গারো পাহাড়ের নীচে
গারো পাহাড়ের নীচে


চৈত্র মাসে আসামের(ময়মনসিং ) এর উত্তরের আকাশে তাকালে ধোঁয়াটে মেঘে যেন কেউ আগুন লাগিয়েছে।আসলে ওটি মেঘ ছিলো না সেটা ছিলো গারো পাহাড়।এসময় সেখানকার গ্রামবাসীরা পাহাড়ের শুকনো ঝোপঝাড়ে আগুন লাগিয়ে দেয় ।সেই আগুনের তেজে বন জঙ্গলের পশু পাখি, জীব জন্ত্রু সব পালায় ,তখন সেই সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে পাহাড়ি মানুষেরা মনের সুখে শিকার করেন এবং শিকার শেষে সন্ধ্যা বেলায় গোল হয়ে গায় আর নাচ করে।এদিকে গোটা বন পুড়ে ছাই হলে জমিতে পড়ে থাকে পুরু ছাই।তার ওপর ধান - তামাক আরো কত কিছুর বীজ বোন সে পাহাড়ি বাসীরা। ওখানেই রেললাইন বেশ খানিকটা দূরে আব্রক্ষেব্র রাস্তার শেষে গারো পাহাড়ের নীচে সুসং নগর,আর যার এক পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে সোমেশ্বরী নদী। তীব্র তার স্রোত। তবে আরামে পারতে চাইলে ফেরির বন্দোবস্ত আছে। হিন্ধুস্থানি মাঝি দের মেজাজ ভালো থাকলে দেশে বিদেশের কত গল্প শোনা যায়।সেখানে হাজং - গারো - কোচ - বানাই - ডালু - মার্গান এমনই বিভিন্ন জাতের মানুষের বসবাস। গারো দের ভাষা আলাদা হলেও হাজং - ডালু দের ভাষা একই(বাংলা)।যদিও তাদের উচ্চারণ টা একটু আলাদা। পাহাড়ের জন্তজানোয়ারের উপদ্রব্যের ভয়ে গারোরা মাচায় ঘর বাঁধে।রান্না,খাওয়া,সোয়া এমনকি হাঁস - মুরগি পোষা সবই চলে মাচার ওপরে।তবে এ অঞ্চলে হাজংরাই সংখ্যাগুরু।তারা চাষের কাজে পটু।তাই গারোরা তারিফ করে তাদের নাম দিয়েছে হাজং অর্থাৎ চাষের পোকা।কিন্তু এত ফসল আর প্রাচুর্য সত্বেও তাদের জীবনে যেনো শান্তি নেই।ভজমিদারের শোষণ - অত্যাচারে ও হাতি বেগারের জ্বালায় সকলের প্রাণ অতিষ্ট । কতজন যে মারা গিয়েছে।এসবের বিরুদ্ধে একদিন প্রজারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।তবে সেই থেকে হাতির বেগার বন্ধ হয়ে যায়। আজো সেখানে বিদ্রোহের গল্প শোনা যায়।কিন্তু সেখানকার মানুষেরা বাঙালিদের বাঙাল বলে ডাকে।কারণ আমরা ওদের কোনোদিন আপন করে নিইনি বলেই ওরাও আমাদের পর বলেই ভাবে; অথচ আমরা সকলেই একই দেশের মানুষ……।
সমাপ্তি
শুভ রাত্রি… আবার দেখা হবে পরবর্তী গল্পে,ভালো থাকবেন🙏🙏