STORYMIRROR

Marzia Razim Neha

Drama Fantasy Thriller

3  

Marzia Razim Neha

Drama Fantasy Thriller

তুমিই সে

তুমিই সে

4 mins
150


 বহু বছর পুরনো রাজপ্রাসাদের মত বাড়ি, যেখানে এখন প্রায় মানুষ ঘুরতে আসে দেখেই বুঝা যায় অনেক বছরের পুরানো তেমনি এই প্রাসাদের সাথে জড়িয়ে আছে বহু বছরের পুরনো অনেক ইতিহাস। পুরনো হলেও বেশ সুন্দরভাবে সাজানো প্রাসাদটি। প্রাসাদের বাইরে খুব সুন্দর করে কারুকাজ করে লিখা "কূয়োপ্রাসাদ"।যা এক ইতিহাস উপর ভিত্তি করে গড়া।


হঠাৎ প্রাসাদের সামনে একটি কালো রঙের গাড়ি এসে থামল এবং গাড়ির ভিতর থেকে বেরিয়ে এলো একটি মেয়ে,কালো রঙের জিন্স সাথে সাদা কালারের টপ পড়া, চুলগুলো ছাড়া এবং চোখে সানগ্লাস মুখে কোনো রকম হাসি নেই। সে বের হতেই একটি লোক এসে বললো ম্যাম আসুন আমার সাথে আপনার রুমে এখানে । রূমে গিয়ে মেয়েটি কোন রকম কথা ছাড়া হাত দিয়ে ইশারা করে লোকটিকে বুঝালো তুমি চলে যাও। লোকটি'ও চলে গেল।

মেয়েটির নাম আহানা খাঁন। বয়স ২১।বাবা আসিম খানের কলিজার টুকরা।মেয়ে যা চায় ,তার বাবা তাই এনে দেয় কিন্তু অন্যায় নিয়ে কোনো প্রশ্রয় অহনা পায়নি তার বাবার থেকে। মা মরা মেয়ে তাই বাবা একটু বেশি আদর করে। আহানা ও তার বাবাকে সমান ভালোবাসে কয়েকদিন ধরে মেয়ের মন খারাপ দেখে আসিম সাহেব মেয়েকে বন্ধুদের সাথে এই রাজবাড়ী ঘুরতে পাঠালেন, যেহেতু মেয়ে এইসব পুরানো জায়গায় ঘুরতে পছন্দ করে।



আহানা এখানে আসার পর থেকেই মনে হচ্ছে ওর কোনো একটা কিছু আছে এখানে,যা ওকে টানছে গভীর ভাবে টানছে। আপাতত এসব চিন্তা সাইডে রেখে আহানা আলমারি খুলল সাথে সাথে একটা ডাইরি মাটিতে পরল, বহু বছরের পুরনো উপরের মলাটটা কেমন ছিড়ে ছিড়ে গিয়েছে অনেক ধুলোবালি পড়ে রয়েছে এবং আহানা সেটা হাতে নিল নিল এই সময় ওর বান্ধবী সাবা ওকে ডাক দিল রাতের খাবার খাওয়ার জন্য এবং ও ডায়রিটা টেবিলের উপর রেখে চলে গেল। খাওয়ার টেবিলে জানতে পারল এদিকে আরো একটি দল ঘুরতে এসেছে তারা অপরপাশের রুমগুলোতে রয়েছে।



রাতে খাওয়ার পর আহানা ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় বসলো সাথে সাথে ওর চোখ গেল টেবিলের উপর রাখা ডায়েরিটার দিকে এবং আহানার কৌতুহলী মন ওকে বারবার বলছে যে ডাইরিটা দেখ ঠিক সেই মতো আহানাও ডায়েরীটা হাতে নিয়ে দেখতে লাগলো প্রথম পাতা উল্টাতেই দেখা গেল, একটি রাজপ্রাসাদের ছবি যে রাজপ্রাসাদে ওরা এখন আছে সেই রাজপ্রাসাদের ছবি।আহানা একদম চমকে উঠলো না যেন ও যানতো যে এখানে এই ছবিটাই থাকবে। পরের পাতা উল্টাতেই দেখতে পেল কিছু লিখা আছে পুরোপুরি ভাবে বুঝা না গেলেও বেশ খানিকটা লেখা বুঝা যায়। আহানা ও বেশ কৌতূহল নিয়েই পড়তে শুরু করল।


গল্পটা ছিল এইরকম,


এই গ্রামে একজন জমিদার ছিলেন,যে ছিল এ প্রাসাদের মালিক, যথেষ্ট ভালো এবং সুশীল ছিল। কিন্তু নিজের মান সম্মান নিয়ে উনি খুবই যত্নবান ছিলেন, হাজারো মানুষের উপকার করলেও নিজের মান সম্মান নিয়ে উনি খুবই কঠোর ছিলেন।তার এক ছেলে আরুস ও এক মেয়ে আয়রা এবং স্ত্রী নিয়ে তার দিন।ভালোই যাচ্ছিল। মেয়েকে অতিরিক্ত আদর করত, মেয়েকে কোন কাজে বাধা দিত নাহ। কিন্তু তার মেয়ে আয়রা প্রেমে পড়ে যায় ঐ গ্রামেরই এক সাধারণ ছেলে হৃদ এর ।কিন্তু তাদের এই ভালোবাসার দিন বেশি দূর এগোতে পারল না।তার আগেই ধরা পড়ে গেল আয়রার বড় ভাই আরুসের কাছে।আরুস ওহ যথারিতি তার বাবাকে সব বলে দেয়। জমিদার সাহেব ও ছেলের কথা শুনে ঠিক থাকতে পারলো না তিনি ঠিক করলেন আয়রার বিয়ে পাশের গ্রামের জমিদারের ছেলে নিহালের সাথে দিয়ে দিবে। আর যাই হোক গ্রামের কোন সাধারন ছেলের সাথে জমিদার সাহেবের মেয়ের বিয়ে তো আর দেওয়া যাবে না,তাই জমিদার সাহেব নিজের মান সম্মানের কথা ভেবে এ বিয়ে পাকা করে ফেললেন। এদিকে আয়রা - হৃদ  দুজনেই দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল তারপর তারা ঠিক করল পালিয়ে বিয়ে করবে। যথারীতি আয়রার বিয়ের আগের দিন তারা পালালো কিন্তু কপাল খারাপ বলে তারা আবার ধরা পড়ে গেল আরুশের এর হাতে। এবার ওরা হৃদ কে মেরে ঐদিকে ফেলে চলে গেল।


পরের দিন বিয়ের আসর থেকে আয়রা পালালো,এবার আর জমিদার সাহেব মেয়েকে আটকালো না,আয়রা বউ সাজে দৌড়ে গেল সেই কূয়োর পারে যেখানে ওদের প্রথম দেখা,আলাপ এবং ঐ কূয়োর সামনেই ওরা সবসময় দেখা করতো।সেই কূয়ো টি ছিল এই জমিদার বাড়ির পেছনের দিকে, পেছনের দিকে হওয়ায় এই জায়গাটা সব সময় নীরব থাকত তাই ওরা দুইজন লুকিয়ে লুকিয়ে এখানে দেখা করতো। কূয়োটি ছিল মাটির ভিতরে খোদাই করা।



গিয়ে দেখতে পেল হৃদ ঐ দিকে আগে থেকে দাঁড়ানো এবং আয়রা গিয়ে ওকে সামনে থেকে জড়িয়ে ধরল। হঠাৎ এমন হওয়াই হৃদ চমকে উঠলো। এবং পরে হৃদ ও আয়রাকে জড়িয়ে ধরল হঠাৎ করে দুটি গুলির আওয়াজ হলো এবং মুহূর্তের মধ্যে রক্তের বন্যা বইয়ে গেল।আয়রা হৃদের দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখল গুলি করা ব্যাক্তি টি তার নিজেরই বাবা সাথেই তার ভাই ও নিহাল এবং নিহালের বাবা দাঁড়িয়ে আছে।আর কিছু দেখার আগেই ওদের চোখ ঝাপসা হয়ে এলো , এবং একে অপরকে বলল "আবার দেখা হবে,ফিরে আসবো পূর্ণতা পেতে" দুজনেই একসাথে কূয়োতে পরে গেল।



ব্যাস এটুকুই লিখা ছিল। তারপর কয়েকটি সাদা পৃষ্ঠা রয়েছে, তারপর একেবারে শেষের পাতায় লিখা রয়েছে ""তোমারা আবার মিলিত হবে, যেখানে থেকে শুরু হয়েছিল, যেখানে শেষ হয়েছিল,ওখান থেকেই আবার শুরু হবে""।



To be continued...........




Rate this content
Log in

More bengali story from Marzia Razim Neha

Similar bengali story from Drama