ইনভার্টার
ইনভার্টার


লোডশেডিংয়ের কারণে অনেক সময় আলো থাকে না। তাতে বাবা একা ছিল। এই ঘটনা থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে এই কাহিনী টি লিখেছি।
বিকেল সবে পাঁচটা। শীত কাল। রোদ নামছে। প্রাকৃতিক আলো বুজে আসছে তবে মিনিট পনেরো বাকি আছে। ঘুম থেকে উঠে খবরটা শুনব বলে ভাবলাম। হবে না। লোডশেডিং হয়েছে।সে কখন থেকে ... এখন ও আসেনি। কে জানি , কি ব্যাপার। কোথায় আটকালো । চার দেয়ালের মধ্যে অন্ধকার- অন্ধকার সব কিছু ।শুধু মাত্র জানলার ফাঁক দিয়ে এক চিলতে সূর্যের আলো আসছে। তাই আলো করেছে। তবে কিছু ক্ষণ পর এওতো বুজে যাবে।আরো একা হয়ে যাবো। পিউ আসার অবধি। কত একা একা লাগে এই অন্ধকারে। সহধর্মিণী নেই। কথা বলব কার সাথে।বয়স হয়েছে, সঙ্গি নেই আমার আর তার উপর অন্ধকার।কি করব বুঝতে পারছিনা। একা অন্ধকারে কি করব।তলায় গিয়ে লোকেদের সাথে কথা বলব। কে শুনবে? এক খবর কে শুনবে? তা জানি না তবে এই কথা টা জানি ওইখানে গেলে কিছু টা যখন বলব তা ওদের শুনতে ও হবে পর নিন্দা পর চর্চা।কিন্তু যাব কি করে ? সিঁড়ি র ঘর টা যে অন্ধকার থাকবে।দেখতে না পেয়ে যদি পড়ে যাই। ঘরেই বরং বসি। পিউ আসুক। সময় কাটছে না। কটা বাজে? এই সবে ৬ টা । দু' ঘন্টা হয়ে গেল। খবর টা না হয় বরং পিউ যে বই টা দিয়ে ছিল তাই পড়তাম। আর কয়েকটা পাতা বাকি। কখন যে কারেন্ট আসবে? পিউ একটু তাড়াতাড়ি আয় মা। আমাকে একা অন্ধকারে আর ভালো লাগে না।
দরজায় একটা টক করে আওয়াজ হলো । কে এলো? আস্তে- আস্তে ঢুুকছে, ঢুকে জুতো রাখল । পিউ এলো।
"কারেন্ট নেই? কত ক্ষণ হয়ে গেছে ? " পিউ ব্যাগ রেখে জিগ্যেস করল ।
"হবে দু'ঘন্টা ।" বাবা বললেন। পিউ কাজ সারতে- সারতে ভাবছে , "কত ক্ষণ বুড়ো বাবা অন্ধকারে বসে ছিল সে ও একা। কেমন আঞ্চন- আঞ্চন করতে থাকবে বাবা কে। না এই টা ঠিক নয়। ইনভার্টার টা থাকলে কত ভালো হত। অন্তত আলো পাখা সাথে বন্ধু হয়ে থাকতো। আমি বেশি কিছু না বলে বরং করে দেখাবো। "
পিউ ফোন করল গুপ্তা ডিস্ট্রিবিউটর কে।
"একটা ইনভার্টার অর্ডার দেওয়ার আছে। কত ক্ষণে পৌঁছে যাবে? "
"ঠিক আছে । পাঠান। টাকা র কথা চিন্তা করবেন না। আমি টাকা পাঠাচ্ছি। "
এখন ইনভার্টার আছে। বাবা কে আর অন্ধকারে র ভয়ে নেই । বাবা নিশ্চিন্ত হল।