কণ্টকরূপী স্বপনগুলো
কণ্টকরূপী স্বপনগুলো
স্বপন দেখেছিল কত কি
আজ না হয় হোক,
কিন্তু কোনোদিনই কি পূরণ হবে না তার কিছুই কি?
প্রশ্নের পর প্রশ্নে
ভরে যায় মনের গ্রন্থাগার;
জবাব দেওয়ার লোক নেইকো
তথাপি স্থির হয় না জিজ্ঞাসু অন্তঃস্থলও।
স্বপন গুলো যেন আজ বেরঙিন,
যেন কাঁটা হয়ে ফোঁটে অতৃপ্তিরূপে,
মনের অতলে সৃষ্টি করে নিরাশার ঘনকালো মেঘ :
অদ্ভুত সেই মেঘমালায় নামে না কোনো বর্ষণধারা;
করে না কোনো গর্জনও
তবে সে গর্জন শ্রবনযোগ্য নয়।
বাহ্যিক ভাবে হয়তো সে মেঘ স্বাভাবিক,
কোনোমতেই তবে তা বিপজ্জনকহীন নয়—
গুমরে গুমরে ক্রমশ যেন অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার হ্রাস
হয়তো সেই আশঙ্কায় শয়নে স্বপনে একটাই প্রশ্ন
কি সেই অজানা পাপের বোঝা
যা সে আজও বয়ে চলেছে জন্মলগ্ন হতে?
প্রায়শ্চিত্ত আছে কি কোনো সেই পাপরাশির?
তবে কি একদিন তার সব শক্তির
স্থানান্তর ঘটবে,
অন্য আর এক দেহে—
আরও একটা জীবনের ধ্বংস!
আরও এক প্রশ্নে চিত্ত অস্থির
তবে কি কোনোদিনই
পরম শান্তি মিলবে না
ঐ গুমরে বেড়ানো মেঘেদের!
অন্তরের মানুষটি ছাড়া সকলকে অবাক করে,
গুমরে থাকা মেঘেরা কি একদিন
সশব্দে গর্জে উঠবে না:
মুষলধারা বর্ষণে অন্তর কি হবে না সম্পূর্ণ হালকা!
সমগ্র পৃথিবীতে সেই অন্তরের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে কোনদিন?
নাকি আমৃত্যু দুনিয়াতে অপরিষ্কৃতই
থেকে যাবে সে!
বিস্ময়রূপ সব প্রশ্নের বাহার।
আজ তাই স্বপন গুলো বিলাসিতা মাত্র,
বাস্তবের কাঠিন্যে সে অবস্থায় শ্রেষ্ঠতর রুপ নেয়,
তৃপ্তিহীন নিতান্তই সাদামাটা জীবনশৈলী;
সামাজিক চাপে বিধ্বস্ত জীবন।
এমতাবস্থায় মাঝে এক এক সময়
হঠাৎ কালবৈশাখীর মতো,
ঘুরিয়ে নিয়ে যায় জীবনের মোড়
কোন্ যে অচিনপুরে:
জ্ঞাত নয় তা কারোরই বিধাতা ছাড়া;
তছনছ করে দেয় সেই অশুভ ঝড়
সদ্য নির্মিত বালিদুর্গ,
উড়িয়ে নিয়ে যায়
দুর্গ নির্মাণের সমস্ত উপকরণ,
জাগায় না,
পুনরায় শুরুর কোনো আশার আলো।
পূর্বত দিশেহারা পথিককে করে দিকভ্রষ্ট,
কিন্তু তখনও কাঁটা হয়ে আঘাত দেয়
পুরাতন রঙিন আশাগুলির ভাবনা।
শত আঘাতেও মরণ হয় না তার,
মরণের চেষ্টাও বৃথা যেন
এ কেমন জীবনজালে আবদ্ধ
করেছো, কেন বিধি বাম তার প্রতি?
কারণ আশা আকাঙ্খার মৃত্যু আছে বটে,
কিন্তু জীবনপথিকের মৃত্যু নেই।
সে যে শুধুই দেহ নয়
ঈশ্বরের নিকট সে এক উদ্দেশ্য:
উদ্দেশ্য ফুরালে দেহও প্রাণ হারাবে
একদিন,
সেদিনের অপেক্ষায় সেই পথিক
যাত্রা শুরু করে পুনরায়,
সম্পূর্ণ নতুন এক দিকে,
ধ্রুবতারাহীন জীবনে নিজের সিদ্ধান্তে, নিজ দায়িত্বে
একটাই আদর্শে— চরৈবতি...
কেন না দেহমৃত্যুই যে জীবনের একমাত্র স্টেশন—
বিধিমতে কোথাও থামার নিয়ম নেই,
থামলেই বিপত্তির মধ্যে নতুন বিপত্তি।
