নগ্ন শরৎ শরৎকাল
নগ্ন শরৎ শরৎকাল


শরৎকাশে সাদামেঘের ভেলায় পুলক জাগে কাশফুল মানেই তো শরৎ এসেছে সম্মুখদ্বারে!
আহাঃ! এসেছে শরৎ মায়ের আগমনী নিয়ে। এমন সুদিনের সকালে মনোরম মনে পার্কে হাওয়া খেতে যাচ্ছিলাম নিজেকে উচ্চ শ্রেণীজাত করতে!
রাস্তার মোড়ের গলির একপাশে জটলা আর হাসির শব্দে দাঁড়ালাম
বাবুরা হাসতে হাসতে একে অপরের গায়ে গলে পড়ছেন আর রসিক চোখে দেখছেন যেন
পৃথিবীর সবচেয়ে আশ্চর্য তামাশা আমিও এগিয়ে গেলাম শান্ত পায়ে।
দেখলাম পাড়ার-ই এক মানসিক প্রতিবন্ধী পাঁচিলে ঠেস দিয়ে বসে,
আলুথালু কাপড়ে ঠিকঠাক্ লজ্জা নিবারণ করছে না পাশে একাধিক কনডমের ছেঁড়া প্যাকেট মুখটেপা হাসির উদ্দেক করছে সবার!
এই সমাজে মানসিক প্রতিবন্ধীরও মুক্তি নেই দেশে সুদিন এসেছে, নানা প্রেরণায় উন্নতি হচ্ছে!
সাথে খসে পড়ছে জোরগতিতে বোধ বিবেক।
এ বড়ো দুঃসময়, ফিরে এলাম বাড়ী নিজে আর উচ্চ শ্রেণীজাত হতে পারলাম না পড়ে রইলাম মিডিওকার শ্রেণীতেই।
তারপর এসব আঁতলামো ছেড়ে এককাপ চা খেলাম খবরের কাগজে নিয়মমাফিক বিজ্ঞচোখ বোলালাম যথারীতি কোন সমস্যাই স্পর্শ করলো না জীবনকে শুধুমাত্র তা চা'র কাপের ঝড়ের বিষয়বস্তু হয়েই রইলো, হয়েই রইলো আর হয়েই রইলো দিনের পর দিন।
দিনের নিয়মে দিন আসছে, যাচ্ছে আমিও দুপুরে আরামের ভাতঘুম আর রাতের টিপটপ স্লিম স্বপ্ন দেখছি বুদ্ধিজীবীরাও শতশত বুদ্ধির টিকি নাড়ছেন।
দুঃখ এই যে, মানুষ হতে পারলাম না জন্মেছিলাম বটে মনুষ্যাকৃতি নিয়ে তারপর কিভাবে যে তা আর থাকলাম না সেটাই এখন সবচেয়ে বড়ো রহস্য কাহিনী।
যা হোক, তবু তো এসেছে শরৎ মায়ের আগমনীতে শিশির পরৎ!
এমন বির্বণ সময়ের শোষিত কোলে কাশফুল মেঘমালা চিন্তাহীন দোলে?