STORYMIRROR

Sree Mondal

Inspirational

4  

Sree Mondal

Inspirational

অন্তর্মুখী থেকে বহির্মুখী পর্ব 2

অন্তর্মুখী থেকে বহির্মুখী পর্ব 2

2 mins
261

কলেজ থেকে মাসিরবাড়ি ফিরতেই খবর এলো মা বাবা দুজনেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। দুদিন আগে সিকিমের মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হয় আর সেই রাতেই হঠাৎ ধস নামে আর সাথে ভূমিকম্প,এমন এক পরিস্থিতি তে সিকিমের যাওয়ার রাস্তা সব বন্ধ। শেষবার চোখের দেখা দেখততেও পেলোনা সে। কলকাতায় মাসির বাড়ি থেকেই শেষ কাজ সারলো মেয়েটা। উদ্ধারকার্য চলার দুদিন পরে ওখানকার পুলিশ সুপারিন্ডেন্ডেন্ট জেঠু যার কাছ থেকে স্নিগ্ধার মা বাবা টাকা পাঠাতো সে ভিডিও কল করে দেখিয়েছিলো।  মা বাবা ও নেই , পৃথিবীতে মেয়েটা বড্ডো একা হয়েগেলো। শুরু হলো জীবনের আসল লড়াই। পরের মাস থেকে টাকা কে পাঠাবে স্নিগ্ধা কে? এসব কথা ভাবতে ভাবতেই মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়েছে। পরদিন সকাল হতেই ভাবলো এবার একটা চাকরি জোগাড় করতেই হবে, পার্টটাইম কোনো একটা জব। একটা রেস্টুরেন্ট এ হিসাবনিকাশ এর পার্টটাইম জব নিলো সে। পনেরো দিন হয়েগেলো দেবারুন এর একটা ফোন আর মেসেজ নেই। আজ একবার ফোন করবে স্নিগ্ধা। রাত তখন ১০ টা ঘড়িতে, ফোন করলো স্নিগ্ধা ফোন করলো। Not answering উত্তর এলো ফোন এর ওপার থেকে। এভাবে চললো আরো একমাস কোনো ফোন নেই, নেই কোনো মেসেজ। বুঝতে পারলো না স্নিগ্ধা কেন এমন করছে দেবারুন। একদিন সকালে হোয়াটস্যাপ এর নোটিফিকেশন এলো, ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলে দেখলো দেবারুন এর মেসেজ। তার শরীর ভালো ছিল না, হাসপাতাল এ ভর্তি ছিল তাই ফোন ধরতে পারেনি সে। এরপর স্নিগ্ধা তার পরিস্থিতির কথা দেবারুন কে জানায়। 

"সরি বেবি, তোমার খারাপ সময় আমি তোমার পাশে থাকতে পারিনি "। দেবারুন বললো।

"যা হওয়ার হয়েগেছে, আমি সামলে নিচ্ছি নিজেকে "। স্নিগ্ধা বললো।

এরপর থেকে রোজ তাঁদের নিয়ম করে ফোনে কথা হতো। এভাবেই চলতে লাগলো একবছর। দেবারুন কলকাতায় আসলো, আবার ও তাঁদের রোজ দেখা হতো। সম্পর্ক যেন আগের থেকে আরো মজবুত হতে থাকলো। দেবারুন যেন তার কাছে ছিল এক দুনিয়া, যাকে ছাড়া স্নিগ্ধা এক মুহূর্ত থাকতে পারতো না। এরপর আবার দেবারুন ফিরে গেলো নিজের কাজের জায়গায়। এরপর দুমাস পর স্নিগ্ধার কলেজ শেষ হলো। স্নিগ্ধা এবার ভাবলো নাচের স্কুল খুলবে, কিন্তু কে দেবে তাকে এতো টাকা? এবার স্নিগ্ধা একটু একটু করে পার্টটাইম জব এর টাকা জমিয়ে জমিয়ে একটা ঘর ভাড়া নিলো, যেখানে সে নিজেও শিফট করলো আর সেখানে অন্য একটা ঘরে সে বিকেলে নাচ শেখাতো। এভাবেই চলতে লাগলো। দেবারুন এর সাথে ফোন এ কথা হতো। কিন্তু সত্যিই কি জীবনের লড়াই এতো সহজ হয়? কথায় বলে যার জীবনের লড়াই যত বেশি তার সফলতা ও ততো বেশি। একটা ফোন, স্নিগ্ধার পায়ের তলার থেকে যেন মাটি সরে যেতে লাগলো।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Inspirational