শেষ নিদ্রা
শেষ নিদ্রা
হঠাৎ সম্বিৎ ফিরে পেলো বাবলি ...
উঠে বসলো তারপর স্বভাব মতোই চার্জ থেকে ফোন খুলতে গিয়ে দেখল শরীরটা কি অদ্ভুত হালকা লাগছে ।। যেন পা দুটো মাটিতে ঠেকছে না...
মাথা ব্যাথা করছিলো মনে আছে তার!
চোখ দুটো ফুলে গেছে। হ্যাঁ কাঁদছিলো সে কি যেন একটা কারণে...
বুকের ধুকপুকটা কি হচ্ছে না নাকি??কেমন যেন লাগছে ।।
হাতটা যন্ত্রনা করছিল খুব...কই এখন তো করছে না!!!
ঘুম ভাঙলেই সারাদিন কি কি করবে মনে করে নিতো সে আজ আর মনে পড়ছে না কেন?
দিন না রাত এখন??
ঘরটা এত স্যাঁতস্যাঁতে কেন? কে জানে?
একটু মুখটা ধোবে বলে ওয়াশরুমে যেতেই ।। আলতো একটা টোকা পড়লো কাঁধে ।। পেছন ঘুরে অবাক
"পাপন তুই?? কখন এলি?দরজা খোলা নাকি?আমি তো জানি না দেখলামও না তোকে আস্তে !! মা বাবা দেখেনি তো তোকে? বিয়ের দুদিনদিন আগে এইভাবে এসেছিস দেখলে মা খুব রাগ করবে রে !" এক নিঃশ্বাসে বলে থামলো ...
দুমদুম করে দরজায় বাড়ি পড়ছে।। "সর তুই ।। চুপচাপ বাথরুমে থাকবি ।। এইভাবে বাপি দরজা ধাকাচ্ছে কেন কি জানি ।।। ভেঙেই তো যাবে" বলে যেতে গিয়েও যেতে দিলো না পাপন ।।
আরো দুবার শব্দ হয়ে সত্যি ছিটকিনিটা ভেঙে গেল ।।।
মা-বাবা-চ্যাটার্জি আঙ্কেল ছুটতে ছ
ুটতে ঘরে ঢুকে চিৎকার করে উঠলো ।।।
বাবলির এখনো বুঝতে পারলো না।। কি হয়েছে !!
সে পাপনকে সরিয়ে ছুটলো মা বাবার কাছে ।।
বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখলো তার শরীরটা ঘুমোচ্ছে ...নাকি মরে গেছে??
মনে পড়ছে আস্তে আস্তে সব ... অসহায় লাগছে এবার ...
একবুক কষ্ট নিয়ে পাপন এসে দাঁড়ালো পাশে ।। মা বাবা কেউ দেখতে পারছে না বাবলিকে ...
পাপন হাতটা শক্ত করে ধরে বলল
"পাগলী এইভাবে তুই আমার কাছে চলে আসবি সব ছেড়ে আমি ভাবতে পারি নি ...দেখতো তোর মা-বাবার কত কষ্ট হচ্ছে।।। এরকম কেন করলি !! দুদিন পর বিয়েটা না হলেও আমি তো তোর পাশেই থাকতাম ...পাগলী আমার এখন আর এখানে দাঁড়াস না!!এরপর যা কিছু হবে দেখতে পারবি না রে ...চল.. " ...বাবলি "চল যাই"...
মার্চের দশ তারিখে বিয়ে ছিল ওদের ।। লাস্টমিনিট শপিং করতে বেরিয়েছিল পাপন আর পাপনের বন্ধু ...
পেছন থেকে একটা ট্রাক এসে জোরে পিষে দিয়েছিল পাপনকে ...আর পাপনের বন্ধু গুরুতর জখম হয়েছিল ...
খবরটা আসে বাবলির কাছে রাত এগারোটা নাগাদ ।। দরজা বন্ধ করে ঠাকুমার ঘর থেকে ঘুমের ওষুধ নিয়ে এক মুঠো মুখে চালান করেছিল !!!
তারপর শুধু ঘুমিয়েছে বাবলি।।।