* মন বা আত্মা
* মন বা আত্মা
#দ্বিতীয় পর্ব
কিছুক্ষণ পর চার দিকটায় ঝুপ করে আধার নেমে এল, চারপাশটা খুব শান্ত একটা ঠান্ডা বাতাস যেন চারধারে দোল গাছের,,,,,,
দিয়া দিয়া,,,,,,
কে কোথায়?
না দিয়া কাউকে দেখতে পেল না শুধু একটা কন্ঠ যেন ভেসে আসছে এ কন্ঠ তার খুব পরিচিত,
আমি দীপায়ণ, না দিয়া তুমি আমায় দেখতে পাবে না শুধু আমায় শুনতে পাবে শুধু আমার উপস্থিতি, আমার মনকে তুমি অনুভব করতে পারবে, দিয়া র ভিতরটা যেন কেমন শুকিয়ে আসছে সব অন্ধকার হয়ে আসছে ওর। কি বলছো তুমি এসব, এটা কি করে সম্ভব??
অনেক সময় ই অনেক অসম্ভব সম্ভব হয়, আজ থেকে ৫ বছর আগে আমার সাথে তৃণা বলে একজনের আলাপ হয় জানো ও আমার খুব ভালো বান্ধবী ছিল, আমাদের ও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট এ পরিচয় হয়েছিল খুব কথা বলতো ও ঠিক তোমার মত,একদিন ঠিক করি আমরা এইখানে দেখা করব। সেদিন আমি ও জানো তো ওর জন্য অপেক্ষা করেছিলাম, ঠিক এই জায়গা টা তেই আমি বসে ছিলাম ঠিক যেখানে এখন তুমি বসে আছো, না ও আসেনি সেদিন কথা রাখেনি না ফোন এ তার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি তারপর থেকে বহুবার চেস্টা করে ও ওর সাথে কোনো যোগাযোগ করে উঠতে পারিনি।
ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে লাগলাম কিন্তু ১বছর পর ও পেরে উঠলাম না সবসময় ওর কথা মনে পড়ত আমাদের বন্ধুত্বের স্মৃতিগুলো মনের মণিকোঠায় আকিবুকি কাটতো। একদিন অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে খুব উদাসীন হয়ে পড়ি আর তখন ই পেছন থেকে একটা লরি,,,,,,,,,, না তারপর আর কিছু মনে নেই।
আজ এতদিন পরে ও আমার মন কাউকে খোঁজে আমার মন একজন বন্ধু চায় যার সাথে আমি আমার রোজকার আনন্দ দুখো গুলো ভাগ করে নেবো আর তাই এই সৈকতে র আশেপাশে ঘুরে বেড়ায় আর খুজে চলি একজন বন্ধু। গলার স্বরটা যেন তার ক্ষীণ হয়ে আসতে লাগল। দিয়া ঘটনাটা অদ্ভুত দৃষ্টিতে শুনতে শুনতে কেমন যেন হারিয়ে গেল সব ওর গোলমাল হয়ে যেতে লাগলো, এও কি সম্ভব যে এতদিন ও যার সাথে এত কথা বলেছে তাকে দেখতে পাওয়া যায় না শুধু অনুভব করা যায়। ওর ভেতরটা শুকিয়ে এল বালির উপর দিয়ে ওঠার ক্ষমতা যেন ওর নেই, ওখানেই চৈতন্য হারালো সে।
জ্ঞান ফিরতে দেখল বাড়ির বিছানায় শুয়ে আছে সে, পাশে মা ও বাবা, কাকা কাজিমার এসেছে, এখন ও যেন ওর সব অন্ধকার লাগছে মা খুব শান্ত গলায় বলল, তুই কি করে সৈকতের ধারে গেলি তুই তো বলেছিলি রিতি র বাড়ি যাবি, কি হয়েছিল কিছু বিপদ ঘটেছিল, মা বাবা কে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে সেটাই স্বাভাবিক, দিয়া খুব বুদ্ধিমতী মেয়ে নিজেকে সামলে নিল সে বলল না মা একটু সৈকতে ঘুরতে গেছিলাম মাথা ঘুরে গিয়ে শরীরটা খারাপ হয়ে যায় মা বাবা সেটাই শুনে নিল তাকে বেশি আর জিজ্ঞেস করল না।
ঘটনার পর ৫ দিন কেটে গেছে দিয়া এখন অনেকটা সুস্থ রাত বারোটা বাজে ফোন টা হাতে নিয়ে দীপায়ণের নাম্বারটা ডায়াল করল সে, অদ্ভুতভাবে ring হচ্ছে।
হ্যালো দিয়া
দীপায়ণ,,,,,,,,,
দিয়া হয়তো এটাই আমাদের শেষ কথা মিস কোরো না আমায় তুমি তুমি ভালো থেকো তোমার সাথে খুব ভালো সময় কাটিয়েছি আমি, আমায় ক্ষমা করে দিও আমি সেদিন ঘটনার আকস্মিকতা কাটাতে পারিনি কিন্তু তোমার যেন সে রকম কিছু না হয় দিয়া তুমি ভালো থেকো দিয়া তুমি ভালো থেকো, তোমার মধ্য দিয়ে আমাদের বন্ধুত্ব টা যেন সারাজীবন বেঁচে থাকে।
আমার আত্মা আজ মুক্তি পাবে আমি আর আসতে পারবো না তোমার কাছে ।
দিয়া তুমি ও ভালো থেকো দীপায়ণ তোমার আত্মা র শান্তি কামনা করি আমি ফোন টা কেটে গেল। না আর কোনোদিন দিয়া র ফোনে দীপায়ণের ফোন আসবে না।
মানুষ মরে যায় কিন্তু মন বা আত্মা র কখন ও মৃত্যু হয় না আত্মা শান্তি না পেলে তার মুক্তি হয় না।
কলমে অলিভিয়া