প্রতীক্ষা
প্রতীক্ষা
প্রচণ্ড বৃষ্টি আসবে এক্ষুনি । রাত ও অনেক টা হয়ে গেছে । আজ আবার স্ট্রাইক ছিল , গাড়ির অবস্থাও সকাল থেকে ওই নমঃ নমঃ আর কি ! কি করে যে বাড়ি যাবো , কে জানে ! একে তো রাত ও হয়েছে তার ওপর আবার এই বাদল দিন , কেউ ই আসবে না কল করে ডাকলেও । আর সে বৃথা চেষ্টা করে লাভ ও নাই , আর আমি কোনও কেউকেটা ও নই যে বললেই রথ নিয়ে কেউ না কেউ হাজির হবে আমার জন্য ! আবার যদিও বা আসে তার পিছনে যা খরচ করতে হবে আমার এক সপ্তাহের হাত খরচ চলে যাবে ! যা হবার হবে , দেখা যাক শেষ পর্যন্ত । চা এর দোকান টাও ঝাঁপ বন্ধ করে দিলো , অর্থাৎ আমি একা হয়ে গেলাম বাস স্টপ টায় । এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে নিয়েছি , কিছু ব্যবস্থা না হলে ওই প্রতিক্ষালয়ে সারা রাত কাটিয়ে দিতে পারবো , সঙ্গে সিগারেট থাকলে ! যাই হোক চা ওয়ালা কে শুভ রাত্রি জানিয়ে এক কাপ চা হাতে , আর একটা সিগারেট ধরিয়ে বড় বড় পা ফেলে প্রতিক্ষালয় টায় ঢুকলাম ! ঝমঝম করে ভালোই বৃষ্টি নামলো । সেই সঙ্গে বিদ্যুতের ঝলকানি আর মেঘের গর্জন ! হুটোপাটি করে চা খেতে গিয়ে হালকা করে জিভ পুড়িয়ে ফেললাম , তারপর কাপ টা ছুঁড়ে ফেলতে গিয়ে দেখি আমার আগেই একজন মহিলা প্রতিক্ষালয়ে প্রতীক্ষা করছেন ! যাই হোক , কে ওতো সব আমার দেখার দরকার নাই , আমি এমনি তেই বিদ্যুৎ বাজ এসবে ভীষন ভয় পাই , তাড়াতাড়ি করে মোবাইল টা বের করে সুইচ অফ করে দিলাম । এতো ঝাপটা দিচ্ছে যে বাইরের দিকে মুখ করে তাকানোই যাচ্ছে না । বিদ্যুতের ঝলকানির নীলচে আভায় মহিলা টা কে মাঝে মধ্যে দেখতে পাচ্ছি । দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও মহিলা টি আমার সঙ্গে কথা বলেনি , আর আমি ও না । একটু আগে পর্যন্ত ভাবছিলাম যাক কেউ তো একজন আছে , এখন মহিলা টি আছে বলে ভয় পাচ্ছি ! মহিলা তে আমার এলার্জি সেই গোড়া থেকেই , এলার্জি মানে এই নয় যে আমি নারী বিদ্বেষী ! একদমই নয় সেটা , আসলে আমি ওদের সঙ্গে খুব একটা কমফোর্টেবল না ! বিশেষ করে কেউ যদি আবার একটু সুন্দরী হয় , তাহলে তো হয়েই গেলো , আমি তার ধারে কাছেই যাবো না আর ! যদি বলো কেনো , তার ও উত্তর আমি দিতে পারবো না । আর যদি এটাও বলো যে আমার হিম্মত নাই কিংবা আমার পৌরষত্ব নিয়ে সন্দেহ করলেও আমার কিছু বলার নাই ! আমি পারি না ভাই এটা কখনও । যাক এসব বাদ দিই এখন , যা এক নাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছে , মনে হচ্ছে এখানেই আজ রাত্রি যাপন করতে হবে ! --- "হ্যালো ! " এই এতক্ষন পর মহিলার গলা শুনতে পেলাম , বোধ হয় ফোন করছে কাউকে ! --- "হ্যালো !" এতো বৃষ্টি তে কেনো যে ফোন করে হ্যালো হ্যালো করে সবাই কে জানে ! শুনতেও পাবে না , নেটওয়ার্ক এর অবস্থাও খারাপ থাকে এই সময় । আর সব থেকে বড় কথা মেঘ ডাকছে , বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে । --- " এই যে আপনাকে বলছি , আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন ?" আমি মুখ ঘুরিয়ে তাকালাম , এতো কাছ থেকে বলছে ,মনে হলো যেন আমাকে বলছে ! সত্যিই আমাকে বলছে , আর আমি কিনা ভাবছি ফোন করছে ! --- " আমাকে বলছেন , স্যরি আমি ভাবলাম আপনি ফোন করছেন ! " অন্ধকারে কেউ কাউকে ঠিক মত দেখতে পাচ্ছি না , তবু মনে হলো মহিলা টি অসহায় বোধ করছে । --- " না ফোন করছি না , আপনাকেই বলছি ।" --- " হা , বলুন " --- " আপনার ফোন টা একবার দেবেন , একটা কল করতাম !" এই মরেছে ! এসব মোবাইল চাওয়া ফোন করা , এতো রাত , এই বৃষ্টি , আমাকে ভয় পেতে বাধ্য করছে । আমার চোখে মেয়েরা এমনি ই বিপদ ডেকে আনে , আর এখনকার যুগে কাউকে তো বিশ্বাস ই করা যায় না ! এক্ষুনি হয়তো মোবাইল দেবো , তারপর বলে বসবে ওটা হয়তো ওর ই মোবাইল , কিংবা ব্ল্যাকমেল করে ঘুরিয়ে আমাকেই ফাঁসিয়ে আমার কাছে কিছু দাবি করে বসে ! এ এক মহা যন্ত্রণায় পড়লাম । বললাম , " এখন ফোন করতে হবে না , একটু পরে করবেন , যা বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আর মেঘ ডাকছে !" সম্মতি আছে বুঝতে পেরে বললো , " আরে মশাই কিছু হবে না এতে , একবার দিন একটা কল করেই দিয়ে দেবো !" এতো বেশ ঝামেলায় পড়লাম , ভালো কথা বললেও শোনে না । --" কিন্তু বিপদ হতে কতক্ষন বলুন ! " --- " যা অবস্থায় আছি এটা আর কি কম বিপদ বলুন , একে তো রাত হয়ে গেছে , এর পর দেরি হলে বাড়ি যাওয়াই হবে না আর ! " হু এটাও যুক্তিসঙ্গত কথা ! অগত্যা , বের করলাম মোবাইল । সুইচ টা অন করতে করতে মনে মনে বললাম , " ঠাকুর এই বিদ্যুৎ আর এই মেয়ে , কারোর থেকেই কোনও বিপদ না আসে আমার কাছে , রক্ষা করো !" মোবাইল টা দিলাম মহিলার হাতে , আর অন্য পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরালাম ! একটা অফার করবো কিনা বুঝতে পারছি না ! টেনশন এ সব গুলিয়ে যাচ্ছে , আসলে একবার একটা বয়স্ক মহিলা আমাকে যাচ্ছেতাই ভাবে ইনসাল্ট করেছিল পাশে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরিয়েছিলাম , তাকে খাবার কথা জিজ্ঞাসা করিনি বলে ! আজ হঠাৎ সেদিনের কথা মনে পড়লো ! ধুর ! উল্টোপাল্টা ভাবতে ভাবতে সিগারেট নিভে গেলো ! আবার ধরালাম ঝড় ঝাপটা বাঁচিয়ে ! বললাম , " হলো আপনার কথা , মেঘ ডাকছে সুইচ অফ করতে হবে !" মহিলা সঙ্গী গেলো আমার উপর রেগে ! বললো, " ফোন ই লাগছে না , আর আপনার ঢপের মেঘ ডাকা ! " আমি চুপ করে গেলাম , চুপ করে সিগারেট এ টান দিতে থাকলাম , দ্বিতীয়বার আর মোবাইল চাইবার নাম করলাম না । বৃষ্টির ঝাঁঝ টা মনে হয় একটু কমেছে , কিন্তু মেঘ গুরগুরানি ঠিক চলেই যাচ্ছে ।আমি আর দাঁড়াতে পারছি না , বেশ ক্লান্তি লাগছে , দেয়ালে ঠেল দিয়ে আয়েশ করে বসলাম । অনেকক্ষণ চুপ থাকার পর মহিলা টি বলে উঠলো , " আপনি কোন দিকে যাবেন ? --- পূর্ব দিকে !" আনমনা হয়ে উত্তর দিলাম । -- " আপনার কি মাথার তার টার কাটা আছে কিনা বলুন তো? " বিদ্যুতের এক বিশাল ঝলকানি তে মহিলার মুখ টি দেখতে পেলাম এই প্রথম , অবাক হয়ে অদ্ভুত ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে , বললাম " তার কাটা থাকবে কেনো ?" --- " তাহলে তখন থেকে ভুলভাল বকছেন কেনো ! " --- " ভুলভাল কই বললাম , সত্যিই পূর্বদিকে যাবো !" সে আর কোনোও কথা বললো না , মনে হয় সত্যিই বিরক্ত হয়েছে । আমিও চুপ করে গেলাম , আমি তো মজা করছিলাম , জানি এই সিচুয়েশনে কারোরই মজা পছন্দ হবে না ! আসলে আমার বাড়ি শিবপুর এ , তো এখান থেকে যেতে গেলে পূর্ব দিকেই তো যেতে হবে , সেটাই বোঝাতে চেয়েছিলাম ! কিন্তু কে বোঝে কার কথা ! আসলে ফোন টা লাগছে না বলেই রেগে গেছে আরও ! আমরা চুপ দুজনেই । হঠাৎ আমাদের নীরবতা ভাঙ্গলো আমার মোবাইল এর রিংটোন , মানে ফোন এসেছে । মহিলা টি মোবাইল এর স্ক্রীন এ চোখ মেলে তাকালো , এবারে তার মুখ টা ভালো করে দেখতে পাচ্ছি । একে তখন থেকে মহিলা ভেবে যাচ্ছি কিন্তু মহিলা বলার মত বয়স তো হয়নি এখনও , মানে আমার বয়সী হবে হয়তো ! আমাকে চুপ করে মোবাইল টা দিয়ে গেলো , আমি মোবাইল টা নিলাম , পাশে সরে গিয়ে কথা বলতে লাগলাম । মিনিট তিন চার কথা বললাম , তারপর মেয়েটির দিকে ঘুরে দেখলাম , সে আমার মত দেয়াল এ ঠেস দিয়ে পা গুটিয়ে বসে পড়েছে , সত্যিই এবার দেখে অসহায় লাগছে । আমি কাছে গিয়ে মোবাইল টা দিলাম , সে নিয়ে নিলো হাত বাড়িয়ে । ভাব টা এমন যেন ওর নিজের ফোন আমি কথা বলতে নিয়েছিলাম ! বললাম , " আরেকবার কল করে দেখুন , যদি লাগে ।" মেয়ে টি কোনও উত্তর দিলো না , শুধু মুখের দিকে তাকালো । আমি আর বিশেষ কিছু বললাম না , বৃষ্টি থেমেছে , রাস্তায় বেরিয়ে একটা সিগারেট খেয়ে আসি । রাত্রিযাপন তো ভগবান এখানেই লিখে রেখেছেন, !তাও আবার এরকম মহিলার সঙ্গে ! ভাবতেই একটা ভালো লাগা কাজ করতে লাগলো মনের ভিতর ! সিগারেট ধরালাম ভিজে রাস্তায় দাঁড়িয়ে , একটা হালকা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির ছিটা গায়ে লাগছে এখনও ! অনেক জায়গায় অনেক রাত কেটেছে এভাবে , কিন্তু আজকের দিন টার জন্য ভগবান কে আলাদা করে ধন্যবাদ দিলাম ! সিগারেট এ একটা করে সুখ টান দিচ্ছি আর প্রতিক্ষালয়ের দিকে তাকাচ্ছিলাম , একটু যেন দেখা যায় । মেয়ে টা একটু যেন রাশভারি গোছের , খুব একটা কথাও বলতে চায় না । আজ যেন আমার মধ্যে একটা কি যেন কাজ করছে , মেয়েদের জন্য এতো টা আগ্রহী কখনও হয়নি আগে ! অন্ধকার রাস্তার বুক চিরে যেন একটা আলোর ফোকাশ আসছে । নিশ্চিত এটা কোনও গাড়ি আসছে , যা হোক করে এটা কে থামাতেই হবে । আমি তাড়াতাড়ি করে মেয়ে টির কাছে গেলাম , বললাম , " কথা হয়েছে আপনার ? মোবাইল টা একবার দিন , একটা গাড়ি আসছে মনে হয় , ফ্ল্যাশ লাইট টা জ্বেলে একটা সিগন্যাল দিই যদি দাঁড় করাতে পারি । " মেয়েটি এবারেও চুপচাপ আমাকে মোবাইল টা দিয়ে দিলো । আমি আর বিলম্ব না করে মোবাইল এর ফ্ল্যাশ টা জ্বেলে রাস্তায় এলাম । রাস্তায় এসে দেখলাম একটা সত্যি ই গাড়ি আসছে , আর কাছেই এসে গেছে প্রায় । আমি উত্তেজিত হয়ে মোবাইল টা এদিক ওদিক করে নাড়াতে লাগলাম ফ্ল্যাশ আলো জ্বেলে । গাড়ি টা এসে ঠিক আমার আগে টায় থামলো , আমি তাড়াতাড়ি করে ড্রাইভারের জানালার কাছে গিয়ে বললাম , " স্যার .. কথা টা আমাকে শেষ করতে না দিয়ে ড্রাইভার নিজেই আমাকে জিজ্ঞাসা করলো , " এতো রাতে এখানে কি করছ ?" --- " বৃষ্টি তে আটকে গেছি আর গাড়িও পাচ্ছি না , একটু হেল্প করবেন , ?" ---" হা তাড়াতাড়ি উঠে এসো । " বলেই গাড়ির ভিতরের আলো গুলো জ্বেলে দিলো । --- " স্যার আমরা দুজন আছি , ... একটু দাঁড়ান স্যার প্লিজ ... ড্রাইভার মুখ বের করে বলল , " কই আরেক জন ?" -- ওই প্রতীক্ষালয়ে বসে , একজন মহিলা , স্যার প্লিজ .." ড্রাইভার অবাক হয়ে যাবার মত করে বললো , " প্রতি ক্ষালয়ে !! তাও আবার মেয়ে !?" -- " হা স্যার , একটু দাঁড়ান আমি ডেকে নিয়ে আসছি এক্ষুনি "। হঠাৎ করেই ড্রাইভার আমার হাত টা ধরে নিলো , বললো থাক আপনি ভিতরে আসুন তাড়াতাড়ি , গাড়ি তে উঠে ডেকে নিন ।" আমিও অবাক হয়ে গেলাম ওনার ব্যবহারে ! এইটুকু দু পা গেলেই হাত বাড়িয়ে তো ডাকা হয়ে যাবে , তাতেও দেরি হয়ে যাবে নাকি ! বললাম , " স্যার , খুব অসহায় , একবার ডেকে নিয়ে আসি !" -- পাগল নাকি আপনি , যেটা বলছি সেটা শুনুন না ! উঠে আসুন ভিতরে !" --- " আপনি কি বলছেন আপনি নিজে বুঝতে পারছেন ?" ড্রাইভার এবার দৃঢ়তার সঙ্গে বললো , " আমি জেনে বুঝেই বলছি , ওখানে কেউ নাই , ফালতু সময় নষ্ট করছেন আপনি !" আমি আরও অবাক হলাম , " কেউ নাই মানে ! আপনার সমস্যা টা কি বলুন স্যার , আমাকে নিতে পারছেন আর একজন কে নিতে কি প্রবলেম আপনার !" ড্রাইভার যেন আমার আকুতি বুঝতে পারলো , " যান ডেকে আনুন ! " আমি ডাকতে লাগলাম , " এই যে শুনছেন , গাড়ি পেয়েছি একটা চলে আসুন , । " গাড়ি স্টার্ট এর শব্দ পেলাম , এবাবা ছেড়ে চলে যাবে নাকি , এক মুহুর্ত আমার সন্দেহ হলো । না , গেলো না , মানে স্টার্ট দিয়ে ওয়েট করতে লাগলো আমাদের জন্য । কিন্তু একি ! প্রতিক্ষালয়ে তো কেউ নাই সত্যি ! মেয়ে টা আবার গেলো কোথায় ! আমি তো আবার বেশ ঝামেলায় পড়লাম , এই মধ্যে গেলো কোথায় ! প্রতীক্ষালয় এ উঠে দেখলাম , না পেলাম না দেখতে । এবার আমার অন্য রকম একটা ভয় লাগতে শুরু করলো । গা টা শিউরে উঠলো । হঠাৎ গাড়ির হর্ন বেজে উঠলো , আমি তো রীতিমত চমকে উঠলাম ! ওখান থেকে বেরিয়ে এসে গাড়ির কাছে এলাম , ড্রাইভার কে বললাম , " কোথায় গেলো বলুন তো এই মধ্যে ! " ড্রাইভার ইশারা করে গাড়ির ভিতরে বসতে বললো , আমি উঠে পড়লাম আর টু শব্দ টি করলাম না । গাড়ি চলতে শুরু করলো । অনেক টা পথ চলে আসার পর আমি সিগারেট ধরালাম । ড্রাইভার আমার দিকে তাকিয়ে বলল , " সপ্তাহ দুই হলো ওই প্রতিক্ষালয়ে একটা মেয়ে গ্যাং রেপ হয় আর মারা যায় ! " আমি কোনও কথা বলতে পারলাম না , শুধু এক মুখ ধোঁয়া নিয়ে ড্রাইভার এর দিকে তাকিয়ে রইলাম । --" তারপর থেকে ওই একই জায়গায় গত পরশু পর্যন্ত চারটি লোক মারা গেছে , কিন্তু কে মেরেছে কিভাবে মেরেছে পোস্টমর্টেম এও ধরা পড়েনি !" আমি সিগারেট এ টান দেয়া ভুলে গেলাম , ড্রাইভার এবার বলল , " সব থেকে আশ্চর্যের জিনিস কি জানেন , ওই চারটি লোক ই শিবপুর এর ! " ---" শিবপুর এর !! " ড্রাইভার আমার কথা কানে করলো না মনে হয় , গাড়ি চালাতে লাগলো । আমি সিগারেট টা ফেলে দিয়ে জানলা দিয়ে মুখ বের করে পিছনে রাস্তার দিকে তাকালাম , বিদ্যুতের হালকা ঝলকানি তে আমি যেনো তাকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি , ওদিকে মুখ করে কে যেনো এক মহিলা হাঁটছে । তাড়াতাড়ি মুখ ঘুরিয়ে মোবাইলের কল লগ চেক করলাম , দেখি হ্যাঁ নতুন একটা নাম্বার এ দুবার কল করা হয়েছে , যদিও আমি এই দুই ঘণ্টায় একবারও কল করিনি কাউকে , একবার শুধু রিসিভ করেছি ! তাহলে কল করলো কে !! এটাও কি সত্যি হতে পারে ! ভাবতে পারছি না কিছু , চোখ বুজে ফেললাম ! নম্বর টায় কল লাগালাম সাহস করে , কানে দিলাম ,। গোটা গায়ে আমার ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেলো , মাথার চুল খাড়া হয়ে উঠলো । ফোন তো লাগলোই না , উল্টে কেউ যেন কানের ভিতর বরফ শীতল বাতাস ঢুকিয়ে দিলো , আর ফিসফিস করে বলে উঠলো , "কোন দিকে যাবে !"
