উত্তরাধিকার
উত্তরাধিকার
একটি খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর প্রথমবার নিজের কেবিনে ঢুকতেই একটা গুমোট বাতাস এসে জাপটে ধরলো কিংশুককে।
জানালাটা খুলেও বিশেষ সুরাহা হলোনা। অস্বস্তির মধ্যেই পূর্বতনের প্রাক্তন জিনিসগুলো নাড়াঘাঁটা করতে গিয়ে বেরিয়ে পড়লো একটা ডায়েরি। স্বাভাবিক কৌতূহলেই লাল ভেলভেটের মোড়কটা ওল্টাতেই চোখের সামনে ভেসে উঠলো মুক্তোর অক্ষরে লেখা ছন্দের সমাহার । নেশার মত একটার পর একটা লেখা পড়ে যেতে থাকলো কিংশুক, তার ঠোঁটের কোণে ক্রমাগত খেলা করতে থাকলো প্রশংসার হাসি। পরম যত্নে লেখাগুলোয় হাত বোলাতে বোলাতে তাঁর না দেখা পূর্বতন অধ্যাপককে মনে মনে প্রণাম জানালো কিংশুক। আর ঠিক তখনই গুমোট ভাবটাও যেন হঠাৎ করে উধাও হলো,বদলে মাখিয়ে দিয়ে গেল একঝাঁক শীতলতা।
প্রায় মাস ছয়েক আগে নিজের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রিয় অধ্যাপক কবি সুনির্মল পাল। শেষ লেখা কবিতার ডায়েরিটা কেবিনের ড্রয়ারেই রয়ে গিয়েছিল, নিয়ে আসা আর হয়নি। কবির কাছে তার কবিতা সন্তানসম!আর সেই সন্তানেরই ভবিষ্যৎ চিন্তায় এতদিন এখানে আটকে ছিলেন সুনির্মল বাবু। আজ অবশেষে যোগ্য উত্তরাধিকারীর হাতে সেটা উঠেছে নিশ্চিত হতেই মিলল মুক্তি!
(সমাপ্ত)