দুরাশা তব ভালোবাসা
দুরাশা তব ভালোবাসা
বোধহয় ভুলাইতে হইবে ভালোবাসা,
এ যেন বেদনাকর চরম হতাশা।
মনে ছিল উদ্যম আবেগ মিশ্রিত আশা,
রানির ভালোবাসার সিংহাসনে বসিয়া,
রাজা হবে তথাকথিত বোকা হাঁদা চাষা।
যদিও চোখ রাঙাইয়া শাঁসাইলো ত্রিভুবন,
আর যারা ছিলো বন্ধু পাত্র-মিত্রগন,
চাঁদে হাত দিতে যাসরে বামন,
এ তোর বদ অভ্যেস, দুঃসাহসিক দুরাশা।
কিছু ভুল করিয়াছিল সেই চাষা,
উচ্ছ্বাসে হাঁকাইয়া দিলো ভালোবাসি,
পাত্র - মিত্র সকলে শুনিলো সভাসদে,
সমস্বরে হাসিয়া উঠিল রাজ্যের প্রতিটি নিবাসী।
বুঝিলো চাষি তার হইয়াছে প্রকান্ড ভুল,
জানা উচিৎ ছিলো রানির মনে,
জায়গা ছিলনা তার কোনো কূল।
এতক্ষুনে বুঝিলো সেই চাষা,
ভালোবাসার বিজ্ঞাপন তো দেওয়া হইলো,
কই জানা তো হলোই না রানীর মনের অবস্থাটা!
ভালোবাসি বলিবার পূর্বে উচিত ছিলো,
রানীর মনে তৈরী করে নেওয়া তার জায়গাটা।
প্রত্যাখাত হলো চাষা তবে রানীর দোষ নাই,
রানীর মনে চন্দ্র ছিল তার ভালোবাসার একমাত্র ঠাঁই।
চন্দ্র যদিও অস্ত গেছে, রানী তারে ভোলে নাই,
রানী তারে আজো ভালোবাসে, রানীর মনে সুখ নাই।
প্রত্যাখাত চাষা যদিও একফোঁটা দমিল না,
হলে রানীই হবে তার আপন, তাকে ছাড়া আর কেউ না।
রানীর ছিল হাজার গুন,
ছিলো তার মনেরই মতন,
গুণমুগ্ধ চাষা তাই প্রত্যাখান ভুলিয়া,
রানীর সাথে চলার দেখিলো স্বপন।
চাষার সেই স্বপ্ন শুনিল কিছু পাত্র-মিত্র গণ,
কেউ মুখ টিপিয়া হাসিল, কেহ বুঝিলো বিলক্ষন।
কেহবা হাসিল সমস্বরে, হাসির খোরাক বানাইলো,
কিছু আসিয়া ছড়াইলো জ্ঞান,
কেহবা শত্রুও বানাইলো।
মনের কথা জানিয়ে কেহ একান-ওকান করিলো,
বুঝিল না এক বিন্দু,
শুধুই দূরাশা! দূরাশা! চেঁচাইলো।
বিরক্ত রানী শুনাইয়া দিলো,
ওরে করিসনে এমনি আশা,
আমার মনে শুধু চন্দ্রই আছে,
তাকে আগলে পূর্ব স্মৃতির তারকাঁটা।
বুঝিলো চাষী সবারই ব্যাথা,
বুঝিলোনা কেউ তার আত্ম কথা,
একপেশে ভালোবাসার বেদনা হতে বাঁচিতে,
ভুলাইয়া রাখিয়াছিলো নিজেকে দিয়া বিন্দুমাত্র আশা।
অবগত ছিল চাষা সম্ভাব্যতার ক্ষীণতায়,
দিয়েছিলো মনে হাজারো যুক্তি,
করবে সে প্রতীক্ষা আজীবন,
দেবেনা এই ভালোবাসা হতে,
নিজেকে শীঘ্র মুক্তি।
এ জন্মে যদি না হয়, হোক না অন্য কোনো জন্মে,
তার সাথে তার রানীর, ভাগ্যের সংযুক্তি।
বর্তমানে ভালোবাসা,
হোক তা শুধুমাত্র বাস্তবতার বন্ধন,
হোক তা চাওয়া পাওয়ার হিসাব, প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির তালিকার বাহন।
প্রত্যাখাত চাষা ভালোবাসিয়াছে শুধু রানীকেই,
ঝরলে ঝরুক অশ্রু,
একাকীত্বের চাপা ক্রন্দন।
কেউ বুঝিল না চাষার আবেগতাড়িত যুক্তি,
গলা টিপিয়া সকলে কহিল,
দেরে চাষা এই বেয়াদপ ভালোবাসা হতে,
আজই আমাদের মুক্তি।
চাষাও যাহাদের আপন ভাবিলো,
বলিলো মনের কথা,
তাহারাও তা রটাইয়া বেড়াইলো,
ভুল বুঝিলো, ভুল বুঝাইলো,
দিলো তার মনে ব্যাথা।
চাষা বুঝিলো ভুল হইয়াছে,
উচিৎ হয়নি তাহার বলা,
জগতে কেহই বন্ধু নয়,
একক ভাবধারা ছাড়া।
যাদের উপর ভরসা করিয়া চাষা করিলো জাহির,
তাহারাই কহিল চুপ কর বেটা তোর ভালোবাসা বড়োই জাহিল।
চাষা শেষকালে বুঝিতে পারিল,
হয়তো হতোনা এরম কখনই,
ভুলটা সে তখনি করিয়াছিল,
বলিয়াছিল ভালোবাসি যখনই।
শেষে চাষা পণ করিলো অনেক হলো তামাশা,
দেবেন রানী সমেত সক্কলকে মুক্তি,
বিদায় বেলায় হত্যা করিবে,
তার বেয়াদপ ভালোবাসা।