STORYMIRROR

Rimita(আরনি) Chakraborty

Drama Romance Thriller

5.0  

Rimita(আরনি) Chakraborty

Drama Romance Thriller

পর্দার আড়ালে পর্ব 3

পর্দার আড়ালে পর্ব 3

6 mins
463

(হওয়ার বেগে স্কুটি চালাতে চালাতে নার্সিংহোম যাওয়ার পথে)


জিনি: এই দিদিয়া কটা বাজলো বলতো? অনেক দেরি হয়ে গেলো, উফফ প্রথম দিন কে এরকম দেরি করে। জিনি তুই কোনো দিন শুধরাবি না (নিজেকে নিজে বলল কথাটা)


শ্রী: (স্কুটির পিছনে বসে জিনি কে বলছে) এই জিনি আসতে চালা এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে, তুই যেন প্লেন উড়াচ্ছিস, তোর সব সময় এরকম দেরি করে উঠবি আর রাস্তায় এরকম করবি একটা বিপদ হয়ে গেলে, এই জন্যে তোকে তাড়াতাড়ি উঠতে বলি।


জিনি: উফফ! দিদিয়া চুপ করে বস আর বক বক টা কম কর, নাহলে কিন্তু নামিয়ে দেবো তারপর হেটে হেটে যাবি। এত জোরে চালাবি না (দিদিয়া কে নকল করে), এত জোরে না চালালে এই জন্মে পৌঁছাতে পারবি না।

শ্রী: তুই কি বললি...


জিনি: (শ্রী কে পুরো কথা বলতে না দিয়ে, একটু রেগে) দিদিয়া....


  #############*******#############

শান: (রাস্তায় ড্রাইভ করতে করতে ভাবছে) মা যে কেন সব সময় এক কথা বলে,হাজার বারণ করার পরেও। কি করে আমি সেই দিন টা ভুলি, কি করে। আমার নিজের হাতে আমি, নাআআআ.... (চিৎকার করে গাড়ির ব্রেক জোরে কষে দিলো চোখ টা ভিজে উঠলো)

শান: নো শান ফোকাস ফোকাস, তুই আজ 2 বছর পর নার্সিংহোমের দায়িত্ব নিয়েছিস, বাপি একটু রিলাক্স হয়েছে আর না... (শানের ফোন টা বাজলে নিজের জগৎ থেকে বেরিয়ে এলো) হ্যাঁ বল আয়ন?

অয়ন: তুই কথায় শান? কটা বাজে বলতো তোর জন্যে কখন থেকে অপেক্ষা করছি।

শান: হুম একটু রাস্তায় আটকে গেছিলাম 2 মিনিট দে আমি চলে আসছি, কাছেই আছি।

অয়ন: রাস্তায় আটকে গেছিলি নাকি ভাবনার জগতে সে আমার জানতে বাকি নেই, ওকে জলদি আয়ে।


** জিনিরা এর মধ্য নার্সিংহোম পৌঁছে পার্কিং এ স্কুটি পার্ক করতে গিয়ে একটা কালো রঙের গাড়ি তে স্কুটিটা লাগিয়ে দিলো **


জিনি:(চোখ বড়ো বড়ো করে কপালে হাত দিয়ে) হে ভগবান এটা কি করলাম, কার গাড়িতে লাগলাম। এতো স্ক্রাচ পরে গেছে, আজ আমি শেষ। এই জন্যে বলি জিনি হাত পা টা কম চালা, একটা কথা শুনিস না(নিজেকে নিজে বলতে থাকে)


শ্রী: দিলি তো গাড়িতে মেরে কার গাড়ি কে জানে, এইবার কি করবি? একটু ধীরে চলতে পারিস না।


জিনি: দিদিয়া তুই এখন চুপ করে চল এখান থেকে, আমরা চলে গেলে কে জানবে কে কি করেছে। কোনো প্রমান আছে নাকি যে আমরাই গাড়ি তে স্ক্রাচ ফেলেছি

তাড়াতাড়ি চল।( শ্রী এর হাত ধরে নার্সিংহোমের ভিতরে ঢোকার জন্য এক পা বাড়িয়েছে)

আগুন্তুক: (জিনিদের পিছন দিক থেকে ডেকে) এই যে, দাঁড়াও।


জিনি: (মনে মনে ডাক sune) ব্যাস হয়ে গেলো, নির্ঘাত গাড়ির মালিক। (কিন্তু মুখে বললো পিছন ঘুরে) হ্যাঁ কি বলুন? আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে ভিতরে যাবো কি দরকার একটু তাড়াতাড়ি বলুন।


আগুন্তুক: এটা কি হলো? (গাড়ির দিকে দেখিয়ে)

জিনি: কোনটা কি? কই কথাও কিছু হয়েছে বলে আমি তো দেখতে পাচ্ছি না।


আগুন্তুক: ও কিচ্ছু হয়নি না?(উল্টো দিকে জিনি মাথা নাড়লো) এই যে গাড়ির মধ্য যে স্ক্রাচ টা ফেলল কে তবে।


জিনি: আমি কি...


শ্রী: (জিনিকে বলতে না দিয়ে) এক্সট্রিমলি সরি আসলে আমরা তাড়াহুড়ো করে ঢুকতে গিয়ে এরকম হয়ে গেছে, জিনি ইচ্ছে করে কিছু করে নি। আজ ওর ফাস্ট জয়েনিং তাই টেনশন আছে খানিকটা তাছাড়া আমাদের একটু লেটও হয়ে গেছে তারজন্যই...(একদমই বলে গেলো শ্রী)


জিনি: (কপালে হাত দিয়ে,দাঁতে দাঁত চিপে আস্তে আস্তে দিদিয়া কেএ) কি করলি দিদিয়া বলে দিলি কেন, তোকে নিয়ে না আর পারি না হাঁদারাম একটা বিরক্তি কর।


আগুন্তুক: (জিনির দিকে একবার দেখে নিয়ে, শ্রী কে) আচ্ছা তোমরা তাহলে আজ প্রথম এখানে। গুড ভেরি গুড, হাই আমি ডঃ অয়ন সান্যাল হার্ট সার্জেন।


শ্রী: হ্যালো অয়ন স্যার, না আমি প্রথম না অনেকদিন আমার এখানে জয়েনিং হয়েছে আগে আমি একটা অন্য হসপিটালে জব করতাম.. এখানে এতদিন একটা ট্রেনিং করছিলাম...ও আমি ডঃ শ্রেষ্ঠা চৌধুরী গায়েনওলোজিস্ট। আর ও আমার বোন জিনিয়া।


অয়ন: বাহঃ বেশ ভালো লাগলো, তাহলে জিনিয়ার নিশ্চই নিউ জয়েনিং এখানে।


আগুন্তুক: (পিছন থেকে) সেটা পরে জানলেও চলবে অয়ন। তোর গাড়ির এরকম যে অবস্থা করলো তুই তার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিস।


অয়ন: (পিছন দিকে তাকিয়ে শানকে দেখে) আহা ছাড় না শান, ওরা সরি বলেছে দেখে করে নি, আজ নতুন তো তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে হয়ে গেছে। আমি ঠিক করিয়ে নেবো।


শান: ঠিক করিয়ে নিবি মানে? যে করেছে সে ঠিক করে দেবে তোকে। তোর বোধয় কানের ডাক্তার দেখানো প্রয়েজন সরি ওরা বলে নি, শুধু শ্রেষ্ঠা বলেছে।


জিনি:( চুপ করে থাকতে না পেরে) এই যে শুনুন মিস্টার হোয়াটেভার অনেক্ষন ধরে বলে যাচ্ছেন, দিদিয়া তো ওনাকে সরি বলেছে, এটা কি আপনার গাড়ি নাকি যে আপনি এত কথা বলছেন।(শ্রী জিনি কে থামানোর চেষ্টা করে কিন্তু পারে না)


শান: এই মেয়ে তুমি আমাকে কি বলে? কি হোয়াট... হোয়াটেভার নাকি। আমার একটা নাম আছে, ঈশান,ডঃ ঈশান। গাড়িটা আমার না হক আমার বেস্টফ্রেন্ড এর গাড়ি, আর সরি এর কথা বলছো সেটা তোমার দিদিয়া বলেছে তুমি না, কাজ করেছ তুমি।


জিনি: আমার নামও এই মেয়ে না মিস্টার হোয়াটেভার, আমার নাম জিনিয়া। বেশি কথা বলবেন তো এবার আপনার গাড়িটাও স্ক্রাচ ফেলে দেবো। আমার দিদিয়া বলা আর আমি বলা এক, বেশি কথা না বলে আপনার কাজে জান, আমাকেও যেতে দিন। এমনি কত লেট হয়ে গেলো। দিদিয়া তুই যাবি তো আয়ে নাহলে থাক।

** বলেই জিনিয়া নার্সিংহোমের ভিতরে চলে গেলো**

শান: (জিনিয়ার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে) এই মেয়েটা কি বলে গেলো এত বড়ো সাহস ও আমার গাড়িতেও স্ক্রাচ ফেলে দেবে, উল্টে সরি পর্যন্ত বললো না। চেনে এই ঈশান ব্যানার্জী কে? যার কথার উপর কথা বলার কেও সাহস পায়ে না, আর এই মেয়েটা... তোমাকে তো দেখে নেবো আমি মিস কটকটি তুমি কার সঙ্গে পাঙ্গা নিয়েছো জানো না।


অয়ন: (ধাক্কা দিয়ে) কি রে কি ভাবছিস তুই ওই দিকে তাকিয়ে?


শ্রী: প্লিজ স্যার আপনি কিছু মনে করবেন না, আমার বোনটা একটু এইরকম, খুব চঞ্চল। রেগে গেলে কাকে কি বলে ও নিজেও জানে না, কিন্তু মন টা বিষণ ভালো।

(শ্রী এর কথা শুনে শান শ্রী দিকে শুধু তাকালো)


অয়ন: ঠিক আছে শ্রেষ্ঠা তুমি ওতো চিন্তা করো না, যাও তুমি তোমার কেবিনে. 


শ্রী: ঠিক আছে, আমি তবে আসচ্ছি স্যার বলে চলে গেলো।


অয়ন: এই তুই তখন থেকে কি ভাবছিস বলতো। চল ভিতরে চল সব কিছু রেডি করতে হবেতো।


শান: না! কিছু না চল...


অয়ন: (শান এগিয়ে গেলে, একটু দাঁড়িয়ে পরে মনে মনে) ঈশান ব্যানার্জীকেও জব্দ করার মতো কেও আছে তাহলে। যাক ঈশান ব্যানার্জী তোমার জীবনের এবার কিছু পরিবর্তন হবে মনে হচ্ছে, আমরা তো করতে পারলাম না (ঈশান এর ডাকে ভাবনা থেকে বেরিয়ে, হালকা হেসে এগিয়ে গেলো)

**********************************************


**জিনি রেগে গজ গজ করতে করতে একটা রুমে ঢুকছে যেখানে সমস্ত নিউ joiner বসে, খুব বেশি বড়ো রুম নয় ওখানে গোটা 5 জন মতো বসে, জিনির মতো ওর দুই বন্ধুও এখানে সুযোগ পেয়েছে **


শ্রেয়া : কিরে জিনি এত লেট করলি, কখন থেকে অপেক্ষা করছি তোর।


সাজ: তোকে কখন থেকে কল করছি ফোন টা সুইচ অফ বলছে।


জিনি:(ওদের দিকে তাকিয়ে) তোরা এত কথা বলিস কেনরে সব সময়। একেরপর এক প্রশ্ন করে যাচ্ছিস উত্তর দেওয়ার সময় দিলেতো উত্তরটা দেবো।


শ্রেয়া সাজ: একে অপরের দিকে তাকিয়ে আস্তে করে, আজ হাওয়া গরম মনে হচ্ছে সকাল সকাল।


জিনি: (শ্রেয়া আর সাজের পাশে বসে) এত বড়ো সাহস আমার সাথে এরকম ভাবে কথা বললো,বাড়িতে কেও আজ পর্যন্ত আমার সাথে এভাবে কথা বলে নি। অসহ্য লোক একটা,জন্মের পর মনে হয়ে মুখে কেও মধু দিয়েনি। (ব্যাঙ্গ করে) মিস্টার হোয়াটেভার...


সাজ: কি বকছিস তুই? কাকে বলছিস এসব কথা? কি হয়েছে বলতো সত্যি করে।


জিনি: আরে বলিস না, আজ ভিতরে আসতেই একটা....


(জিনির কথা শেষ করার আগেই, দুজন রুমে এসে) গম্ভীর গলায় গুডমর্নিং, everyone আটটেনশন প্লিজ .....


**কথা শুনে ঐদিকে মুখ ঘুরালে, জিনির কথা মুখেই রয়ে গেলো আর এগোলো না, ওখানেই স্থির জিনি..**


চলবে...


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama