তোমায় আজও সবথেকে বেশি ভালোবাসি
তোমায় আজও সবথেকে বেশি ভালোবাসি
আজ প্রায় ৭বছর পর দেশে এসেছি। এয়ারপোর্ট হতে বের হয়ে একটা টেক্সি ডাকলাম, ঠিক যখন টেক্সিতে উঠতে যাব পিছন থেকে এক ভদ্রলোক আমার নাম ধরে ডাক দিল। আমি ভাবলাম এই নামের হয়তো অন্য কাউকে ডাকছে তবুও একবার পিছন ফিরে তাকালাম। পিছন ফিরে তাকাতেই লক্ষ্য করলাম দারি ভর্তি মুখ এবং পরনে কোর্টপ্যান্ট পরা এক ভদ্রলোক দৌড়ে আমার দিকেই আসছে।প্রথমে দূর থেকে ভদ্রলোক কে চিনতে পারিনি, তবে কাছে আসতেই বুঝতে পারলাম ইনি আর কেউ না আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু দের মধ্যেই একজন। আমি বললাম কিরে কেমন আছিস। নাজিম আমার দিকে তাকিয় আছে। নাজিম এর দিকে চেয়ে আমি কিছু কখন মনে মনে ভাবলাম কিছু ভুল বললাম না তো। ভাবতে না ভাবতেই নাজিম বললো এতদিন পর বল কেমন আছিস তাই না।আমি বললাম আমাকে দেখলি কিভাবে?নাজিম বলল গেট দিয়ে বের হওয়র সময় লক্ষ্য করলাম তোর মতো দেখতে।আমি বললাম তবুও ৭বছর পর চিনতে পারছিস।নাজিম এখন অনেকটা চেতে গেছে।
(রাগ করাটা সাভাবিক ৭ বছর ধরে কোনো যোগাযোগ ছিল না কোনো বন্ধু এর সাথে, যদিও তখন কার সময় থেকেই যোগাযোগ করাটা তেমন কোনো কঠিন বেপার ছিলনা।আমি চাই নাই কারোও সাথে যোগযোগ রাখতে কারণ একটাই ছিল সেটা হলো ঠিক ৭বছর আগে আমার জীবনে অরিন নামে একজন ছিলো যাকে আমি অনেক ভালোবাসতাম এখনও বাসি। সে আমরা ক্লাসমেট হওয়ায় আমার সব বন্ধুরা তারও বন্ধু। আমাদের সম্পর্কটা ঠিক স্কুল জীবন থেকেই ছিল। তারপর কলেজ এ উঠলাম অরিন আর আমি আলাদা কলেজ এ চান্স পেলাম তবে দুই জনের কলেজ একই জায়গায় ছিল তবে কয়েক কিলোমিটার এর একটা দূরত্ব ছিল।
তবে আমরা ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতাম। তবে হঠাৎ করে অরিন আমাকে বলে তাকে ভুলে যেতে। তখন আমার মনে হয়েছিল আমার মনের সব শক্তি বের হয়ে যাচ্ছে। তাকে অনেক চেষ্টা করছি নিজের করে রাখতে। আমি জানতাম অরিন আমাকে ভালেবাসে কারণ সব সময় আমাকে রাগ দেখাইতো কেনো এটা করি না সেটা করি না। আমি চাইলেও তাকে ভুলে থাকতে পারি না সব সময় আমার জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসতাম এখনও বাসি।যখন সে আমাকে বলে তাকে ভুলে যেতে ঠিক তার কিছু দিন পর তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আমি অনেক ভাবে চেষ্টা করতাম তাকে বুঝাইতে তবে সে শুধু আমাকে রাগ দেখাইত।এভাবে চলার কিছু দিন পর হঠাৎ করে আমাকে পড়ার জন্য দেশের বাইরে যেতে হয়।তবে আমি তার সাথে অনেক ভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি তবে পারিনি ।একসময় এমন হয়ে গেল আমার অনেক মনে পড়তো তার কথা। থাকতে পারতাম না খুব কষ্ট হতো অন্য বন্ধুদের সাথে কথা বলতে চাইলে তার কথা আগে মনে পড়তো তার জন্য কষ্টটা অনেক বেশি হতো। তাই কোনো বন্ধুর সাথে যোগাযোগ রাখি নি কেউ যোগাযোগ করতে যেন না পারে সে ব্যবস্থা করেডছিলাম। তবে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা অব্যহত ছিল।কিন্তু করতে পারি নি।)
নাজিম বললো এখন কোনো কথা না বলে আমার সাথে চল । আমি কি বলব বুঝতে পারছি না কারণ না বললেও নাজিম আমাকে ছাড়বে না এটা বুঝতে পারছি। বাধ্য হয়ে টেক্সিটা ছেড়ে দিতে হলো।নাজিম এখন ভালো পদে আছে দেখলেই বোঝা যায়। অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু সভাব টা আগের মতোই আছে।এবার তার গাড়িতে উঠলাম। কথাটা আমিই শুরু করলাম কেমন আছিস রে, বাসায় সবাই কেমন। নাজিম বলল ভালো।আমি আবার কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বলাম বিয়ে তো করছিস ছেলে মেয়ে কয় জন। নাজিম বলল একছেলে। আমি বললাম ইসরে তোর বিয়েতে থাকতে পারলাম না। নাজিম বলে উঠলো নিজের ঠিক নাই কই থাকিস কেউ জানে না আর এখন আয় বিয়ে এর খোজ করতে। আমাকে জিজ্ঞেস করল কোথায় ছিল রে এতোদিন।আমি প্রশ্ন টা হাসির সাথে উড়িয়ে দিয়ে বললাম বাকিদের কি খবর সবাই কেমন আসে সবাই তো সেটেল তাই না? হুম ভালো আছে সবাই ভালো ভালো পদে আছে। আমি বললাম যাক ভালো সবাই ভালো আছিস শুনে ভালো লাগল।আমি আবার বললাম অরিন কেমন আছে জানিস রে।নাজিম অনেকটা আবাক হয়ে বিস্মিতার সহিত বলল ভালো আছে আবার বলল এখনও মনে রাখছিস অরিন কে।আমি কিছু বললাম না একদিকে শুনে ভালো লাগল আবার আগের স্মৃতিগুলো মনে পড়ায় কষ্ট হচ্ছিল। আমি বললাম কথায় থাকে জানিস বলল হুম ঢাকাতেই থাকে। বিয়ে করছে। নাজিম বলল হুম। বললাম কতজন ছেলে মেয়ে বলল একমেয়ে । নাম কি জানিস? বলল,মেয়ের নাম রাখছে পরী। আমি বললাম হুম ভালো অনেক সুখী আছে তাহলে।আাবর মনে মনে একটু অবাক হলাম পাগলিটা আমার দেওয়া নামটাই রাখছে। তখন নাজিম বলল তোর কি খবর বলতো কাউকে পছন্দ করলি আমি নাজিম কে বললাম তুই জানিস আমার কি কথা ছিল আমি জীবনে একজনকেই ভালেবাসছি আর একজন কেই সারাজীবন বাসবো।নাজিম আর কিছু বলল না কারণ ও আমাকে ভালো করে জানে আমি যেটা বলছি সেটাই করব হাজার বলেও লাভ নাই।কথা বলতে বলতে নাজিম এর বাসায় চলে আসলাম। কিন্তু বাসায় আর ঢোকা হলো না, আমার বাসা থেকে ফোন করছে যেন তারাতারি বাসায় আসি।আবার এয়ারপোর্ট এ আসলাম। নাজিম কে বিদায় দিয়ে বাসার উদেশ্যে রওনা দিলাম। বাসায় গিয়ে বাবা-মা আর ভাই এর সাথে কয়েকদিন থাকলাম, বেশি দিন থাকতে পারলাম না কারণ এখানে থাকলে কষ্টটা বারবে এখানে অনেক পুরোন স্মৃতি আছে অরিন আর আমার।আবার ঢাকা আসলাম সব বন্ধু দের সাথে দেখা করলাম আর আমার বান্ধবী আছিল যে বোন এর মতো আমার খেয়াল রাখতো। প্রায় সবার সাথেই দেখা হলো রিদওয়ান, ইমরান, বিনতে (পেতনি) আরও কিছু বন্ধু বান্ধবী ছিল। শুধু দেখা হলো না আামর সেই ভালোবাসাকে। তবে এতটুকু জেনে আমি খুশি যে সে সুখে আছে। মনে মনে ঠিক করলাম এখন সময় এসেছে না ফেরার দেশে যাবার।
।

