🍁রং নাম্বার🍁

বিনোদের মোবাইল ফোনে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসলো। বিনোদ ফোনটা ধরে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে চমৎকার একটি মেয়ের কণ্ঠ শোনা গেল। বিনোদকে বলল এই যে মিস্টার আপনি আমাকে মিস কল দিলেন কেন? 

আচমকা কথাটা শুনে নিচু কণ্ঠে বলল সে কি আমি আপনাকে কখন মিস কল দিলাম? 

মেয়েটি তাকে মেজাজ দেখিয়ে বলল এই যে এই মাত্রই ত মিস কল দিলেন । 

বিনোদ বলার আর ভাষা খুজে পেল না। তাকে বোঝাতে চেষ্টা করল আমি কোন মিসকল দিইনি । কে শুনে কারকথা তাকে ঝারি ঝুরি মেরে ফোন রেখে দিল।

তার প্রায় ৩ দিন পরে আবার ফোন , সেই মেয়েটি ফোন করে বলল ,আমি দুঃখিত সেদিন ভুল নাম্বার কল করেছিলাম একচুয়ালি আপনি নন !

তখন তাকে বিনোদ বলল ভাই এখন দুঃখিত বলে কি হবে?যাই হোক আপনি কি করেন কোথায় থাকেন?

মেয়েটি বলল তা জেনে দরকার নেই ,বলেই লাইন কেটে দিল।

বিনোদ বলল যাহ বাবা এ কোণ পাগল !!

এর ৭ দিন পরে আবার ফোন !!এবার আর আগের মত নয় , বিনোদকে বলল আমার নাম পাপড়ি ,আমি মেডিকেল কলেজে পড়ছি ! ফাইনাল ইয়ার , আপনি?

বিনোদও তার সাথে কথা না বাড়িয়ে বলে দিল আমার নাম বিনোদ একটি বেসরকারি ফার্মে চাকুরী করছি।

সব কিছু যানা শোনা হোল অল্প সময়ের মধ্যাই।এভাবে কথা চলতে চলতে একটা ফ্রী সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেল ।

একদিন পাপড়ি নিজে থেকেই বিনোদকে জিজ্ঞেস করল তুমি কখনো কোন মেয়ের সাথে কিছু করেছ?

সে তো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল ।বলল এটা কেমন প্রশ্ন?

পাপড়ি বলল আমারা ফ্রেন্ড ফ্রী সব কিছু বলতে পারি ,বলনা করেছ কি না !

বিনোদ বলল না!

তখন পাপড়ি বিনোদকে তিরস্কার করে বলল উমমম করেনি আবার!

বিনোদ বলল তুমি এসব জিজ্ঞেস করছ কেন?

বলল আমার জানতে ইচ্ছে করে ,শুনেছি মানুষ এসব করে নাকি অনেক মজা পায়।

বিনোদ হেসে দিয়ে বলল তো তোমার সে মজা পেতে ইচ্ছে করছে নাকি?

একটি লাজুক হাসি দিয়ে বলল পেতে চাইলেই কি পাওয়া যাবে?

ঠিক তখন বিনোদ বললো চেয়ে দেখতে পারো – পেলেও পেতে পারো! 

পাপড়ি বিনোদকে সোজাসুজি প্রশ্ন করল সে মানুষ তুমি হতে চাও নাকি?

বিনোদ বলল কেন? হলে দোষ আছে নাকি? আমারও আজ কাল পেতে ইচ্ছে করে, বুঝতেই তো পারো এখনও বিয়ে করিনি ।

পাপড়ি – তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে

বিনোদ – চলে আসব?

পাপড়ি – আসতে হবে কেন? তোমার ছবি এমএমএস করে দাও।

বিনোদ – না আগে তুমি দাও 

পাপড়ি – ওকে ! পাঠাচ্ছি ।

বিনোদের যেন আর তর সইছেনা , কখন আসবে এমএমএস ।এর পরে ম্যাসেজ আসলো , ছবি টা দেখে সে অবাক হয়ে গেল ! ভেবেছিল এমন মেয়ে দেখতে হয়ত তেমন সুন্দর হবেনা । কিন্তু যা দেখল … উচ্চতা আনুমানিক ৫ ফিট হবে , কোমর টা বেশ স্লিম ! কি মেয়েরে বাবা ! ! আর রুপ আমি সত্যি লিখে বুঝাতে পারবনা । 

বিনোদ তখন জামা খুলে একটা ছবি তুলে পাঠিয়ে দিল ,

পাপড়ি – এটা কে তুমি?

বিনোদ – হ্যাঁ পাপড়ি 

পাপড়ি – খালি গায়ে যখন পাঠিয়েছ আর একটু খালি হলে খারাপ হতোনা মুচকি হেসে বলল 

বিনোদের আর বুঝতে বাকি রইলনা সে কি চাইছে ! বলল সেটা দেব আগে বল আমাকে ভাললেগেছে ?

পাপড়ি – হুমমম চলবে । আমাকে কেমন দেখলে ?

বিনোদ বলল সেটা সুজগ হলে সরাসরি বলব।

পাপড়ি – আচ্ছা , এখন আর একটু খালি হয়ে একটি ছবি পাঠাও।

বিনোদও পাঠিয়ে দিলো। আর বললো তাহলে আমরা কবে দেখা করছি?

পাপড়ি - কালই চলে এসো না। আমার আর তর সইছে না তোমাকে দেখার পর থেকে।

পরেরদিন বিনোদ রওনা হয়ে গেল পাপড়ির বাড়ির উদেশ্যে। দরজায় গিয়ে বেল বাজাতেই বেরিয়ে এসে দরজা খুললো পাপড়ি। বিনোদ তো অবাক তার রূপ দেখে।

পাপড়ি - ভিতরে এসো বিনোদ।

বিনোদ ঘরের ভিতরে ঢুকেই পাপড়িকে জড়িয়ে ধরতে যাবে এমন সময় তার মুখে কেউ একমগ জল ঢেলে দিলো। 

চোখ চেয়ে দেখলো তার বাবা সামনে দাঁড়িয়ে আছে মগ হাতে। 

ভারী গলায় বললেন কখন ঘুম থেকে ওঠা হবে, বেলা 12 টা তো বাজতে যাচ্ছে।