প্রথম ভোর
প্রথম ভোর
প্রথম ভোর
কিছুকাল পূর্বেই বয়সমাতা সবেমাত্র ঊনিশ বৎসর হইতে লাফ দিয়াছেন অতএব কুঁড়ি বৎসরের উচুঁ- নিচু ঢেউ খেলানো রসবিহীন কঠোর প্রস্তরময় পার্বত্য ভূমিতে আছাড় খাইবার এখনো যে ঢ়ের দেরি ইহা উপলব্ধি করিয়া তাঁহার আনন্দ- উল্লাসের অন্ত নাই। মরিবার তরে কিংবা প্রলয়োল্লাসের পরিধিটি অধিকতর সুবিস্তৃত করিবার উদ্দেশ্যে অথবা অন্য কোন অজ্ঞাত কারণে, কেন যে তিনি লাফ দিয়াছিলেন হঠাৎ, এরূপ করিবার পশ্চাতে তাহার অভিসন্ধিই বা সঠিক কি ছিল, ইহার ফলাফলস্বরূপ যে তাঁহার অস্থিসন্ধির সংখ্যা সমান্তর বা গুনোত্তর, কিংবা গনিতের অন্য কোন্ অজ্ঞাত প্রগতিকে মাধ্যম করিয়া বৃদ্ধি লাভ করিতে পারে নতুবা হয়তো তাঁহার সুবিস্তৃত দেহটিকে অতিরিক্ত সুরক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে তাঁহার উপর একেবারেই সুবিশাল সমাধিক্ষেত্র নির্মিত হইতে পারে তাহা সম্পর্কে তিনি পূর্বেই অবগত ছিলেন কি না ইহা সম্পর্কে লেখক একেবারেই অজ্ঞাত। অতএব আশা রাখি এরূপ বিশেষ দ্রষ্টব্য শুনিবার পর কোনো কৌতূহলী পাঠক তাহার স্বভাবজাত কৌতূহল উন্মোচিত করিয়া অকারণে লেখকের কোমলচিত্তে বারংবার তীর বিঁধিয়া হত্যা করিতে উদ্যত হইবেন না। দিবারাত্রি পড়িয়া পড়িয়া যে জ্ঞান অর্জিত হইয়াছে তাহা ইতিমধ্যেই চক্ষুদেবতার পাদদেশে তাহার অনুমতি ব্যাতীতই নির্লজ্জতার সহিত কালো পলির আকারে সঞ্চিত হইয়াছে। ক্রমাগত একই খাদ্য খাইয়া যে মনদেবতার পাকস্থলীতে বারংবার গোলযোগ ঘটিতেছে তাহা বোধ করি কাহারও অবিদিত নয়। অঙ্গুলিদেবতাও দীর্ঘদিন একই কাজ করিয়া করিয়া ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছে। এমনিভাবে সাম্রাজ্য কতকাল চলিতে পারে!! চক্ষুদেবতাও এরুপ হাজার হাজার মেট্রিক টন পলির ভার কতকাল বহিতে পারে! বারংবার গোলযোগ ঘটিতে থাকিলে পাকস্থলীতেও ত ভবিষ্যৎকালে গ্যাস্ট্রিক আলসার হইয়া যাইতে পারে, ইহা অনুমান করিয়া মনদেবতাও যে অতিশয় চিন্তিত। অঙ্গুলিদেবতাও যে অবসাদের পাঁকে পড়িয়া ক্রমাগত ডুবিয়া যাইতেছে, এক হাত উঠিবার চেষ্টা করিলে দশ হাত নিম্নমুখে নামিয়া যাইতেছে এবং এরূপে একশত হাত উঠিবার চেষ্টা করিলে কত হাত নিচে নামিতে পারে ইহা কল্পনা করিয়া তাহারও দুশ্চিন্তার অবধি নাই।
[চলিতেছে]