Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!
Unmask a web of secrets & mystery with our new release, "The Heel" which stands at 7th place on Amazon's Hot new Releases! Grab your copy NOW!

Soumya Barua

Drama

3  

Soumya Barua

Drama

ভালোবাসার জেনেসিস্

ভালোবাসার জেনেসিস্

2 mins
10.8K


সিটি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর আমার প্রথম কাজ হয়েছিল কলেজের আওতায় টিউশানের জন্যে ভালো একখানি শিক্ষক সন্ধান করা। অনার্স পড়ব, অথচ টিউশান নেব না তা তো আর হয় না! এবং খোঁজ খবর নেওয়ার পর বারংবার যে নামটি কানে ভেসে এসেছিল তিনি এক এবং অদ্বিতীয় কৌশিক মিত্র ওরফে কে.এম স্যার।

হাতিবাগান পাঁচমাথার মোড় থেকে ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে পড়ে সিকদার বাগান স্ট্রিট। সেখানেই একটি তস্য গলির ভিতর 'পানু হাউস' ভাড়া করে চলে কে.এম স্যারের কোচিং ক্লাস। স্কটিশ থেকে সুরেন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগর থেকে বেথুন কলেজ, এহেন কোনও জুওলজির ছাত্র-ছাত্রী নেই যে কে.এম স্যারের সম্বন্ধে অবগত নয়। স্যারের স্টারডমটা'ও তখন ছিল দেখবার মতন। গায়ের রঙ ফর্সা, তাতে হিরো ফিগার চলন বলন, ছ'ফুটের কাছাকাছি হাইট! জুলপিহীন হেয়ার স্টাইলে চুলের রঙ কখনও অফ-রেড কখনও আবার গোল্ডেন! "তেরে নাম" স্টাইলে মাঝ বরাবর কাটা চুলের সিতি ও পরনে দামি-দামি ডিজাইনার ব্র্যান্ডেড সব জামাকাপড়।

তা দেখে, কিছু মেয়েরা আগাগোড়াই অল্পবিস্তর উন্মাদ ছিল স্যারের প্রতি। গতবছর উল্লাসে নাঁচবার সময় স্যার যখন 'রং দে তু মোহে গেরুয়া' বলে উর্ধ গগনে হাত উুঁচিয়েছিলেন তখন দর্শকাসনে বসা ঝিঙ্কু মামণী'দের উৎসাহ ছিল দেখবার মতন!

সোম-শুক্র করে কে.এম স্যার আমাদের ক্লাস নিতেন। কলেজ ছুটির পর তাই আদিত্য, সৌরভ আর আমি মিলে ঠনঠনিয়া থেকে কখনও ট্রাম কখনও আবার হেটে যেতাম শ্যামবাজার, কে.এম স্যারের কাছে। সে পথে যেতে গিয়ে রাস্তার আশেপাশে যতগুলি তেলেভাজার দোকান পড়ত সবকটি-তে আঙুল দেখিয়ে সৌরভের একটাই কথা, 'ভাই খাওয়া'...

ছল্-ছল্ চোখে, ঘাঁড় একদিক কার্নিক মেরে সেসব সৌরভের যত্ত ইমোশনাল শক্তিশেল! করুন সে কাকুতি মিনতির ফাঁদে পা দিয়ে প্রায়ই আমার ও আদিত্যের পকেট কাটা যেত। সৌরভের সিন্দুকে যে একেবারেই পয়সা থাকত না, তা নয়। অবশ্য নিজে 'খাওয়ার' থাকত, আমাদের 'খাওয়াবার' থাকত না। কিন্তু সে পকেট কাটায় আমাদের কোনও দুঃখ ছিল না। কখনও সিঙাড়া, কখনও আবার ভেজিটেবল চপের ঠোঙা হাতে আমরা যখন হেঁদুয়া পেরুতাম তখন স্পষ্ট দেখতাম দিগন্তের দোড়গোড়ায় শ্বাস ফেলছে এক অলস বিকালবেলা।

স্কটিশের অর্নব, সমুদ্র, রনিত ডি রোজারিও, অভীক। আশুতোষের আকাশ, বিদ্যাসাগরের সোহম। ঊষা, কৌশানী, সায়নী, দেবাঞ্জন ও তার বান্ধবী রিদ্বি, রুসতি (বিদ্যা মা), মৌমিতা সিল, অস্মিতা নাগ সহ ছিল আরও কত্ত বন্ধুবান্ধব! অবশ্যি আমরা যে খুব গলায়-গলায় বন্ধু ছিলুম তাও নয়। তবে এই নামগুলি বোধহয় চিরজীবন মনে রয়ে যাবে।

এরাম কিছু টুকরো স্মৃতি দিয়েই সাঁজানো আমার তিন বছরের কলেজ জীবন। তাতে সিকদার বাগানের দু্র্গাপুজো রয়েছে, রয়েছে পানু হাউস, আছে হাতিবাগান মোড়, আছেন কৌশিক মিত্রও। শুধু টিউশান শেষে জেরক্স দোকানের ধারে আমাদের লম্বা লাইনটুকু নেই, নেই খুচরো নিয়ে কোনওরকম বচসা, ব্যাচ শুরুর পুর্বে আমাদের আড্ডা।

নেই ভালোবাসার সেই 'জেনেসিস্'...


Rate this content
Log in