Alivia Biswas

Romance Tragedy Fantasy

3  

Alivia Biswas

Romance Tragedy Fantasy

* মন বা আত্মা

* মন বা আত্মা

4 mins
209


# প্রথম পর্ব

  ওড়িষ্যা রাজ্যের পাতি সোনাপুর সমুদ্র সৈকতের পাশে ছোটো গ্রাম শোনপুর, চারিপাশে ঝাউবন বেষ্টিত অপূর্ব সুন্দর গ্রামটি, সেখানের লোকসংখ্যা খুবই কম, সবমিলিয়ে ১০০ জন হবে, এখানে ই মা বাবার সাথে থাকে অহেনদিয়া। অহেনদিয়া র বয়স ২৮ সে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, সে খুব মিস্টি ও বুদ্ধিমতী মেয়ে,গ্রামের মানুষ কে ভালোবেসে সবসময় তাদের ভালো রাখতে সে উদগ্রীব। অহেনদিয়ার বাবা রেলে চাকরি করেন মা একটি NGO তে কাজ করেন, বেশ সুখেই তারা দিনযাপন করত।

কিছুদিন হল social site এ অহেনদিয়ার সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে দীপায়ণ এর। দীপায়ণ ওড়িশার কটক শহরে থাকে, নাম শুনেই বুঝতে পারছেন বাঙালি, চাকরি সূত্রে কটকে এসেছে। বন্ধুতটা দিন দিন গভীর হচ্ছে মেসেঞ্জারের গন্ডি ছেড়ে এখন তাদের ফোনে কথা হয়। সারা দিনের কাজের শেষে দুজন দুজনের সাথে কথা বলে একটা মানসিক তৃপ্তি অনুভব করে।

হ্যালো দিয়া

হ্যাঁ বলো

কি করছিলে

এই তো গল্পের বই পড়তে পড়তে তোমার ফোনের অপেক্ষা করছিলাম। তুমি কি করছো?

এই তো ডিনারটা শেষ করে তোমায় কল করলাম। তোমার মা ভালো আছেন?জ্বর হয়েছিল যে বললে।

হ্যাঁ এখন আগের থেকে অনেক ভালো আছেন।

আজ স্কুলে তোমার বাচ্চাগুলো কি করল?

আর বোলো না তাদের দুষ্টুমির শেষ নেই, বলে কিনা ম্যাডাম আমাদের সাথে একটু খেলোনা খুব কিউট ওরা ফুলের মত নিস্পাপ।

এইভাবে দূজনের বন্ধুত্ব টা এগোতে থাকল, ৭মাস কেটে যায়। কি ভাবছেন এবার তাদের প্রেম হবে, না ব্যাপারটা সেরকম কিচ্ছু ঠিক নয় তবে একটা ভালোলাগা তৈরি হয়েছে। রোজ সন্ধের পর অহেনদিয়া দীপায়ণের ফোন না পেলে একটু খারাপ লাগে, তার মনে হতে থাকে যে মানুষ টার সাথে রোজ এত কথা হয় তাকে একদিন না দেখলে ই নয়।

হ্যালো দীপায়ণ

হ্যা বলো

তোমায় একটা কথা বলতে চাই

আরে এত দ্বিধা করছো কেনো বলেই দাও কি বলবে

আমার সাথে একদিন দেখা করবে তোমার সাথে এতদিন কথা বলছি, তোমার সাথে একদিন আলাপ করার ইচ্ছা হচ্ছে

ও এই কথা হ্যা করা যেতে পারে তবে এতদূর,,,, আমার এখন যাওয়াটা একটু সমস্যা, বুঝতে পারছো নতুন চাকরি তবে ছুটি নেওয়া র চেস্টা য় থাকবো,,,

এখানে এলে পাতি সোনাপুর বিচ এর কাছে থেকো, মনোমুগ্ধকর সুন্দর জায়গা খুব ভালো লাগবে তোমার

কেনো দিয়া তোমার বাড়ি কি থাকতে দেবে না?

সেটা নয় আমাদের খুব ছোটো ঘর তোমার অসুবিধা হতে পারে, আর জানোই তো আমার বাড়ি রক্ষণশীল কোনো ব্যাচেলর ছেলে কে থাকতে হয়তো দেবে না, কিছু মনে কোরো না

আরে না না it’s ok.

এইভাবে আরও ৩ মাস কেটে গেল, অবশেষে 10th ডিসেম্বর তারা দেখা করবে ঠিক করল, পাতি সোনাপুর বিচ টা দিয়ার খুব প্রিয় জায়গা, সিদ্ধান্ত হল সেখানে ই তারা দেখা করবে সকালে উঠে থেকে দুজনের মনে এক অদ্ভুত আনন্দ ও উত্তেজনা যেনো বহু দিনের অপেক্ষা র অবসান। দিয়া বললো মা আজ আমি রিতির বাড়ি যাবো আমার ফিরতে দেরি হবে রিতি দিয়া র ছোটো বেলা র বান্ধবী। বিদ্যালয় থেকে বেরোতে বেরোতে ৩ টে বেজে গেল সেখান থেকে টোটোতে গন্তব্যে পৌছতে আধ ঘন্টার একটু বেশি লাগবে ৪ টের সময় দীপায়ণের আসার কথা দিয়া একটু তাড়াতাড়ি সমুদ্র সৈকতে পৌছে গেল পরনে গোলাপি রঙা সালোয়ার আর সাদ দোপাট্টা ভারি মিস্টি লাগছে ওকে তাড়াতাড়ি পৌছে গেল বলে সমুদ্র সৈকতে একটু ঘুরে নিল সে, সাথে মোবাইল বার করে দু তিনটে সেলফি ও তুলে নিল, সে যে সেলফি কুইন।

ঘড়ির কাঁটা য় তখন ৪ টে ছুইছুই মনে এক অদ্ভুত উত্তফুল্ল তা দিয়া র, আনন্দে সৈকতে র এপাশ ওপাশ ঘোরাঘুরি করছে আর গুনগুন করে গান করতে থাকল। দেখতে দেখতে ৪:২০ হয়ে গেল কিন্তু কোথায় দীপায়ণ তার পাত্তাই নেই সে ভাবলো কি হল এখন ও এল না ঘুমিয়ে পড়ল নাকি না এখন ই ফোন করা ঠিক হবে না আর একটু অপেক্ষা করি এত ধৈর্য কম হলে চলে নাকি।

সমুদ্র সৈকতে র সামনে জলে পা ভেজাতে লাগলো সে। আরও কিছু টা সময় অতিবাহিত হয়েছে ৪:৪৫ বাজে, দিয়া যেন একটু মুচড়ে পড়েছে সৈকতে র পাশে বালুরাশি র উপর বসে পড়ল সে, কি হল সে কি তবে আসবে না, নিছক আমার সাথে ছলনা করছিল নাকি ওর শরীর খারাপ হল কিন্তু তবে তো জানাবে,,,, আর সে ধৈর্য রাখতে পারলো না ব্যাগ থেকে ফোন টা বার করে দীপায়ণ কে ফোন করল।

আপনি যে নাম্বার টি ডায়াল করেছেন সেটি এখন পরিষেবা সীমার বাইরে আছে দয়া করে কিছু ক্ষণ পর আবার চেস্টা করূন, এই শব্দ ভেসে এল, না ১০ বার ফোন করা সত্ত্বেও এই এক ই কথা শুনতে হল।

ঘড়ির কাঁটায় ৫ টা বেজে গেছে।পড়ন্ত বিকালের রৌদ্র সমুদ্রের ঢেউয়ের জলরাশির উপর খেলা করছে, দিয়া র মনে একরাশ মেঘ নেমে এল, সমস্ত আনন্দ চঞ্চল তা যেন কোথায় হারিয়ে গেল, কি হল দীপায়ণে র কিছুই সে বুঝতে পারছে না, মনে একরাশ প্রশ্ন নিয়ে আনমনা হয়ে উঠল সে।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance