হলি হ্যয়
হলি হ্যয়
এখনো ও মনে পরে সেই ছোট্ট বেলায় দোলে র কথা।যখন সবাই দোলর দিন রঙিন হয়ে যেত,আর চারিদিক আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে যেত। আমি ওই রঙ মাখা মুখ গুলো কে দরজার আড়াল থেকে দেখেই ভয় পেয়ে ঘরের ভিতরে পালিয়ে যেতাম।
মা আমাকে বকত। আমাকে ভিতু বলত। একটু বড় ও হলাম। সেই দিন ও দোল ছিল। আমার তখন বয়স কতোই বা হবে এই বারো । সেদিন ভোর বেলায় উঠে পরি। মুখের ভিতর মাজন নিয়ে ঘষতে ঘষতে বাড়ির সদর দরজার ফাটক খুলে বাড়ির সামনের রকে বসলাম।
দেখি মেজকা শরীর চরচা করতে বেরল। দুধ ওয়ালা দুধ নিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছিল। ও পাড়ার সন্তূ সবে রং গুলতে শুরু করে ছিল বালতিতে,আর আমাকে দেখে মুচকি হাসি হাসলো। আমার পাসের বাড়িতে এক দিদি থাকত। প্রতি বছর দোলের আগে বাড়ি আসত ছুটি কাটাবার জন্য, সেই বছর আমার এক অনুভূতি প্রকাশ পেল,যা আগে কোন দিন ই হয়ে নি। আমি মুখ ধুয়ে ঘরে ফিরলাম।মা তখন বাড়ি ধোয়া মোচা করছিল।আমি গিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখছিলাম।বাবা দেখি বাড়ির বাইরে র দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে গেল।আমি মাকে জড়িয়ে ধরে বললাম, বাবাতো বাইরে গেল, যদি কেউ ধরে রঙ মাখিয়ে দেয় ধরে, কি করবে তখন?
মা হেসে
বলল"দুর বোকা ছেলে, রঙ মাখাবে তো কি হবে তাতে। রঙ ত জল দিয়ে ধুয়ে নেবে। আমায় এখন ছাড়,আমার অনেক কাজ পড়ে আছে।" আমি ঘড়ে গিয়ে খাটে বসলাম। দেখি পাশের বাড়ির দিদি আমাদের বাড়িতে এল আমাকে নিয়ে যাওয়া র জন্য, ওদের বাড়িতে আজ সত্য নারায়ণের পুজো। মা আমাকে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিল।আমি গেলাম তার সঙ্গে, দিদি আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বসালো। আমাকে বড় থালায় করে খাবার এনে খেতে দিল। তার পর বললো আমাকে" তোর চোখ দুটো বন্ধ করে বস। আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন, সে বলল আমাকে, দেখনা তুই মজা পাবি। আমি যথারীতি তাইই করলাম"।
দিদি আমাকে বললো যে এবার আমি চোখ দুটো খুলে দেখি, আমার সামনে সে একটা আয়না ধরে ছিল, প্রথমটা আমি ঘাবড়ে গিয়ে ছিলাম, তার পর একটু আনন্দ পাছ্ছিল ।সেই ভয় যেন কোথায় হারিয়ে গেল নিমেসে। আমি ছুটে গিয়ে মায়ের সামনে দাড়াতে, মাতো হেসে বাবাকে ডেকে বলে"কিগো একবার টি দেখে যাও তোমার ছেলে র কান্ডটা। ভূত সেজে এসেছে।" ছোটকা বেরিয়ে বলে" কিরে কিছু মাল মশলা দেব?" , আমি ও সেই বেড়লাম ,আর কে আমাকে ধরে। সে ই ফটকের ভিতর থেকে মুখ বার করে দেখা, আর তাক করে রঙ ছুড়ে লুকিয়ে পড়া। সেই স্মৃতি আজও মনে পড়ে।