বন-মুনিয়া
বন-মুনিয়া
চুরুলিয়ার দুখু মিঁঞা
এসেছিলো বন-মুনিয়া
হঠাৎ যেন কালের ডাকে
বাংলা মায়ের দুখের কাঁখে,
দুখ যেন তার অলঙ্কার
পদে পদেই বাড়ায় ধার,
হার মানে না দুঃখু মিঁঞা
বাংলাভাষার বন-মুনিয়া।
লেটো আলকাপের গানে
মাতালো সে সকল প্রাণে--
ছোট্ট থেকে বিবাগী মন
খুঁজে বেড়ায় গ্রাসাচ্ছাদন
বিজয় ক'রে দুঃখ দৈন্য
একদিন সে হলো সৈন্য,
হৃদয়-মন বিদ্রোহী তার
খোঁজ দিলো এক নতুন দিশার---
এবার যখন ধরলো কলম
ছুটিয়ে দিলো সরকারি দম
কবিতা গানে দেশ দুনিয়া
কাঁপিয়ে তোলে দুখু মিঁঞা,
কেঁপে উঠলো ব্রিটিশ-রাজ ---
গারদ করো ওর মেজাজ,
কিছুই তার পরোয়া নাই---
কাণ্ডারী সে,পেটোয়া থোড়াই !
বিচিত্র তার সঙ্গীত-জ্
ঞান
মাতায় দেশ মাতায় ধ্যান,
কবিতাতেও সমান দ্রোহ
বিস্ময়কর, ওহো, ওহো !
ধুমকেতু সে অগ্নিবীণা
সঁপলো সব খুন-পসীনা
উড়িয়ে গেলো জয়ধ্বজা
কবিতা-গানের দিল-দরোজা!
হঠাৎ সেই প্রলয়-পাখি
ঝড়ের মাঝেই থামলো নাকি ?
হয়তো তাই, হয়তো নয়---
কালের কোলে কী বিস্ময় !
দাঁড়িয়ে গেলো কণ্ঠ তার
চারিয়ে গেলো লেখনী-ধার,
স্তব্ধ হলো বন-মুনিয়া
বাংলাভাষার দুখু মিঁঞা !
কাঁদলো দেশ কাঁদলো ভাষা
কাঁদলো উৎপীড়িতের আশা---
ভালোবাসা ভাঙলো না
ভাঙলো দেশ, বাংলা না।
বনমুনিয়া , কি নজরুল -----
বাংলা ভাষার সে বুলবুল
দীর্ঘজীবী হবেই হবে
জগতে তার গানস্তবে !!