আইসক্রিম নিয়ে যাও
আইসক্রিম নিয়ে যাও


কোথাও কি বোমা ফাটবে নাকি?
তুমি আমার চিত্ত উন্মোচনে যাবে নাকি?
সেখানে তুমি পাবে সুবিশাল পিরামিড।
নাহ্, কোনো ফারাও-এর কবর নেই।
নেই সোনাদানা, নেহাত গরিব আমি,
দিন এনেও দিন,ঠিকঠাক চলে না।
ফারাওদের মতো সোনাদানা সেখানে নেই,
অথচ পিরামিড আছে, আছে মুড়ি আর খই।
আছে এক বিস্তর স্মৃতির সমাধি,
কালের পরিক্রমায় কোনো এক সময়,
হঠাৎ মস্তিষ্ক থেকে সেই সব স্মৃতি ধসে পড়ে
হৃদপিণ্ডে জমা হয়।
সেই থেকে সেখানে স্মৃতির কবর,
যে কবর থেকে হাহাকার
আর বিদীর্ণ ধ্বনি ছাড়া কিচ্ছু নেই।
সোনাদানা বাদই দিলাম,
স্মৃতি সাজিয়ে রাখার জন্যে
কফিন পর্যন্ত নেই, মিলেনি।
আবার সেই হৃদপিণ্ডের পাশেই
কোনো এক খানে পাবে তুমি
লাশ কাটা ঘর,
যে ঘর ঘোর অন্ধকার।
কোথাও একটা,
ঠিক যেখানে লাশ কাটা হয়;
সেখানে সর্বদা এক হলুদ
ফিলামেন্টের বাতি জ্বলে রয়।
গুমোট ঘর, লাশের গন্ধ।
পাশে সরাসরি হিমাগার,
সেখানে আর কিছুই না;
এতদিন যাবৎ ব্যবচ্ছেদ করা
আমার নিজের শবের সমাহার।
এই ঘরেই রচিত হয়
আমার নিজেকে নিয়ে
নিত্য মৃত্যু খেলা,
এখানেই সারা হয়
আমার শবব্যবচ্ছেদের ঝামেলা।
>
ময়নাতদন্ত একই ঘরে,
প্রত্যেকবার রিপোর্টও একই:
জানা যায়নি মরলো কিভাবে।
পাশেই হিমাগারে রেখে দিই আবার
বাকিগুলোর মতোই তেমনি করে।
অনেকটা লাশের আইসক্রিম টাইপের
জমাট কিছু দেখতে চাইলে,
তোমার জন্যে আমার হৃদপিণ্ড
সদা উন্মুক্ত রইল।
কিংবা তুমি যদি
দেখতে চাও তোমাকে,
তুমি ঠিকই যেতে পারো
আমার হৃদপিণ্ডে।
সেখানে তুমি কিভাবে থাকো,
তুমি কিভাবে রও সেথা।
ভেবো না, তুমি থাকলে
সেখানে থাকে না
কোনো শবঘর,
থাকে না কোনো পিরামিডের
দুঃখ কথা।
তুমি যখন হৃদপিণ্ডে,
সেখানে সারাবছর বসন্ত,
এখানে-সেখানে কোকিল ডাকে,
গাছের নতুন পাতায় আলোড়িত।
তুমি যখন থাকো,
তুমি থাকো পুরোটাজুড়ে।
চলে গেলে তুমি,
পরে রবে পিরামিড; আর
আমার নিজের
তৈরি করা মৃত্যু খনি।
যেখানে মাটি খুঁড়লে
শুধু লাশের স্তূপ;
যে লাশ সর্বদা পচা,
রিগার মর্টিস যার তত্ত্বকথা।
সেখানে মরাই নতুন জীবন;
আমার মরার প্রয়োজনে,প্রয়োজন।
সেই মর্গের হিমাগারে
আমার শবের আইসক্রিম
সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হয়।
তুমি তো থাকলে না,
আইসক্রিম নিয়ে যাও নাহয়?