গল্প ভক্তি ~
গল্প ভক্তি ~


কিছু দিন ধরেই আকাশকে লক্ষ্য করছি ,না বৃষ্টি হয় না উপচে পড়া রোদ্র। মেঘ শুধু ডাকে মনে হয় মেঘ জেনে গেছে আমার দিন বেরঙের কাটছে । কোনো রকম রেডি হয়ে ক্লাসে যাওয়া , ইচ্ছে হচ্ছিল ক্লাস টাস বাদ দিয়ে বাসায় গিয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমাতে পারলে ভালো হতো। আজকের লেকচার টা নেহায়তই গুরুত্তপূর্ণ বলে আর কেটে পড়ছি না । মানুষের চিন্তা ভাবনা যে কিভাবে বদলায় ; এক সময় মেঘ ডাকা আকাশের গর্জন শুনে গল্প ফেঁদে ফেলতে পারতাম ,সেই আমি নাঈম, এখন বাসায় গিয়ে কষে ঘুমানোর কথা ভাবছে । অবশ্য নাঈমকে দোষ দেওয়া যায় না । ও তো লিখতেই চায়, কিন্তু বছর খানেক পার হয়ে গেছে গল্পরা যেনো ছেড়ে ছন্ন ছাড়া হয়ে ঘুরছে , কোনো ভাবেই মাথায় কিছু খাটছে না । এই না লিখতে পারা গুলো আমার শত্রু আর এই শত্রুতার কারণ নাঈম এখনো বুঝে উঠতে পারছে না। আপনা থেকে না আসায় এক সময় ত্যাক্ত হয়ে জোর করেই গল্প বানাতে বসেছিলাম কিন্তু গল্প আর এলো কই আমার কাছে.. অলস ভঙ্গিতে বসে কোনো মতে ক্লাসটা শেষ হলো ,এর পরের ক্লাস টা করেই নির্ঘাত বাড়ি ফিরে যাবো । এখন এসব পীড়া দেয়,এক সময় এই ক্লাস রুম , কানে আসা ছাত্র ছাত্রীদের খুনসুটি ভরা কথা সব নিয়েই লিখে ফেলতে পারতো নাঈম। বড় হতে হতে লেখায় দখল বাড়তে লাগলো, বেশ কিছু লিটল ম্যাগাজিনে গল্প ছাপা হতে লাগলো । বন্ধুযুগলে লেখক নাঈমের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। নাঈমের মাথায় তখন প্লট , কাহিনী গিজগিজ করতো আর সাথে সাথেই গল্প বানিয়ে ফেলতে পারতো । কিন্তু হঠাৎ করেই মগজে কড়া নেড়ে যায়,কেনো যেনো আর গল্প আসছে না ।প্রথমে ব্যাপারটায় খুব একটা আমল দেয় নি কারণ নাঈম তো আর মেশিন না যে একের পর এক গল্প আসবে , ঠিক হয়ে যাবে নিশ্চই।কিন্তু ঠিক হয় নি এবং এই ঠিক না হওয়ার মেয়াদের দীর্ঘতা দেখে নাঈম সত্যিই বিচলিত।তবে কি গল্পরাঁ ছেড়ে চলে যাচ্ছে ? আজ কি একটা গল্প নিয়ে ভাবা যায় না ? অনেক দিন পর মাথায় আসলো এইটা । ধরি আমারই গল্প .. এই যে গল্প লিখতে না পারা , লিখার এই তৃষ্ণা , কিছু সৃষ্টি করার জন্য ব্যাকুলতা,এসব কি লেখা যাবে না ? একটা গল্পও কি আসবে না আর ? ক্লাসের এক কোণে বসে ভেবে যাই। এখনো স্থির বসা আমি । হ্যাঁ , হয়তো কিছু একটা আসছে মাথায় আমি আবার ফিরে পাচ্ছি সেই আমাকে ।