The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW
The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW

Satya Sundar

Romance Others

4.0  

Satya Sundar

Romance Others

গোলমেলে অভিসার

গোলমেলে অভিসার

4 mins
346



প্রেমে এত বাধা নিষেধ, গোপনীয়তা থাকে বলেই কি এর এত তীব্র নেশা? ভাবতে ভাবতে রিনি পার্কের ভেতর হাঁটাহাঁটি করতে থাকে। দুপাশের দৃশ্য গুলো মনের অন্ধকারকে নাড়া দিয়ে যায়। এতক্ষণে মনোজদার পৌঁছে যাবার কথা। বীথি কিছুক্ষন আগেই ওকে ফোন করে জানতে চাইছিলো পিসির বাড়ি পৌঁচেছে কি না। আসলে ওকে ম্যানেজ করে বহু ফন্দি ফিকির করে ও আজ মনোজের সাথে দেখা করতে এসেছে। ওর পরিপাটি সাজের বহর দেখে বীথির মনে যে সন্দেহ দানা বেঁধে ছিলো তা দুর করতেই পিসির বাড়ির গল্পের অবতারনা।

 

বীথি ও রিনি প্রেসিডেন্সির প্রথম বর্ষের ছাত্রী, এক মেসের রুম মেট। স্বল্প সময়েই আলাপ ঘনিষ্ঠতায় পরিনত হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনের সব কথা তারা সেয়ার করে। বীথির স্টেডি বয়ফ্রেন্ড আছে। মাঝে মাঝে ঘুরতে যায় ওরা। আর ফিরে এসে তাদের রোমান্টিক গল্প শোনায় রিনিকে। সে মনযোগী ছাত্রীর মতো সেগুলো গিললেও, মনে মনে একটা হতাশা ও হাহাকার অনুভব করে। কখনও মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে ফোনে বীথির ফিসফিসে বার্তালাপ শুনে মনটা খিঁচড়েও ওঠে। বহু স্তুতিকার ভক্তের মধ্যে রিনি যে নিজের মনের মতো কাউকে বেছে উঠতে পারে নি, একথা সে বীথিকে বলেছে।অথচ রিনি মনে মনে জানে কথাটা অর্ধ সত্য। আর কে না জানে অর্ধসত্য সত্য নয়। 

স্কুলে পড়ার সময়ই আলাপ হয়েছিল মনোজদার সাথে। অবশ্য স্কুল সূত্রে নয়। পাশের বাড়ির বাবলু কাকুর মেয়ে শ্রুতিদির বিয়েতে প্রথম দেখেছিলো মনোজদাকে। বিয়ে বাড়ীতে সপ্তদশী রিনিকে সাজুগুজু করে রানীর মতো লাগছিল। সে নিজের অলক্ষ্যেই অনুভব করছিলো অনেক লুব্ধ দৃষ্টি । হয়তো মেয়েদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় একটু বেশিই সজাগ। তবে এ ঘটনায় সে অভ্যস্ত। লজ্জা পাওয়ার বদলে একে তার সৌন্দর্যের পূজা বলে মনে হয়। মনে মনে একটা প্রচ্ছন্ন গর্ব অনুভব করে। জ্ঞান হবার পর থেকেই তার গুনাবলী ও সৌন্দর্যের চাটুকারিতা শুনে শুনে পুরুষ জাতের প্রতি কৌতুহল ক্রমশ অবহেলা ও করুনায় পরিনত হচ্ছিল। সে ধারণায় ধাক্কা দিল বিয়ে বাড়ীর একটি সুদর্শন যুবক। ছ ফুটের উপর লম্বা এই ছেলেটির সৌন্দর্য গ্ৰীক দেবতাদেরও হার মানায়। হাসি মুখে বরযাত্রীদের দলে সকলের সুবিধা অসুবিধার দেখাশুনা করছে। রিনির সাথে ও চোখাচোখি হয়েছে বার কয়েক কিন্তু সে দৃষ্টিতে না মুগ্ধতা, না লোভ। কি সৌম্য ও স্বচ্ছ ভাব। এক অদ্ভুত অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে মনজুড়ে। ঘুড়ে ফিরে ঐ ছেলেটার দিকেই চোখ চলে যায়। মনের মধ্যে কেমন একটু অস্থিরতা অনুভব করে। এ অনুভূতি তার কাছে একেবারে নতুন। এ কি সব হচ্ছে তার সঙ্গে! জোর করে নিজেকে সংযত করে। খাওয়া হয়ে গেলে বাড়িতেই যাচ্ছিল, বাঁধা এলো শ্রুতিদির কাছে থেকে। যদিও বাসর জাগার ধারনা এখন লুপ্তপ্রায়, তবুও শ্রুতিদির পীড়াপীড়ি ও মায়ের অকাট্য যুক্তি: "বাড়িতেও ঘুমাতে পারবি না দিদি এত করে বলছে থাক কিছুক্ষণ, বাবার সাথে ফিরিস।" 

মনে মনে একটা অকারন খুশির ভাব দোলা দিয়ে যায়। জন কয়েক মিলে একটা ছোট খাটো বাসর ও বসে যায়। সেখানেও সেই যুবকটিকে দেখে কেমন অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল। ক্রমশ জানতে পারল ছেলেটি বরযাত্রী দলের, নাম মনোজ। পাড়ায় প্রগল্ভ ও অতিআধুনিকা বলে কিছুটা বদনাম থাকলেও আজ ছেলেটির সাথে যেচে আলাপ করতে কেমন লজ্জাবোধ হতে লাগলো। নিজের এই অদ্ভুত অনুভূতিতে নিজেই অবাক হচ্ছিল। চমক ভাঙলো শ্রুতিদির ডাকে, "এই রিনি এতো চুপচাপ কেন তুই? একটা গান শোনা বোনটি প্লিজ!" 

কেউ গান শোনাতে বললে খুব খুশি হলেও আজ কেমন আমতা আমতা করেই নিমরাজি হলো এবং শোনালো:

"মনেরও দুয়ার খুলে কে, কে গো তুমি এলে বল না....."। 

গান শেষ হলে সবাই হৈ হৈ করে উঠলেও শ্রুতি ওর গান শুনে কিছুটা অবাকই হয়। রিনির স্বভাবের সাথে এ গান তো... সাময়িক বিস্ময় কাটিয়ে সেও তার প্রসংশায় যোগ দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাবা এসে ডেকে নেয় তাকে। আর কিছুক্ষন থাকার ইচ্ছা ছিল ওর। অন্তত ছেলেটির ফোন নম্বরটা পেলে খুব ভালো হতো। অনেক রাতে ফিরে কিছুতেই ঘুম আসে না। সেল ফোনের ফেসবুক এ মনোজ নামে সার্চ করতে করতে খুঁজে পায় কিন্তু প্রোফাইলটা লক করা। সঙ্গে সঙ্গেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে দেয়।

এর পর অপেক্ষা অপেক্ষা..... অনেক চেষ্টা করেছে ফোন নাম্বার জোগাড় করার। শ্রুতিদি দ্বিরাগমনে এলে লজ্জার মাথা খেয়ে মনোজদার সম্পর্কে খবর জানতে চায়েছে, কিন্তু সেও বিশেষ কিছু জানতে পারেনি।

 কলেজে ভর্তির মাস তিনেক পর হঠাৎ ওর ফেসবুকে একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে মনোজদার কাছে থেকে; তবে এটা একটা অন্য আইডি থেকে। সে নাকি ওর শ্রুতি বৌদির কাছে নাম্বার টা পেয়েছে। মনটা ভালোলাগায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।তার পর বীথিকে লুকিয়ে লুকিয়ে চলতে থাকে অল্পস্বল্প চ্যাট, টুকটাক কথাবার্তা। দেখা করার প্রস্তাবটা রিনিই দেয় একদিন।


মোবাইল টা বেজে ওঠে , সচেতন হয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে মনোজদার কল। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসে এক আক্ষেপের সুরে ভেজা শান্ত অথচ কঠিন বার্তা: "সরি জরুরী কাজে ফেঁসে গেছি, তুমি আজ ফিরে যাও প্লিজ।"

বলেই ফোনটা কেটে যায়। হ্যালো হ্যালো করে অসহায় ভাবে ফোনটা ঢুকিয়ে রাখে।

প্রথম অভিসারের এইভাবে শেষ হলো! একটা প্রবল মনখারাপ ওকে ছেয়ে ফেলে। শুধুমাত্র মনোজদা বলেই তা না হলে... মনের যন্ত্রনা চাপতে চাপতে পার্ক থেকে বের হবার রাস্তা ধরে। গেটের কাছে আসতেই সন্তোষকে দেখে খুব অস্বস্তিতে পড়ে যায়। সন্তোষ ওদের কলেজেরই একই ইয়ারের জুলজির ছাত্র, বীথির সুত্রে চেনা। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে রিনিই জিজ্ঞাসা করে, " তুই এখানে?"

সন্তোষ জানায় সে এক বন্ধুর জন্য এখানে এসেছে। রিনি ও সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠে সেও তাই।

"চল তাহলে ঐ গাছতলার বেদিতে বসে অপেক্ষা করি" সন্তোষ প্রস্তাব দেয়। 

অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজী হয় রিনি তা না হলে হাজারো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। তাড়াতাড়ি মেসে ফিরলেও বিপদ, বীথিকে কি বলবে! অগত্যা দুজনে বসে ঘন্টা খানেক ইনিয়ে বিনিয়ে নিজেদের পড়াশুনার বিষয়ে ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে। সন্তোষের সঙ্গে তার পছন্দ ও ভালোলাগার মিল দেখে ধীরে ধীরে তার মনের তিক্ততা কিছুটা কমে আসে। একসময় সে জিজ্ঞাসা করে "কৈ রে তোর বন্ধু তো এলো না?" সন্তোষ ফোনটা বের করে বার কয়েক কল করে আর বলে "না রে সুইচড অফ বলছে, তোর বন্ধুর ও তো পাত্তা নেই"!

"ও আজ আসবে না ফোনে জানিয়েছে, তাহলে আমরা বরং যে যার মত ফিরে যাই।" রিনি ব্যস্ত হয়ে পড়ে। 

সন্তোষ বলে "চল আগে কোল্ড কফি খাই তারপর ফেরা"। রিনি কিছুটা চমকিত হলেও খুশি হয়। কোল্ড কফি যে তার ফেভারিট!!!



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance