপমা তাড়াতাড়ি ওটা খুলতে যাবে কি ,অমনি বিমল তাড়াতাড়ি হাত থেকে সেটা কেড়ে নেয় l অনুপমা জিজ্ঞাসা করে 'ওটা আমাদের মেডিকেল রিপোর্টতো? '

বিমল কিছুক্ষন চুপ থেকে উত্তর দেয় 'হ্যাঁ তাতে কি হয়েছে l'

'কি হয়েছে মানে? ওটা আমাকে দেখতে দাও! ঐরকমভাবে কেড়ে নিলে কেন?'

'না আমি চাইনা তুমি এটা দেখো? '

'কেন?' বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করে অনুপমা l

বিমল একটু ভয় ভয়ে উত্তর দেয় 'না এটা দেখলে, আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা কিছুটা কমে যেতে পারে, কারণ এতে লেখা আছে, আমার অক্ষমতাই আমাদের সন্তান হতে পারবেনা l'

কথাটা শেষ হতেই একটা আওয়াজে আমাদের দুজনের দৃষ্টি গেলো দরজার দিকে l দেখলাম মায়ের হাত থেকে পুজোর থালাটা নীচে পড়ে গেছে l তিনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবটাই শুনেছে বোধ হয় l

'আমাকে ক্ষমা করে দাও অনুপমা! আমি তোমাকে সন্তান সুখ দিতে পারলামনা l' অনুপমা বিমলের হাত দুটো ধরে কাঁদতে লাগলো l 'তুমি কি পাগল হয়েছো? তুমি কি করে ভাবলে? এটা শুনে আমার ভালোবাসা কমে যাবে তোমার ওপর l' তারপর চোখের জল মুছে জিজ্ঞাসা করলো 'মেডিকেল টেস্ট তো আমরা অনেকদিন হোলো করেছি, আজ এই রিপোর্টটা কোথা থেকে এলো? আগে যখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম বলেছিলে 'তারা নাকি ভালোভাবে টেস্ট করতে পারেনি, কি যেন একটা ভুল হয়েছিল l তাই আবার একবার যেতে বলেছে l' কিন্তু তুমিতো আর আমাকে নিয়ে যাওনি !

বিমল আমতা-আমতা করে উত্তর দিলো-' আমি জানিনা !' বলে সেখান থেকে দ্রুত চলে গেলো l ওপাশ থেকে মাও চলে গেছে নিজের ঘরে l

সেদিনের পর থেকে মায়ের ব্যবহার একটু ভালো হয়েছিল l এখন ছেলেকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে আর বলতে পারত না l কিন্তু অনুপমার একটা খটকা লাগছিলো l তাই সে যেখান থেকে টেস্ট করিয়েছিলো, সেখানে গিয়ে অনেক খোজা-খুজির পর যা জানতে পেরেছিলো, সেটা শুনে তার ভালোবাসা বিমলের প্রতি অনেকগুন বেড়ে গিয়েছিলো l অক্ষম বিমল না ! অক্ষম সে নিজে l তার চোখ বাঁধ ভাঙলো l বাড়ি ফেরার সময় তার মনে হতে লাগলো, একটা মানুষ কাউকে কত পরিমান ভালোবাসলে এমন করতে পারে l পাড়ার কত লোক কত কিছু বলে তার পুরুষত্ব নিয়ে l অফিসে কতজন হাসা-হাসি করে তাকে নিয়ে l কিন্তু সে কিছুই বলেনা l সব কিছু শুধু আমার জন্য সহ্য করছে l এবার বুঝলো অনুপমা, যে কেন সেদিন টেবিলে রিপোর্টটা রাখা ছিল l যে সময়ে তার মায়ের পুজো শেষ হয় ঠিক সেই সময়ে l বিমল ইচ্ছা করেই রেখে ছিল l তার মায়ের কথা আর আত্মীয়দের হাত থেকে আমাকে বাঁচাতে l চোখের জল তার বারণ শুনছে না, অঝোরে ভিজে চলেছে l আরো অন্যানসব আরোহীরা তার দিকে তাকিয়ে আছে l সে যতই জল মোছে , আরো জল এসে সেই জায়গাটা পূরণ করে l এমন একটা মানুষকে সে কি করে কষ্ট দিতে পারে? বিয়ের আগে সব সময় বিমল বলতো-'আমাদের যদি ছেলে হয় নাম রাখবো সূর্য আর মেয়ে হলে রানী l'

সে জানে যতদিন সে থাকবে, বিমল বিয়ে করতে কখনো রাজি হবেনা, আর সেবারে বাচ্চা এডপ্ট করার কথা তুলতে মা রেগে গিয়ে বলেছিল 'না না, ওই সব কার না কার বাচ্চা, কি না কি জাত, আমি বেঁচে থাকা অবধি এই বাড়িতে কোনো অনাথ বাচ্চা আসবেনা l যদি আসে আমার মরা মুখ দেখবিl ' তাই বিমল আর কিছু বলতে পারেনি l

বাড়ি ফিরতে ফিরতে একটু সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল l কিন্তু মা তাকে কিছু জিজ্ঞাসা করেনি l রাত্রে ঘুমানোর সময় বিমল জিজ্ঞাসা করেছিল 'মা বলছিল তুমি কোথাও নাকি বেরিয়েছিলে?'

অনুপমা কি বলবে বুঝতে না পেরে কোনো উত্তর দিলোনা l

বিমল আবার বললো 'আচ্ছা তোমার বলতে ইচ্ছা না করলে বলতে হবে না l কিন্তু তুমি আজ এতো চুপচাপ কেন? আমি আসা থেকে কিছু বলছো না যে, রাগ করেছো আমার ওপরে?'

অনুপমা এবার চুপ না থাকতে পেরে বললো ' তুমি আমাকে অনেক ভালোবাস তাইনা?'

'কেন? কোনো সন্দেহ আছে তাতে? '

অনুপমার চোখে আবার সেই চেনা জল l বিমলের হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছে সে l

' এই দেখো কাঁদছো কেন? আচ্ছা বাবা বলছি খুব ভালোবাসি হয়েছে? ' এই বলে অনুপমাকে কাছে টেনে নিয়ে তার চোখের জল মুছে দিয়ে, একটা মিষ্টি চুমু খেলো তার ঠোঁটে l

কখন যে সকাল হয়ে গেছে তার খেয়াল নেই l বিমল ঘুম থেকে উঠে অনুপমাকে খুঁজতে লাগলো l তারপর মার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, মা পুজো ঘরে ছিল l ছেলের কথা শুনে বাইরে এসে বললো ' আমি কি করে জানবো? আমিতো ভাবলাম ও এখনো ঘুমাচ্ছে l কাল অনেক রাতে ঘুমিয়েছে, তাই হয়তো একটু দেরি হবে ভাবলাম l তাই আমিও ডাকিনি l'

বিমল আকাশ থেকে পড়লো, দৌড়ে বাইরে চলে গিয়ে, কোনো সন্ধান না পেয়ে ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরেছিল, তারপর চোখ গেলো টেবিলের ওপর রাখা ফুলদানির পাশে একটা কাগজের টুকরোর ওপর, সেটা পড়তেই বিমলের বুক ফেটে গেলো, তাতে লেখা ছিল

 'আমাকে রিপোর্ট না দেখানোর কারণ আমি জানতে পেরেছি, তাই আমি থাকলে তো তুমি আর বিয়ে করবেনা, সুতরাং আমি চললাম নিজের রাস্তায়, তোমাকে আমার দিব্যি তুমি আবার বিয়ে কোরো l ভালো থেকো ভালোবাসা l নিজের ও মায়ের খেয়াল রেখো l মাকে আমার প্রণাম জানিও l

অনুপমা স্মৃতির জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরলো, তার শরীরে একটা ছোঁয়া পড়ায় l চমকে গিয়ে দেখলো, সূর্য তাকে ডাকছে ' মা ওই দেখো ট্রেন, ট্রেন l কি ট্রেন? আমি ট্রেন চড়বো l অনুপমা সূর্যকে নিয়ে ট্রেনে উঠলো l জানালার একটা সিটে বসে পড়লো l বাইরের মনোরম পরিবেশ দেখতে দেখতে আবার একটু অন্য মনস্ক হয়ে পড়লো সে l

বিমলের কাছ থেকে দূরে সরে আসার পর একটা অফিসে কাজ জোগাড় করে নিয়েছিল অনুপমা l পড়াশোনা ভালোই জানতো তাই অসুবিধা হয়নি l তারপর একদিন সূর্যকে এডপ্ট করে সে l প্রথমে বাবা না থাকায় ফর্মালিটিতে একটু অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছিলো l কিন্তু অফিসের বসকে বলায়, তার বস নিজে গিয়ে সব ঠিক করিয়ে দিয়েছিলো l তার জন্য অনুপমা সারাজীবন কৃতজ্ঞ l

ট্রেনে সূর্যর সাথে কথা বলে অনেকটা পথ অতিক্রম হয়ে গিয়েছিলো l কিন্তু ট্রেনটা যখন হাওয়া স্টেশনে ঢুকছে, তখন এক অজানা ভয় তাকে গ্রাস করলো l মনে মনেই ভাবলো 'কেমন আছে বিমল? হয়তো এখন বিয়ে করেছে? ছেলে হয়েছে না মেয়ে কে জানে? কিভাবে তার সামনে গিয়ে দাঁড়াবে সে? '

ট্রেন থেকে নামলো দুজনে l একটা ট্যাক্সি নিয়ে চেনা সেই পাড়ায় প্রবেশ করলো তারা l তাড়াতাড়ি দেখা করে আবার সন্ধ্যার ট্রেন ধরতে হবে l রিটার্ন টিকিট আগে থেকেই কেটে রেখেছে l

দরজার সামনে দাঁড়িয়ে, তার সাহস হচ্ছে না ডোর-বেলটা বাজাতে, তবু সে জোর নিয়ে আস্তে করে বেল বাজালো l আর অপেক্ষা করতে লাগলো অচেনা কোনো মেয়ের দরজা খোলার l কিন্তু দরজা খুললো একটা চেনা মুখ নিরুপমাদেবীর l

অনুপমাকে দেখে নিরুপমাদেবীর পায়ের নিচ কিছু একটা সরে গেলো l যেন ভুত দেখেছে এমনভাবে চিৎকার করতে লাগলো l অনুপমা নিচু হয়ে প্রণাম করলো, আর সূর্যকেও বললো প্রণাম করতে l নিরুপমাদেবী এখনো পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে l তারপর তার হুস ফিরলো যখন সূর্য তার পায়ে হাত দিলো l নিরুপমাদেবী তাড়াতাড়ি  দুজনকে ঘরে নিয়ে এলো l অনুপমা কি বলবে বুঝতে পারছেনা l নিরুপমাদেবী এখনো তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে l অনুপমাই নীরবতা ভাঙলো ' কেমন আছেন মা? 'কিন্তু কোনো উত্তর পাওয়া গেলোনা l মা! মা, 'হ্যাঁ হ্যাঁ বলো, তুমি এতদিন কোথায় ছিলে? ' রাগী রাগী শুরে বললো নিরুপমাদেবী l

ঝাড়খন্ড এ ছিলাম l ওখানে আমার বান্ধবীর বাড়ি ছিল l'

'তুমি এমনভাবে কাউকে কিছু না বলে চলে গেলে কেন, কি এমন অন্যায় করেছিলাম আমরা? '

কি আর বলবে অনুপমা? অপরাধী দৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে আছে l কথা ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করলো 'বিমল কোথায়, বিয়ে করেছে নিশ্চই ? '

কিন্তু উত্তরটা এলো দরজার পাশ থেকে -'হ্যাঁ চারটে বিয়ে করেছিl'রাগী গলায় বললো বিমল l অনুপমা নিচের দিক থেকে মুখ তুলতে পারছেনা, তার চোখের কোনে জল এক ফোটা জল l বিমলের সাথে চোখ মেলানোর সাহস হচ্ছেনা l সে যেন পাথর হয়ে গেছে l মন চাইছে দৌড়ে পালিয়ে যায় l আবার ভাবলো কোথায় আর পালাবে, এতদিন পালিয়ে পালিয়েই তো বেড়াচ্ছিল l বিমল আবার বললো ' তুমি কি করতে এসেছো এখানে, আর কি করে ভাবলে আমি আবার বিয়ে করবো? 'কথাগুলো বলার সময় তার গলা কেঁপে উঠলো l এবার অনুপমা মুখ তুলে তাকালো l কি অবস্থা হয়েছে বিমলের, চোখে চশমা, মুখে দাড়ি-গোফের জঙ্গল করে ফেলেছে l মনে হচ্ছে সেদিন থেকে সেলুনের মুখ দেখেনি l অনুপমা বুঝতে পারছে বেশিক্ষন এখানে থাকা ঠিক হবেনা l তাই তাড়াতাড়ি সূর্যকে নিয়ে, মাকে প্রণাম করে, বেরিয়ে যেতে যাবে , ঠিক তখন বিমল তার হাত ধরলো l তারপর বললো 'সব সমস্যার সমাধান কি সমস্যা থেকে পালিয়ে যাওয়া?' তুমি কি করে পারলে এমন করতে? করার আগে একটুও মায়া হয়নি, এখন আবার পালিয়ে যাচ্ছ, এবার পা বার করে দেখো l পা ভেঙে দেবো l' অনুপমা লোক লজ্জার কথা না ভেবে, বিমলকে জড়িয়ে ধরল l কেউ কাউকে ছাড়তে চাইনা l এতক্ষণে সূর্যর সবাই লক্ষ পড়েছে l সে হঠাৎ ঘটে যাওয়া দৃশ্য গুলো অবাক চোখে দেখছে l

'বৌমা এটা কে? '

'আমার ছেলে ' অনুপমা উত্তর দিলো l

বিমল বলে উঠলো 'আমার না বলো আমাদের' l

বিমল সূর্যকে কোলে তুলে নেলো,' তা বাবা আমি কে বলোতো তোমার?

'বাবা l'

এবার নিরুপমাদেবী বিমলের কাছ থেকে একভাবে কেড়ে নিয়ে সেই একই প্রশ্ন করলো ' বলতো দাদুভাই আমি কে,?

'ঠাম্মা '

'বাহ! তুমি তো দেখছি সব জানো l কি করে জানলে l

সূর্য মা মা করতে লাগলো l

অনুপমা উত্তর দিলো 'আমি ওকে আপনাদের সবার ছবি দেখিয়েছি আর কে কোনটা শিখিয়েছি l'

বিমল আর অনুপমা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে লাগলো -

তখন অনুপমা বললো ' সূর্যকে আমি এডপ্ট করেছি l'

বিমল অনুপমাকে চুপ করিয়ে দিয়ে বললো 'আমি কি তোমার কাছে জানতে চেয়েছি? জন্ম না দিলেও তুমি যদি ওর মা হও আমি ওর বাবা l আর কিছু প্রয়োজন নেই '

'আর মা কি বলবেন? মা তো পছন্দ করেনা এডপ্ট নেওয়া ব্যাপারটা'

'এখন মা আর আগের মতো নেই, নাহলে দেখো ওদিকে কেমন খেলছে দুজনে '

'সে তো বুঝলাম মিস্টার কিন্তু দেখছি আমাকে আর ভালোবাসেন না '

'এমন বলছো কেন? '

'আমি দিব্যি দেওয়ার পরও তুমি সেই বিয়ে করলে না যদি আমি মরে যেতাম তখন?'

' তোমারও তো কথা ছিল, যাই হয়ে যাক আমাকে নাকি ছেড়ে যাবেনা l তাহলে তুমি কোথায় কথা রাখলে, আবার আমাকে বলছে? ' তুমি জানো কত জায়গায় খুঁজেছি তোমাকে? কথা গুলো বলতে বলতে বিমল কেঁদে ফেলবো l

অনুপমা আলতো করে বিমলের হাতটা চেপে ধরে উত্তর দিলো 'ভুল হয়ে গেছে, আর অমন হবেনা l

'হতে দেবোও না l একটা শিখল কিনে রেখেছি, ওটা দিয়ে বেঁধে রাখবো l

'পাগল একটা l'


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance