The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW
The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW

Ruma Banerjee

Romance Tragedy

3  

Ruma Banerjee

Romance Tragedy

এই শ্রাবণে

এই শ্রাবণে

3 mins
67


খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, প্রায় মহামারীর আকার ধারণ করতে চলেছিল একটি অসুখ,যদিও মানুষের প্রচেষ্টায় আজ কিন্তু তা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রিত।যদিও তার ছাপ রয়ে গেছে সবার অগোচরে কারো কারো জীবনে। সেই বাস্তব ঘটনা থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েই , সেই রকম একটা গল্প দিলাম আজ... 

#এই_শ্রাবণে


  টিপ্ টিপ্ বৃষ্টি রোজ ঝরছে এইখানে

সময় হলে তাকিয়ে দেখিস তোর জন্যে

দাঁড়িয়ে আছি আজও সেইখানে ...

গাছের পাতা বেয়ে টুপ্ টুপ্ করে বৃষ্টির ফোঁটা গুলো অনিমেষের মাথায় পড়ছে,বাইকটাও ভিজছে,বৃষ্টি থেমে গেছে অনেকক্ষণ কিন্তু তার রেশ রয়ে গেছে সর্বত্র।বাতাসের এই ভেজা ভেজা গন্ধটা পেলেই অনিমেষের মন খারাপ হয়ে যায় ।সাবান, সার্ফ এইসবের এজেন্সি নেওয়া আছে অনিমেষের ,দোকানে দোকানে হোলসেল দেয় ,সারাদিন ঘুরে ঘুরে বিকেলে ফেরার সময় সে রোজ এই গাছটার নিচে দাঁড়ায় ।পরপর দুটো সিগারেট খায়। তারপর বাড়ির দিকে যায় ,ওদের গ্রাম থেকে একটু দূরে এই আমগাছ অনিমেষের বড় কাছের ,এই গাছটাকে এড়িয়ে সে কিছুতেই যেতে পারে না।অনেক ভালোলাগা অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে তার এর সাথে।

এই শ্রাবণেরই এক মেঘমাখা বিকেলে ,সেদিন যখন আমগাছের পাতা দিয়ে টুপ্ টুপ্ করে জল পড়ছিল মিতার ঈষৎ কোঁকড়ানো চুলগুলোতে আর অনিমেষ সেই চুল ,সেই চোখের দিকে তাকিয়ে হারিয়ে যাচ্ছিল, মিতা দুম করে বলেছিল ,"আমরা আর দেখা করব না এবার থেকে ।"

অনিমেষ অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল , "দিদির বাড়ি যাবে ?"

বোকার মতো প্রশ্ন করেছিল।

মিতার চোখে মুখে একরাশ অস্বস্তি নিয়ে বলেছিল

 "না।"

 গলাটা কেমন ভোঁতা লেগেছিল,অন্যদিনের মতো নয়।

"আর কোনদিন দেখা করব না ..."

"মানে? "

"দিদির পিসতুতো দেওর মুম্বাইতে থাকে ,সোনার কাজ করে ,বাবা তার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে ,তাই বলবো বলেই তোমায় ডেকেছিলাম।" মিতার গলা কেঁপে যায় ....

অনিমেষ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল মিতার দিকে ।

"অনি ...আমাকে নিয়ে পালাবে?"

"পালাবো!" 

অনিমেষ চমকে যায়। "কোথায় ?"

"যেখানে খুশি ,আমি বিয়ে করতে পারব না অন্য কাউকে।"

সদ্য কলেজ পাশ করা , বেকার, নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে অনিমেষের কাছে সেদিন কোন উত্তর ছিল না ।

মাত্র দিন দশেক পরেই মিতাদের বাড়ি থেকে সানাইয়ের আওয়াজ ভেসে এসেছিল।


দুই একজন লোক যারা পাশ দিয়ে যাচ্ছিল ,অবাক হয়ে দেখছিল অনিমেষের দিকে ।অনিমেষ ভ্রূক্ষেপ করল না .

সেবার পুজোয় মিতা এসেছিল, পাশে বর ,গায়ে প্রচুর গয়না। মিতার বর সেবার পুরো গ্রামকে খাইয়েছিল দশমীর দিনে , সারা গ্রাম ধন্য ধন্য করেছিল।

অনিমেষ অবশ্য সপ্তমীর দিন মিতাকে মন্ডপে দেখেই কলকাতা পালিয়ে গিয়েছিল, কাকার কাছে পুজো দেখার নাম করে, আসলে সে পালিয়ে গিয়েছিল মিতার মুখোমুখি হবার ভয়ে।


ফিরেছিল যখন তখন দুর্গা মায়ের সাথে মিতাও ফিরে গেছে তার বরের বাড়ি।

বোন বলেছিল ,"দাদা মিতাদি এসেছিল রে তোর সাথে দেখা করতে। তুই ছিলিস না বলে খুব দুঃখ পেয়েছে। দেখ তোর জন্য কি সুন্দর একটা জিনিস এনেছে ।"

অনিমেষ দেখেছিল একটা খুব সুন্দর মানিব্যাগ।

অনিমেষ একটা পুরনো ছেঁড়া মানিব্যাগ ব্যবহার করত সবসময়।সেদিন অনিমেষ বুঝতে পেরেছিল মিতা আসলে তাকে আজও ভোলেনি।

"দাদা, মিতাদি বলেছিল পরের বছর কিন্তু তুই আর কলকাতা যাস না। ওরা আবার পরের পুজোয় আসবে। "

কিন্তু পুজোর আগেই মিতা এসেছিল বাড়ি।রোগা কাঠ, মাথায় চুল ভীষণ কমে গেছে আর ও নানান রোগের উপসর্গ নিয়ে।

হেলথ সেন্টারের বাইরে মিতাকে দেখে চমকে গিয়েছিল সে ...

মিতার সাথে চোখাচুখি হতেই মিতা চোখ ফিরিয়ে নিয়েছিল ।সে চোখে কি ছিল অনিমেষ আজ ভেবে পায় না, ঘৃণা নাকি কান্না!

ক্লাবে গিয়ে শুনেছিল মিতার মুম্বাইবাসী বর তাকে অনেক শাড়ী ,গয়নার সঙ্গে আরো একটা উপহার দিয়েছিল মারণ রোগ এইডস।

গ্রামের সবাই মিতাদের একঘরে করে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার জন্য। সব শুনে অনিমেষ প্রায় দিশাহারা হয়ে বাড়ি ফিরেছিল। সারা রাত জেগে ঠিক করেছিল আর সে ভয় পাবে না , সেদিন যদি একটু সাহসী হতে পারতো তাহলে হয়তো আজ মিতার এই পরিণতি হতো না। কিন্তু এবার সে পিছু হটবে না যে করেই হোক মিতার পাশে সে দাঁড়াবেই ।

ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই পা বাড়িয়েছিল মিতাদের বাড়ির দিকে ...

তখনি চোখে পড়েছিল গ্রামের কিছু ছেলে ছুটে যাচ্ছে মিতাদের বাড়ির দিকে।

"কি হয়েছে রে হারু ?" একজন কে ডেকে জানতে চেয়েছিল অনিমেষ ।

"মিতাদি গ্রামের বাইরে ওই আমগাছে গলায় দড়ি দিয়েছে অনিমেষদা।"

অনিমেষের মাথাটা ঘুরে গিয়েছিল ,সে বসে পড়েছিল ধপ করে ।

অবশ্য অনিমেষ সেই প্রথম তার কথা রেখেছিল, গ্রামের কেউ যখন মিতার দাহকার্যে এগিয়ে আসেনি সে একা এগিয়ে গিয়েছিল সবার বিরুদ্ধে গিয়ে।

সেদিনও শ্রাবণ মাস ছিল ....

পকেট থেকে মিতার দেওয়া মানিব্যাগটা বের করে সে আরেক বার করে শক্ত করে ধরে , মিতার নরম হাত যেন ।

আবার বৃষ্টি আসে , অনিমেষ ভিজতে থাকে ।

আমার শ্রাবণ -বিষন্ন আকাশ মেঘলা মন

আমার শ্রাবণ- বুড়ো শালিখ ভিজছে একা সারাক্ষণ ...



Rate this content
Log in

More bengali story from Ruma Banerjee

Similar bengali story from Romance