স্মরণীয় মুহুর্ত
স্মরণীয় মুহুর্ত


"তোমার কোনো কথায় কোনদিন না বলিনি ,তাই আজকেও বলবো না , এখন তুমি যথেষ্ট বড় হয়েছো আশাকরি তোমার যথেষ্ট বোধ বুদ্ধি হয়েছে, তোমার ক্ষনিকের আনন্দ যেনো কারোর কষ্টের মাত্রা না বাড়িয়ে দেয় ,যদি সত্যি সত্যিই ওনাদের জন্য তোমার মন প্রাণ কাঁদে তাহলে উপকার করো নিয়মকরে ,লোকদের না জানিয়ে, একদিনের জন্য বাহবা পাবার আশায় নয়" - প্রায় এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে গেলেন রমেনবাবু।
বাপি কে এর আগে কোনদিন এইভাবে কথা বলতে শোনেনি সৃষ্টি। এতদিনের এত পরিকল্পনা তাহলে জলে চলে যাবে?বন্ধু বান্ধবদের তাহলে কি বলবে? তারা কি ভাববে?এইসব ভাবনায় সৃষ্টির মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেল । যত রাগ অভিমান জমা হলো রমেন বাবুর উপর ।ওর এখন মনে হচ্ছে সুদেষ্ণা ,তৃষা, মেঘার বাপিরা কততো ভালো ,আর ওর বাপি! তবু ওর নিজের ইনকামের টাকায় ও ...
মাম -বাপি কে বলতে যাওয়াটাই মুর্খামি হয়ে গেছে ...
না বললে তো আর ওনারা জানতেই পারতেন না ।সৃষ্টির ধারনাই ছিলনা ওর বাপি এটা নিয়ে ওকে এত কথা শোনাবে আজ এই বিশেষ দিনে!
সৃষ্টির হাতের iphone টা তার অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে প্রতিমুহূর্তে।ফোনের ও প্রান্ত থেকে সবাই শুভেচ্ছা বার্তা জানাচ্ছে । আর ও কি করবে! এই নিয়েই চিন্তা করেই চলেছে।
আজ পযর্ন্ত কোনদিনই মাম -বাপির অবাধ্য হয়নি সৃষ্টি ,ও বুঝতে পারছে না আজ কি করবে?
এদিকে সব বন্ধুদের বলাও হয়ে গেছে । ওর এখন মনে হচ্ছে কেন যে ও, সুদেষ্ণা ,তৃষা ও মেঘার মতো ওর নিজের জন্মদিন টা বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের সঙ্গে কাটাতে চেয়েছিল!! এরচেয়ে যদি কোনো বড় হোটেলে নিদেন পক্ষে বাড়িতেও পার্টির আয়োজন করতো তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ছবি আপলোড করা যেত,,তাতে লাইক আর কমেন্ট এর বন্যা বয়ে যেত!
না অন্যান্য বারের মত এবার আর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন পোজে ছবি আপলোড করে নি সৃষ্টি! মাম- বাপির কথা মতো , তার ফোনের লেন্সে একটা ছবিও ফ্রেমবন্দি করেনি তবুও কত উজ্জ্বল আজকের দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত , মনে হচ্ছে এর মালিক ও শুধু একা! লোকের প্রশংসা না পেয়েও যে এত আনন্দ পাওয়া যায় ,তা এতদিন ওর জানা ছিল না।আজ জীবনে প্রথম তা অনুভব করলো সৃষ্টি । মন থেকে কিছু করার মধ্যে যে এত আনন্দ...
সৃষ্টির কেবল মনে হচ্ছে তার নয়, তার অনুভবের আজ 'সৃষ্টি ' ।।