" বেহায়া দিবসের সংলাপ "
" বেহায়া দিবসের সংলাপ "
অমর একুশে বইমেলা তথা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাগানে একটি বেঞ্চিতে বসে বসে বই পড়ছি বেখেয়ালে, মাঝে মাঝে সিগারেট ফুঁকছি, ফোনে নজর দিচ্ছি, কখনো কখনো চোখ পড়ছে তাগরা কিশোর কিশোরীর অশ্লীলতায়, কখনো কখনো তারাও খেয়াল করছে বেশ আমার অসহায় দৃষ্টিভঙ্গি। এতকিছুর ভীড়ে একজন কিশোর এবং একজন কিশোরী কোথাও জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছে বেশ অনেক্ক্ষণ। আমি খেয়াল করি নি। খানিকক্ষণ পরে ঐ কিশোর এসে বললো, " ভাইয়া, আসসালামু আলাইকুম। একটা কথা বলতাম!
আমি : ওয়ালাইকুম আসসালাম, জ্বি বলুন।
কিশোর : ভাইয়া... আসলে...
আমি : কি বলবেন, বলুন। সমস্যা নাই।
কিশোর : আপনি যদি কিছু মনে না করতেন, তাহলে আমরা একটু বসতাম। অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি ভাই....
আমি : ওহ আচ্ছা। আমরা বলতে... কে কে?
কিশোর : আমি এবং আমার জিএফ ( লজ্জিত কন্ঠে)
আমি : ওহ আচ্ছা! নিশ্চয়ই ( ভাবলাম সবাই যখন অশ্লীলতার চরম পর্যায়ে চলে গেছে, এঁরাই বা বাদ থাকবে কেন! আমি ডিস্টার্ব না করে, জায়গা ছেড়ে দিই, এটাই ভালো)
আমি জায়গা ত্যাগ করার জন্য জুতোর ফিতা বাধছি ঐসময় ঐ কিশোর আমার পাশে রাখা বইটি লক্ষ করে বললো..
কিশোর : তিলে তিলে নি:শেষ হই... শহীদুল্লাহ্ আনসারী ( গুনগুন করে)
আমি : বই পড়া হয়?
কিশোর : কম কম ভাই কিন্তু ওনার ( তার জিএফ) ব্যাপক আগ্রহ, এসবের প্রতি, বই পাগল...!
কিশোরী : মুচকি মুচকি হাসছে...
কিশোর : ভাইয়া, ডিস্টার্ব করলাম আপনাকে!
আমি : আরেহ সমস্যা নাই,, অনেক সময় ধরে বসে আছি আমি, তোমরা বস।
এতক্ষণে আমার জুতোর ফিতা বাঁধা শেষ পর্যায়ে
কিশোর : জুতোর ফিতা বাঁধতে অনেক সময় লাগে, আমি এটা এখনো পারি না... ( হাসতে হাসতে )
আমি : তা তো একটু লাগে
আমার জুতোর ফিতা বাঁধা শেষ, চলে আসতে আসতে মুখে অসহায়ত্ব লুকিয়ে হাসতে হাসতে বললাম " Take Your Time "
কিশোর : অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া
আমি : হুম,, বইমেলায় ২৮০ নং স্টলে দাওয়াত রইল চায়ের তোমাদের।
কিশোর : নিশ্চয়ই আসবো ভাই, ধন্যবাদ ভাই, ধন্যবাদ
ঐদিকে কিশোরী হাসছে তো হাসছেই।
আসতে আসতে হাসির কারণ খোঁজার চেষ্টা করলাম অনেকক্ষণ কিন্তু অশ্লীলতা ছাড়া তেমন কোনো কারণ খোঁজে পেলাম না।
এভাবেই বিরামহীন চলছে অশ্লীলতা, ভালোবাসার নামে নষ্টামি। কোথায় যেন পড়েছিলাম, মেয়ের কাপড়ের জোগান দিতে ব্যস্ত থাকে বাবা আর ভালোবাসার প্রমাণ দিতে কাপড় খুলতে ব্যস্ত মেয়ে। ছেলেদের ক্ষেত্রে বাবা খেটে ম*রে ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্য আর ছেলে ব্যস্ত অশ্লীল উচ্চাকাঙ্খার জন্য। আহা ১৪ ই ফেব্রুয়ারী, আহা ভালোবাসা দিবস!

