কৃষ্ণচূড়া
কৃষ্ণচূড়া
সাগ্নিকদের বাড়ির কৃষ্ণচূড়া গাছটায় এবার প্রচুর ফুল হয়েছে। পুরো যেন লাল চাঁদোয়ায় ঢেকে দিয়েছে কেউ গাছটাকে। ফুলের ভিড়ে পাতাই চোখে পড়ে না। গাছের নীচেও গোল করে লাল বৃত্ত রচনা হয়েছে পুরো। দূর থেকে মনে হবে যেন কেউ গাছের গুঁড়িটাকে মাঝে দাঁড় করিয়ে চারপাশে রঙ দিয়ে সাজিয়েছে।
ভোরবেলা রোজ জগিং করতে বেরোয় সাগ্নিক। আজ ঘুমটা একটু তাড়াতাড়ি ভেঙে যাওয়ায় ভোর পাঁচটাতেই বেরোনোর জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে। মে মাসের মাঝামাঝি এখন, সাড়ে চারটাতেই আলো ফুটে যায়। তাই পাঁচটায় বেরোতে কোনোই অসুবিধা নেই।
ঘর থেকে বেড়িয়েই দৃশ্যটা চোখে পড়ল। অজস্র ফুলের ডালি সাজিয়ে ভোরটাকে আরও রঙিন করে সগর্বে দ
াঁড়িয়ে আছে কৃষ্ণচূড়া গাছটা। একটা অদ্ভুত পরিতৃপ্তি সবে মনটাকে সম্পৃক্ত করতে না করতেই মনে পড়ে গেল মুখটা, আর সঙ্গে সেই কথাটাও।
সাগ্নিকের একদম ছোটবেলার বন্ধু ছিল পর্ণা। কে. জি স্কুল থেকে কলেজ অবধি একসাথেই পড়াশোনা। কৃষ্ণচূড়ার চারাটা পর্ণাই ওকে উপহার দিয়েছিল, তা প্রায় চোদ্দ বছর আগের কথা, তখন ওরা ক্লাস নাইনে পড়ে সবে।
গাছের চারাটা হাতে দিয়ে পর্ণা বলেছিল, "এটার যত্ন করিস, যখন গাছটা অনেক বড় হয়ে যাবে, অনেক ফুল ফুটবে, তখন একদিন আমি রাঙা উঠোন পেরিয়ে রাঙা সাজে তোদের বাড়ি আসব"।
যত্ন আজও করে সাগ্নিক, শুধু সেই 'একদিন'টা আর এলো না কোনোদিনই, আসবেও না আর।।