আমি রসিলা বলছি...
আমি রসিলা বলছি...
আমি রসিলা...
হ্যাঁ ঠিকই ধরেছো,
ওই যে, সোনাগাছির পারুল, বকুল, মিতা...
আমি ওদেরই একজন।
তবে আজ আমি রসিলা...
আমার আসল নাম-পরিচয় তলিয়ে গেছে,
তলিয়ে গেছে একটাই নামের ভারে...বেশ্যা।
জানতে চেওনা আমার পরিচয়-
শরী্র কিনতে এসেছ, শরী্র কেনো,
জানতে চেওনা কে আমি, কোথাকার আমি।
তোমাদের ধারণায় –
সরু সরু গলি,
আধা অন্ধকার কুয়োর মতো ঘর,
মাছি ভনভন আঁশটে গন্ধ,
তক্তপোষের উপর আধময়লা চাদর বালিশ।
নিজেকে কোনোরকমে আভ্রিত করে
তারই দরজায় ঠেশ দিয়ে,
তোমাদের কথায় খদ্দের’এর প্রতীক্ষায়।
আজ এটাইতো আমার জীবন।
সাহিত্যে “দেহপসারিণী”,
ইংরেজীতে “প্রস্টিটিউট”,
আর চলতি কথায় “বেশ্যা”-
এভাবেই তো গালি দাও আমাদেরকে।
বেশ্যা-পল্লীর ঘর-আঙিনায় প্রেমের বাসর বসে প্রতিক্ষণে,
শরীরী প্রেম কিনতেই লোক আসে এখানে,
বিক্রি হয় যৌন আবেদন।
অহরহ আমাকে হতে হয় অপরিচিত পুরুষের অঙ্কশায়িনী।
ভেবে দেখেছ কি কখনো-
তথাকথিত সভ্যসম্প্রদায়ের পাশব কামনা-লালসাকে
নীলকণ্ঠ সহিষ্ণুতায় নিজের শরীরে ধারণ করে যারা,
কেন করছে পয়সার বিনিময়ে এই কাজ তারা,
কাদের প্ররোচনায় বাধ্য হয়ে এই কাজে লিপ্ত হয় তারা।
জানতে চাওনি...,
বুঝতে চাওনি কখনো।
শুধু তুচ্ছ করেছ, ঘৃণা করেছ,
ভোগ করেছ, নষ্ট করেছ,
বেশ্যা আর পতিতা বলে গালাগালি করেছ।
আমি রসিলা বলছি-
শরীর বেচে খাই তো কি হয়েছে?
বেঁচে আছি, এটাই কি বড় কথা নয়?