পুচকে প্রেমিকা
পুচকে প্রেমিকা
অগ্নিভ সবে মাত্র ইতিহাস বইটা খুলে প্রশ্নপত্র তৈরি করবে বলে রেডি করছে। হটাৎ বইয়ের মাঝ থেকে বেরিয়ে এলো একটা সাদা ভাঁজ করা কাগজ। কাগজটা তুলে নিয়ে কিছুক্ষন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থেকে কাগজটা খুললো। ভেতরে সুন্দর করে কিছু লেখা আছে কিন্তু লেখা কম প্রশ্ন বেশি। লেখাগুলো পড়তে পড়তে ফিক করে হেঁসে ফেললো অগ্নিভ। বইটা ওর এক মাত্র ছাত্রী মেহুলের। মেয়েটা এই বছর ক্লাস টেনে উঠলো। মাধ্যমিকের জন্যই ওর মা অগ্নিভকে পড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছে অগ্নিভ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ম্যাথ অনার্সের ছাত্র। নিজের পড়ার মাঝেই মেহুলকে পড়ায় ও। কালকে একটা পরীক্ষা নেবে বলে আজকেই মেহুলের থেকে ইতিহাস বইটা নিয়েছে। আর তার মাঝ থেকে বেরিয়েছে এই মিষ্টি মিষ্টি লেখায় ভরা চিঠিটা। চিঠিতে লেখাগুলো কিছুটা এই রকম -
ও অগ্নি দা তুমি জানো সেদিন স্কুলে রিমি বলছিলো যে ওর নাকি তোমাকে খুব ভালো লাগে আমার খুব রাগ হচ্ছিল তাই ওর সঙ্গে আমি ঝগড়া করেছি। সেটা দেখে আমার বাকি বন্ধুরা বললো যে আমি নাকি জেলাস আর আমি নাকি তোমায় ভালোবাসি। আচ্ছা জেলাস হলেই কি সে তাকে ভালোবাসে হয়? তার মানে কি আমি তোমায় ভালবাসি? আমি তোমায় কথাটা জিজ্ঞেস করলে তুমি কি আমায় সেদিনের মতো কান ধরে একশোটা উঠবস খাওয়াবে? না বাবা থাক বলবো না। আচ্ছা তুমি কাউকে নিয়ে জেলাস ফিল করো নাকি? তুমিও কাউকে ভালোবাসো নাকি? তাহলে আমি কি করবো ওরা যে বললো আমি নাকি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি? তুমি অন্য কাউকে আবার যদি ভালোবাসো তাহলে? এই ধুর সব গুলিয়ে যাচ্ছে।
এই কথাটা দিয়েই শেষ হয়েছে চিঠিটা বোঝাই যাচ্ছে মেয়েটা মনে যা এসেছে তাই লিখেছে। অগ্নিভ চিঠিটা আবার যেমন ছিলো তেমন করে ভাঁজ করে বইয়ের মাঝে রেখে দিল তারপরে মুচকি হেসে বলল "আমার পুঁচকে প্রেমিকা"।
পরেরদিন মেহুল পড়তে আসতে অগ্নিভ ওকে বইটা ফেরত দিয়ে কিছুক্ষনের জন্য বাইরে গেল। নিজের বইটা খুলতেই বেরিয়ে এলো কাগজটা আর সেটা দেখে মেহুল ঘাবড়ে গেল কিন্তু তারপরে আবার কিছুটা নিশ্চিন্ত হলো
না না নিশ্চই দেখেনি। উফ্ আমি যে করি না এটা এই বইয়ের মাঝে রয়ে গেছে। বাপরে দেখে পেলে আমায় নিশ্চই কাঁচা চিবিয়ে খেত। তুমি বাঁচিয়েছ ভগবান আমি তোমাকে বাড়িতে গিয়ে ছটা নকুলদানা দেবো। কথাগুলো বলে চিঠিটা নিজের ব্যাগে চালান করে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলো। আর দরজার বাইরে থেকে এসব শুনে ফিক ফিক করে হাসতে হাসতে অগ্নি বিড়বিড় করে বলে উঠলো -"পুচকি একটা"❤️
