চড়ুইভাতি
চড়ুইভাতি
সে ছিল এক আনন্দেরই ক্ষণ,
চড়ুইভাতি মানেই অনেক মনের মিলন।
মনে পড়ে যদিও আবছায়া স্মৃতি,
খোলা মাঠের মাঝে আমাদের প্রথম চড়ুইভাতি।
'পিকনিকে'তেই নামটা জানা, পরে পরিচয়;
চড়ুইভাতি নামটা বেশ খটোমটো, ছিল 'রচনা'তে ভয়।
ইস্কুলেতে হঠাৎ ছুটি বন্ধু সমারোহ,
বলতে গেলে এক্কেবারে চড়ুইভাতির আবহ।
খেলাধুলা, ঘোরাঘুরি অনেকই তো হল;
পুকুর পাড়ে বসে বসে চিন্তাটা হঠাৎ এল।
আরে, পিকনিক করলে কেমন হয় !
ক্ষুদে দলের নেতা স্বয়ং পিন্টু দিলেন অভয়।
চলে এল মুড়ি সাথে বাদাম ভাজা আর লঙ্কা -চানাচুর,
সবাই মিলে আনন্দেতে কাটলো যে দুপুর।
চনাই দাদাকে জরুরি তলব তুলে দিতে হবে ফটো,
আমরা জনেক চার যে ছিলাম তখন ছোটোখাটো।
সেই আমাদের প্রথম ফটো, প্রথম চড়ুইভাতি;
সেসব এখন হয়েছে অতীত, পুরোটাই সুখস্মৃতি।
বছর কুড়ি পর, এখন আমরা সবাই স্বনির্ভর;
যোগাযোগ শুধুই হাতের মুঠোয় মোবাইলে নির্ভর।
হঠাৎ সেদিন শীতের বেলায় বাজলো মোবাইলে ঘন্টি,
চেনা গলার আহ্বানে, আবার হবে চড়ুইভাতি।
শীতকালীন ছুটিতে সবাই পেয়েছে অবসর,
পুনর্মিলন আসন্ন আমাদের, উদ্যোগ পিন্টুর।
সেই একই স্থান, একই সময় শুধুই কালের ভেদ
অটুট রয়েছে সম্পর্কটা, বন্ধুত্বে পড়েনি যে ছেদ।
সারাদিনের হুটোপুটি, খেলাধুলা আর শুধুই আড্ডা,
বিরিয়ানি-চিকেন কষা-মিষ্টি সাথে ছিল বয়েল আন্ডা।
যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিলাম 'বিশ এর' চ্যালেঞ্জ
সেল্ফি টা ঠিক তুলতে যাব হঠাৎ প্ল্যানটা হল চেঞ্জ।
পিন্টু যেন কোথায় গেল, নিমেষে হল সে উধাও,
বেলা এখন অনেক পেটে বড্ড খিদেও;
অনেক দূর থেকে হেঁটে আসছে দুজন,
একজন অতি বৃদ্ধ আর একজন আমাদের সুজন।
অভিজ্ঞ দাড়ি গোঁফের জঙ্গলে আবৃত একখানি মুখ,
ক্যামেরা বন্দী মুহূর্ত সৃষ্টি করায় ওনার যে পরম সুখ।
কাঁপা দুহাতের বন্ধনে ক্যামেরাটা বৃদ্ধ বললেন, স্মাইল প্লিজ!
চেনা গলাটা তারুণ্য হারালেও পরিচিতি বজায় রয়েছে ঠিক।
বৃদ্ধ আমাদের সবার প্রিয় চনাই দাদা,
এখন আমরা সবাই রঙ্গিন তখন ছিলাম সাদা।
সন্ধ্যা এলে পুকুর পাড়ে আমরা কজন পরস্পরের সাথী,
আসছে বছর আবার হবে আমাদের চড়ুইভাতি।
