একা, শুধু একা
একা, শুধু একা
আজ রবিবার ছুটির দিন,
বহুদিন বাদে আজ শুভ এসেছিল।
ও এসে বলেছিল--
"পূজা, আমাদের মধ্যে তুমিই তো ছিলে
সব থেকে সুখী!
হাসতে, খেলতে আর রং ছড়াতে প্রজাপতির মতো!
যেমন করে উন্মুক্ত নীল আকাশে উড়ে যায়
দিক বলাকার শাড়ি,
যেমন করে ধূসর মরুভূমির বুক চিরে
দুর্বার গতিতে ছুটে যায় অশান্ত বেদুইনের দল,
ঠিক তেমনি করে তুমিও তো ঘুরে বেড়াতে মুক্ত বিহঙ্গের মতো!
তাহলে আজ তোমার চোখে জল!"
আমি কিছুই বলিনি,
চুপ করে ছিলাম আর ভাবছিলাম, 'সুখ' কাকে বলে।
হঠাৎ মনে পড়ে গেল
শৈশবের সেই সব কবিতা লেখা দিন যাপনের কথা।
এইতো সেদিন সূর্যাস্তের সোনালী আলোয় বসে লিখেছিলাম কত স্বপ্ন মধুর কবিতা,
ঘর বাঁধার রঙিন স্বপ্নে বিভোর হয়ে এঁকেছিলাম কত ভালোবাসার আলপনা।
আর আজ!
আজ উত্তর যৌবনে এসে বারে বারে মনে হয়
তা কেবল কবিতা-ই থেকে গেল
তা কেবল কল্পনার আলপনা-ই রয়ে গেল
ঘর বাঁধা আর হল না।
ভালোবাসা আর হল না।
শুভ চলে গেছে
স্বার্থপরের মত বলে গেছে
"পূজা, তুমি ইতিহাস হবার চেষ্টা করো না"
না শুভ না, আমি ইতিহাস হতে চাইনি
আর সেই ইচ্ছা বা ক্ষমতা কোনটাই আমার নেই।
হ্যারিকেনের আলোয় পড়া মুখস্ত করা
নিম্নবিত্ত বাপের এক অতি সাধারণ মেয়ে আমি।
তাই ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখলেও
বামুন হয়ে কোনদিন আকাশের চাঁদ হতে যাইনি।
আমি শুধু ঘর বাঁধতে চেয়েছিলাম।
আমি শুধু ভালবাসতে চেয়েছিলাম।
আমি শুধু সুখী হতে চেয়েছিলাম।
শুভ চলে গেছে,
শুভ চলে গেছে।
আর আমার জন্য রেখে গেছে
এক বিশাল শূন্যতা।
সীমাহীন সেই শূন্যতার মাঝে
আজ আমি একা, শুধু একা

