STORYMIRROR

Menoka Das

Romance Tragedy

4  

Menoka Das

Romance Tragedy

গল্প হলেও সত্যি

গল্প হলেও সত্যি

45 mins
236

পর্ব - ১


আজকের গল্পটি গল্প হলেও সত্যি, মানে এটি কাহিনি নয়, গল্পের কাল্পনিক বলতে শুধু নাম গুলোই। এটি একটি মেয়ের জীবন কাহিনি, এটি মেঘনার কাহিনি, একটি মেয়ে

যাকে প্রতি মুহুর্ত নিজের জন্য লড়তে হয়। এই সমাজেকে মেয়েদের প্রয়োজন কিন্তু তারপর ও প্রতেয়কটি মেয়ে সে ধনী হোক বা গরীব সে Compromise করছে প্রতিনিয়ত। পাড়ার সব্জান্তা কাকীমারা তার ছেলের বিয়ের জন্য ভালো মেয়ে খোজে,আবার সেই কাকীমা ই পাড়ায় কারোর মেয়ে হলে অহংকারের সাথে বলে যে ছেলে হলে ভালো হত, বংশ বারত, সে আসল কথাটা জানেই না যে বংশ ছেলেরা না মেয়েরা বাড়ায়, নতুন প্রজন্মকে জন্ম এক মেয়েই দেয়, তাছারাও সেই মা এও ভুলে যায় যে মেয়ে নাপেলে সে তার ছেলের জন্য বউ কোথা থেকে পাবে? তার বংশ কীভাবে বাড়বে? মেয়ে হওয়ায় অতো সজা নয়,মেয়েদের একটা গুন যা মেয়েদেরই হয় তা হল সহ্য ক্ষমতা আরপ্রচুর আত্মনির্ভরতা, এই ভিত্তিতেই আজ কে আপনারা জানবেন মেঘনার কাহিনি।আসুন জেনে নিই একটা সাধারন মেয়ের অসাধারন হয়ে উঠার আর তার সাথে একটা টক,ঝাল, মিস্টি প্রেমের গ্লপ।


পর্ব - ২


প্রথম দেখা


আজ Tution পড়াতে অনেকটা দেরি হয়ে গেল, মেঘনা একবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বাড়িতে বাবাকে ফোন করে জ়ানল যে তার আস্তে দেরি হবে তারা যেন চিন্তা না করে এবং খাবার খেয়ে নেয়। ১৮ বছর বয়সি সুন্দর কিশরী মেঘনা সেন কলকাতার একটি অতি সাধারন ঘরের মেয়ে, মধ্যবিত্ত পরিবারে জনম তার। দেখতে ছিমছাম হলেও মুখশ্রি ভারি মিস্টি মেয়েটার। এখন অবস্য একটু ভাল হলেও আগে দারিদ্রতায় দিন কাটত, পড়াশনায় বরাবরই ভাল মেঘনা গানের গলায় তার জুরি মেলা ভার। মাধ্যমিক পরিক্ষার রেসাল্ট বেশ ভাল হয়ার পর ও সে আর পরতে পারল না, কারনটা ছিল তার দিদির বিয়ে, এবং তার পর তার বাবা মা ও সংসার দেখার করতব্য তার কাধে এসে পরা। পড়াশনাকে সে যে কম ভালবাসত তা না কিন্তু দিদির পর যে তাকে তার অসুস্থ বাবা মা ও সংসারকে দেখাতে হবে এই দাইত্ত সে কখনোই এরাতে পারত না। কিন্তু নিজেকে ও সে পরিস্থিতির কাছে হারতে দেয়নি বরং সংসার সাম্লানোর পাশাপাশি সে english & Computer নিয়ে চর্চায় থাকত এবং Tution ও পড়াত। জ়ীবনের যে সময় মেঘনার বয়সি মেয়েরা নিজের ভবিষ্যত গড়তে ব্যস্ত মেঘনা তখন পরিস্থিতির ও দাইত্ত র কাছে নিজেকে প্রতিমুহুরত বলিদান দিচ্ছে। সকাল ৬ টায় ঘুম থেকে ওঠাতারপর সকালের সব কাজ সেরে Computer class attand করা, (এখানে একটু বলি Computer class এর মাইনে না দিতে পারায় সে ওই Academy র Junior Student দের class নিত, তাতে তার প্রসিখন ও ভাল হত আর Computer class র মাইনে ও দিতে হত না ফলে সে অন্য Course গুল শিখতে পারত বিনামূলেয় ) তারপর রান্না করা, তারপর বাসন মাজা এবং দুপুরে একটু বিশ্রাম নিয়ে বিকেল থেকে Tution পড়াত, বারিতে ও সে পড়াতে যেত, এরপর রাতের রান্না সেরে বাবা ও মায়ের সাথে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ত, আবার সেই সকাল ৬ টায় ঘুম থেকে ওঠা। তবে রবিবার সে Computer class ও Tution থেকে ত ছার পেত কিন্তু সংসারের কাজ থেকে নিস্তার তার ছিল না। তবুও সব সময় হাসিখুসি থাকত। তবে আজ পড়াতে এসে তার অনেকটা দেরী হয়েগেছে, বাড়ীতে ফোন করার পর সে একটা অটো দেখতে পেল এবং তারাতারি তাতে উঠতে যাবে এমন সময় একজন পুরুষ কন্ঠে বলে উঠল যে অটো টি সে আগে ডেকেছে, তাই সেই বসবে, এদিকে মেঘনার খুব তারা ছিল আর এই রাস্তায় এমন সময় অটো আর সে পাবে না তা ভালই জানা মেঘনার, তাই আর দেরি না করে সে ও বলল যে সে আগে অটোতে উঠেছে তাই সেই আগে যাবে। ছেলেটি ও কম না সাথে সাথে ছেলেটি বলল না ছেলেটি ই আগে ডেকেছে তাই অটোটি দারিয়েছে আর তাই সে আগে অটোতে যাবে। এখানে মেঘনা একটু অসুবিধায় পড়ল আর কী। আপনাদের জানিয়ে দি যে ছেলেটি মেঘনার সাথে তর্কে মেতে আছে সে হল গৌড় মানে গৌড়ময় ব্যনারজ়ী বয়স ২২, দেখতে স্যম বর্ন হলে ও গৌড় এর শুসাশঠ গঠন রয়েছে, বা এক রাজ়পুত্রের থেকে কম কিছু নয়, যেমন দেখতে তেমনি মেধাবি, এ বছরে কলেজ শেস করেছে. তবে রাগির সাথে সাথে ভাল মনের মানুস ও সে, মা বাবার একটি মাত্র ছেলে, বাবার বিশাল ব্যবসা শুধু কলকাতায় নয় কলকাতার বাইরেও ব্যবসা ছড়ানো, বিলাশ বহুল বাড়ি, বিশাল সম্পত্তি থকলেও গৌড়এর মা মায়াদেবী খুবই সরল এবং সাধারন ভাবেই ছেলেকে মানুস করেছে। মামার বাড়ীতে গল্প করতে করতে দেরী হয়ে তার ও বাড়ি ফিরতে। এতক্ষনের তর্কের ফলে অটো চালক বেস রেগে গিয়ে বলল যে দেখুন রাত বারছে আর এখানে দারাতে পারবে না উঠলে উঠুন না উঠলে আমি চল্লাম। মেঘনা একটু ভেবে বলল যে তারা দুজনেই অটো শেয়ার করে যেতে পারে, গৌড় ও ভেবে বলল বেশ, তবে তাই হোক। ওরা দুজনেই অটোতে উঠে পড়ল। কলকাতার মেয়ে হলেও মেয়েটির মধ্যে যে কনো আধুনিকতার ছোয়া নেই গৌড়এর চোখ সেটা এড়াইনি, হাল্কা হলুদ রঙ্গের সালোয়ার সাথে ছোট্ট একটা টীপ আর কাজলে মেঘনাকে যে কলকাতার জিন্স-টপ পরা মেয়েদের চেয়ে অনেকগুন বাসি সুন্দরি লাগছিল তা গৌড় অনেক্ষন বাদে লক্ষ্য করল, তবে মনে মনে ইচ্ছে হলেও মেয়েটির সরল সাদা চোখের দিকে সরাসোরি চাইতেও পারিনি, তাই গৌড় সারাক্ষন চুপচাপ ছিল কিন্তু মেঘনা সবসমই বকবক করে চলেছে, মেঘনার সাথ অটো চালক বেশ ভালো করেই দিচ্ছিল প্রথমে তবে পরে এই বকবকানি সারারাস্তা গৌড় ও অটো চালককে বেশ বিরক্ত করে ফেলেছিল। অটো চালক রেগে গেলেও গৌড় মনে মনে হাসছিল কিন্ত মুখে কিছু বলেনি পাছে ওর সাথ পেয়ে যদি মেঘনা আরো ও বকবক করে এই ভেবে।এই বার নিজের বাড়ী এসে যাওয়ায় মেঘনা অটোকে থামতে বলে আর বলে যে সরি একটু কথা বলাটা আমার অভ্যাস এই কথা শেষ হতে না হতেই অটো চালক বলে ওঠে ওটা একটু না একটু বেশী, গৌড় এই বার না হেসে পারল না, মেঘনা সে অটো চালককে ভাড়া দিচ্ছিল এমন সময় গৌড় বলে যে সে ভাড়া দিয়ে দেবে, এই কথা শুনে মেঘনা বলল যে আপনি কে হন আমার যে আমার ভাড়া আপনি দেবেন? গৌড় ও বুঝতে পারল না সে কেন এ কথা বলল ? সে ত কোনদিন ও আচেনা কোন মেয়ের এই ভাবে সাহায্য করেনি তাছাড়া ও একটু আগে অবধি সে মেঘনার সাথে অটো নিয়ে রিতিমত ঝগড়া করছিল। তা হলে কী মেঘনার হাসি গৌড় এর মনে লাগল? ছেলেটা চুপ করে আছে দেখে মেঘনা বলল দেখুন আপনার সাথে অটো শেয়ার না করলে আমি অশুবিধায় পড়তাম তাই নিজের মনে কোন ভুল ধারনা না করে। এই বলে মেঘনা চলে গেল, এই দিকে গৌড় বাকি পথ শুধ মেঘনার মিস্টি হাসিটার কথাই ভাবছিল তাই বাকি পথ ও সে চুপ ছিল। হটাৎ ই তার হাতেই সে খেয়াল করল যে কিছু একটা তার হাতে বারবার ফুটছে একটি সোনার কানের সে শুধু ভাবল যে কানেরঅটো চালক এর হলে তা তক্ষ্ন এখানে পরে থাকত না। তাই কানেরটা পেকেটে পুরে ভাড়া মিটিয়ে সে বাড়ি চলে গেল।


পর্ব - ৩


সেই রাত


এ দিকে মেঘনা bathroom এ হাত মুখ ধুতে ধুতে খেয়াল করল যে তার বা কানে কানের টা নেই, এটা বুঝতেই মেঘনার মনটা ভারী হয়ে আসছিল, অনেক কস্টে Tution এর টাকা জমিয়ে কেনা কানেরটা এইভাবে সে হারাবে তা সে কনদিন ও ভাবেনি, মা খাবার বেরে ডাকছে বুঝই কোনরকমে মনকে শান্ত রেখে বাইরে বের হল অন্য কানের টাও খুলে দিল, যদি মা বুঝতে পারে নিসচই খুব বকবে। ও দিকে আমাদের গৌড় সারারাত ঘুমাতে পারিনি, শূধু চোখ বন্ধ করলেই সে ওই মেয়েটার কথাই মনে পরে, আর ভাবতে থাকে কানের দুল্টা নিশ্চই ওই মেয়েটার হবে, যদি তাই হয় তবে সে কীভাবে ফেরত দেবে তাকে, তার নাম, কোথায় থাকে কিছুই তো জানা নেই তার, এইসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পরে । এর প্রায় দুদিন পর গৌড়এর এক বন্ধুর বাড়িতে এক বিশেস কাজের জন্য আসে, এবং কাজ শেস করার পর সে বাড়ি যাওড়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে, বন্ধুর বাড়িতে থেকে বেড়িয়ে সে বড় রাস্তার দিকে বেরবে ঠিক এমন সময় সে এক পরিচিত গলা পেয়ে দাঁড়িয়ে গেল, আমদের মেঘনা রানী তখন বাড়ী থেকে বেড়িয়ে মা কে আসছি, তোমরা সাবধানে থাকবে, বলে বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল দিদির বাড়ি যাওয়ার জন্য, দিদির ছেলে হেয়েছে , বাবা মা অসুস্থ তাই সে যাচ্ছে কটা দিন দিদির সাহায্যের জন্য, প্রথমে যেতে না চাইলেও বাবা মা র বোঝানোতে আর দিদির ক্ষুদের কথা ভেবে সে রাজী হয়েছে দিদির বাড়ি কটা দিন থাকতে, গলাটা ও খুব চেনা চেনা লাগলে ভাল করে খেয়াল করে দেখল যে এই সেই অটোর মেয়েটা, মেঘনাকে না জানিয়ে সে তাকে ফলো করতে করতে বড় রাস্তার দিকে এসে পরল টাস্কি খুজতে খুজতে মেঘনা এদিক ওদিক খেয়াল করতে গিয়ে বুঝল যে একটা ছেলে তার দিকেই তাকিয়ে আছে, ছেলেটা চিন্তে পেরে ছেলেটার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল যে ‘ তুমি কি আমায় ফলো করছো? যদি করে তবে ফল ভালো হবে না এও জানায়, তবে ও পাস থেকে ছেলেটি বলে ‘ হ্যা আপনাকেই ফলো করতে করতে আমি এখান ওব্দি এসেছে’, এইবার মেঘনা একটু ঘাবরে গিয়ে বলল দেখুন ‘ আপনি যেমন মেয়ে তাকে ভাবছেন সে তেমন মেয়ে নয়,’ তাই আর আমায় বিরক্ত করবেন না’, গৌড় যে ওকে কনোমতেই বাজে ভাবতে পারেনা, সে যে তার মনে ধরেছে, মনে মনে ভাবলেও মুখে সে সুধু বলল যে সেও যেন তাকে ভুল না ভাবে, আসলে সেদিন আটোতে সে একটা কানের পেয়েছে এবং সেটা বধয়ে তারই হবে বলে কানেরটা পকেট থেকে বের করতেই মেঘনা খুসিতে আত্মহারা হয়ে কানেরটা হাত দিয়ে নিল কিন্তু মুখ দিয়ে সে কিছুই বলল না তার দু চোখ বেয়ে অস্রু বাধন ছারা হয়ে নামছে, মেঘনা চোখ মুছে ছেলেটিকে কীভাবে ধন্যবাদ দেবে বুঝতে পারছিল না, গৌড় পরিস্থিতি সামলানোর জন্য বলল যে এবার যেন সে তাকে আর ভয় না দেখায়, এইবার মেঘনা মুচকি হেসে বলল সে সত্যি তার ব্যবহারে লজ্যিত, গৌড় তার নাম জিজ্ঞেস করতে যাবে এমন সময় একটা টাস্কি এসে মেঘনার সামনে দারালো মেঘনা দেখলো টাস্কি তার জামাই বাবু আছেন আর মেঘনা কে নিয়ে জেতেই এসেছে, মেঘনা ও উঠে পড়ল টাস্কিতে। এদিকে গৌড় ও গাড়ি পেয়ে গলো বারী যাওয়ার জন্য টাস্কিতে। উঠে মেঘনা একবার কানেরটার দিকে তাকাতেই তার ছেলেটির কথা মনে পড়ে যেতেই সে চলন্ত গাড়ীর কাচ নামিয়ে পেছনে দেখতেই খেয়াল করল চেলেটি তার গাড়ীর দিকেই তাকিয়ে ছিল তখন ও।আজ ও বারী ফেরে সে সেই মেয়েটার কথাই ভাবছিল, মেয়েটা ছলছল চখে যখন গৌড়এর দিকে তাকিয়ে ছিল গৌড়এর তখন মনে হচ্ছিল মেয়েটাকে জরিয়ে তার সব কস্টকে সে মুছে ফেলবে আস্তে দেবেনা তার চখে কনো কস্টকে সে। গৌড়এর বাবার শরীরটা বেশ কয়েকদিন খারাপ তাই ওকেই বাবার কাজ সামলাতে হচ্ছে বাবার ম্যানেজার এ ব্যপারে গৌড়কে সাহায্য করছে, গৌড়এর বাবা ভেবেই নিয়েছিল যে ছেলের ওপর এবার সব ভার দিয়ে নিজে বিশ্রাম নেবে, তাই মতোই কাজ হল, গৌড় ও বাবার ব্যবসাকে রিতিমত বারিয়ে তুলছিল নিজে বুদ্ধিতে।


সে ভাবত আগে সে নিজেকে প্রমান ক্রুক তারপর সে তার ভালবাসাকে ঠিক খুজে বার করবেই,আর মেয়েটার সাথে যে ভাবে ওর বারবার দেখা হচ্ছিল তাতে সে জানত যে ভগবান ঠিক তাকে তার কাছে আবার পাঠাবে আর তখন সে তার ভালবাসাকে আর যেতে দেবে না ধরে রাখবে সারাজীবনের মত।


পর্ব - ৪

Interview


এদিকে মেঘনা ও নিজের দাইত্ত ভালো ভাবে পালন করছিল সে, সংসার দেখার পাশাপাশি একটা ভালও কাজের সন্ধান করছিল যাতে সে তার বাবা মা কে ভাল ভাবে দেখতে পারবে, কাজের লোক ও রাখতে পারবে, সবচেয়ে বড় কথা সে আবসর সময় আবার পড়াশোনা করতে পারবে, হঠাৎ মেঘনা একদিন একটা প্ত্রিকায় দেখল যে এক নামি কম্পানি বিজ্ঞাপন দিয়েছে যে তাদের Computer Oporater লাগবে, মাইনে দেখে মেঘনা অবাক হয়েগেল মাইনে পনেরো হাজার টাকা, কিন্তু সে হতাস হল যে কাজটির জন্য যা জগ্যতা ওরা চাইছে তা মেঘনার নেই, পড়াশোনা যে সে কবে ছেরেছে তাও ঠিক মনে নেই তার।


তবে কাজটি যে পেতেই হবে তাকে তাই মেঘনা Interview এর প্রস্তুতি নিতে লাগল তবে তার প্রতিবাসি রা জানতে পেরে হাসাহাসি সুরু করেদিয়েছে যে এই জগ্যতাইয় আবার অতো বড় কম্পানিতে নাকি কাজ করবে, কত জগ্যতা স্মপ্নন ছেলেদেরই কাজ হচ্ছে না ওই কম্পানিতে, তবে এইসময় কথায় মেঘনা কান দেবার মেয়েই নয় তবে তার পাসে বাবা - মা ছিল। Computer আর spoken english সে ভালোই জানে, আর তার নিজের ওপর অদাধ ভরসা আছে।


একটি আকাশি রঙ্গের সালোয়ার আর সাদা ওরনা পরেছিল, কানে সেই কানের, হাল্কা লিপ্সটিক, কাগল, ছোট্ট একটা কালো টিপ, আর কাধে ব্যাগ, চুল হাল্কা ভিজে বলে সে একটা ক্লিপ দিয়ে বেধেছিল, অপরুপ লাগছিল কিশরী বয়স থেকে সে যে যৌবনে পা দেওয়া আজ মেঘনাকে তাকে। 


সময়এর আধ ঘন্টা আগে পৌছে গেছে Interview দিতে, কিন্তু লক্ষ্য করল যে সে নয় আর ও দুজন তার আগে থেকে এসে বসে আছে, এর মধ্যে একজনের নাম নীল, নীলাদ্র চ্যাটারজী, দেখতে দারুন হান্ডসাম, সভাব ভীশন ভালো, আর একজন রিমি, রিমির পোশাক দেখেকেই বোঝা

যায় যে সে আধুনিক মেয়ে, তবে মেঘনা জানত যে এদের সবার মধ্যে মেঘনা সবচেয়ে কম

জগ্যতার, তাই সে কারোর সাথে কথা বলছিল না, তবে নীলএর চোখ মেঘনার সৌন্দরয কে

এরাতে পারিনি, সে মেঘনাকে লক্ষ্য করে এগিয়ে মেঘনা্র সাথে আলাপ করল এবং এই অল্প

সময়েই বুঝল যে মেঘনা তার মতোই খুব বেশি কথা বলে তবে সবার সাথে নয়।


13


এদিকে Interview এর সময় হয়ে যায় কিন্তু Company Chairperson এখন ও আসেনি,

কিন্তু তিনি তার ম্যনেজারকে বলেছেন তিনি রাস্তায় আছেন তাই সে এবং Company র

বাকি উচ্চ পদস্থ অধিকারীর যেন Interview নেওয়া শুরু করে, কথা মতোনই কাজ,

Interview নেওয়া শুরু হল, একে একে প্রায় সবাই কে নিরাস হতে দেখে মেঘনার খুব


চিন্তা হচ্ছিল, নানান চিন্তা ঘিরে নিয়েছিল তাকে, তার মনের আশা কী পুরন হবে? পারবে কী

সে এই সমাজকে বুরো আঙ্গুল দেখিয়ে ওপরে উঠতে? মেঘনা চিন্তা করছে দেখে নীল বলল যে

এখন Launch Time, ½ hrs. সময় আছে চলুন পাসের চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে আসি,

মেঘনা ও বলল ঠিক আছে চলুন, মেঘনা কিছুটা আনমোনে হাটছিল হঠাৎ কিছু একটাতে ধাক্কা

খেয়ে পরে যাচ্ছিল কিন্তু কনো অজানা এক শক্তহাত তাকে ধরে ফেলে নীলের ধরার আগেই।

deep Blue Suit পরে আজকে Dashing এই ছেলেটির আগে কোথাও দেখেছে কিনা মেঘনা তা

বুঝতে পারছিল না, ছেলেটিও মেঘনার দিকে থেকে চোখ ফেরাতে পারছিল না।


দুজনেই তারা একে অপরএর চোখে হারিয়ে জাচ্ছে, আপনাকে কোথায় যেন…… মেঘনার কথা

শেষ হতে না হতেই ছেলেটি মেঘনাকে থামিয়ে দিল, হাজার হোক সে আর পাঁচ জনের সামনে

এখনিই প্রকাশ করতে চায়না সবকিছু, এতে কেউ ওকে কিছু বলার সাহস পাবেনা কিন্তু

মেয়েটার কথা ভেবেই সে নিজেকে সামলে নিল, আর ঠিক তখনি একজন লোক ছেলেটির হাতে

রাখা ব্লেযার টি নিয়ে ‘স্যার চলুন’ বলে সবাইকে সাইড করিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেল ছেলেটিকে

Interview রুমের ভিতরে, ওরা যাবার পর নীল মেঘনার কাছে এসে বললেন ইনি Mr.

Gourmoye Banerjee, এই কম্পানির মালিক।

মেঘনা নীলের কথা শুনে অবাক হয়েনি কিন্তু সে ভাবছিল যে তাকে এর আগে সে কোথায়

দেখেছে?


মেঘনা গৌড়কে চিনতে না পারলেও গৌড় আজ খুব খুশি কারণ ভগবান যে এতদিন পর

তার কথা শুনেছে, সে আর তাকে হারাতে দেবেনা, তবে তাকে এত তাড়াতাড়ি নিজের

মনের কথাও সে জানাবে না, যদি ওর মনে অন্য কেউ থাকে?


তবে সে তাকে জেতে দেবে কিন্তু যদি না থাকে তবে আজ থেকে কাউকে সে গৌড় এর কাছ থেকে

ওকে কেরেনিতে দেবে না । সে যে সময়ে মেঘনাকে পেয়েছিল সে সময়ে সে নিজের মনের কথা

বুঝতে পারিনি, তাই সে তাকে যেতে দিয়েছে, কিন্তু এখন সময়ে পাল্টেছে, সে বুঝেছে যে

মেয়েটিকে সে ভালোবেসে ফেলেছে, সে তার পাসে আছে , তার সব কস্টকে মুছে ফেলবে সে, সে যে

মেঘনাকে এতদিন পর সামনে পেয়েছে, যদিও সে এতদিন তার সামনে আসেনি কিন্তু খোজ সে

রাখত মেঘনার, গৌড় পারেনা এমন কিছুই নেই, অফিসের দাইত্ত্য সাম্লানোর পাসাপাসি তার

ম্যনেজারকে দিয়ে নিয়মিত খোজ রাখত সে, যদিও এব্যপারে যেন মেঘনা কিছু জানতে না পারে

তা ও সে বুঝিয়ে দিয়েছিল ম্যনেজারকে।


ম্যনেজারএর থেকেই সে জানতে পারে সে একটা ভালও কাজের সন্ধান করছিল, বাইরের খবর

পেলেও মেঘনার বিসেশ বন্ধু না থাকায় এত কম বয়সে মেঘনার কাধে এত দাইত্ত কেন তা

গৌড় জানতে পারছিল না। তাই এই Interview এর ব্যবস্থা গৌড়ই করেছিল। যাতে সে মেঘনাকে

আরো কাছ থেকে জানতে পারে। তাই সে ইচ্ছে করেই দেরীতে আসে, আর মেঘনার Interview


সেই নেবে। কিন্তু সেসব Company র বাকি উচ্চ পদস্থ অধিকারীর যেন না যানে সে দিকেও

গৌড়ের নজর ছিল।


গৌড় কিন্তু মেঘনাকে অনেক আগেই লক্ষ্য করেছিল, আর আপনাদের জানিয়ে দিই যে

আমাদের গৌড় কিন্তু ধাক্কাটা ইচ্ছে করেই মেরেছিল মেঘনার কাছে আসার জন্য। এতদিন পর

নিজের ভালোবাসাকে কাছে পাওয়ার জন্য অনেককিছু করেছে গৌড়,


মেঘনার এবার ডাক পড়ল, Interview রুমের ভিতরে গেল সে , সামনের চেয়ারে বসে কিছু ফাইল

দেখছিল গৌড়, মেঘনা অনুমতি চেয়ে ভেতরে আসল। গৌড়ের শান্ত চিউনিতে তার ভয় কাঁপছে

আর এসি রুমেও যে ঘাম জমছে মেঘনার কপালে, এসব গৌড়ের চোখ ঠিকই খেয়াল করল,

মেঘনার অবস্থা দেখে মনে মনে হেসে সে প্রস্তুত হল Interview নিতে, সে মেঘনার সব

Documents দেখে ইচ্ছা করেই প্রশ্ন করল যে Education Qualification এত কম হওয়ার

পর সে এই Interview দিতে এসেছে তার কী কারন, আসলে গৌড় একটু হতাস ই হল যে এই

জগ্যতায় সে ওকে এই Company তে রাখলে সবাই ওর অপর আঙ্গুল তুলবে, তবে সে মনে মনে

ঠিক করেই নিয়েছিল যে ওর Company তে না ওর বন্ধুর Company তে ওকে নিযুক্ত করিয়ে

দেবে, কিন্তু সে মেঘনার উত্তর শুনে অবাক হল, মেঘনা বলল আম্পনার Company তে আমি

Education Qualification নয় নিজের experience এ এসেছে, ঠিক তখন ই তার ম্যনেজার

মানে যে একটু আগে গৌড়কে অফিসে আস্তেই তার হাত থেকে কোর্ট টি নিয়ে তাকে ফিতরে

আনলেন, বলল যে স্যার আমাদের presentation করতে একটু আসুবিধা হচ্ছে কারন আমাদের

office এ Online ভালোভাবে presentation কেউই সাজাতে পারেনা ঠিক মতো আর Client দের

Demand আনুজাই আমাদের Online এ presentation সে রকম কেউই সাজাতে পারছে না,


আসলে সবাই সেই মান ধাতা আমলের খাতা- কলমে কাজ করে অভস্থ, আর গৌড় আসার পর

থেকেই সবই Online এ… কথাটা শেস হতে না হতেই গৌড় রেগে গিয়ে বলল, এইসব ও কাজ ও

আমায় হ্যন্ডেল করতে হবে? তাড়াতাড়ি করে presentasion তৈরি কর নাহলে প্রজেক্ট টা

হাত ছাড়া হবে আর এটা হলে কাল থেকে আর তোমায় অফিস আস্তে হবে না। ম্যনেজার হতাস

হয়ে বেরতে যাবে ঠিক এই সময়


মেঘনা বলে উঠল ‘ Wait a minute, Sir, can you just give me one chance to

handle this situation at once? Trust me, I’ll do my best.


মেঘনার কথা শুনে বঝা গেলনা যে সে মাধ্যমিক পাস মেয়ে। ম্যনেজার মেয়েটির কথায় রাজি হয়ে

বলল স্যার ও যখন এত করে বলছে একটা চান্স দিয়েই দেখুন যদি কিছু সাহায্য তারা পায়

ভালই হবে, গৌড় ভেবে বলল ঠিক আছে, but one chance! বলে সে ম্যনেজার বলে ‘মিস

মেঘনাকে presentasion এর বিসয়ে বুঝিয়ে দাও আর মাত্র দু ঘন্টার মধ্যে presentasion টা

আমার চাই। কিন্তু স্যার দু ঘন্টার মধ্যে কীভাবে সম্ভব ? তার ওপর মেয়েটি নতুন… গৌড়

বাকী কথা না শুনেই বলল ‘ যেটা বললাম কর, দু ঘন্টার মধ্যে না হলে মেয়েটিকে চলে যেতে বল,

মেঘনা এতক্ষন সব কথা গুল শোনার পর বললে উঠল ‘ স্যার ধন্যবাদ আমায় এই সুজগটা

দেওয়ার জন্য। বলে সে ম্যনেজার দিকে ঘুরে বলল চলুন আমি এই দু ঘন্টার একটা সেগেন্ড ও

নষ্ট করতে চাইনা, ম্যনেজার ও সাথে সাথে তাকে নিয়ে presentasion বানাতে চলে গেল।


আসলে গৌড় চেয়েছিল যে মেঘনা এই Company তে নিজুক্ত করার শিধান্তে জাতে কেউ

আঙ্গুল না তোলে, আর সে চেয়েছিল যে Company র বাকী লোকের সম্মতিতে তাকে


Company তে নিজুক্ত করবে তাই মেঘনাকে গৌড়এর সামনে নয় Company র বাকী লোকের

সামনে Proff করার সুজগ গৌড় নিজেই করেদিল জাতে সে কতটা যগ্য সবাই তা জানতে পারে,

নাহলে গৌড় পারত নিজেই presentasion টা তৈরি করতে।সে জান্ত যে মেঘনা এই Risk টা

নেবে এবং সে পারবে নিজেকে Company র বাকী সবার মত যগ্য প্রমান করতে।


Give me one chance


হতে পারে Education Qualification বাকীদের থেকে কম কিন্তু Computer Knowledge সে

এই Company অনেকের থেকে এগিয়ে। সবার কপালে সব থাকে না, আজ ও মেঘনার মত কিছু

মেয়েরা অর্থের অভাবে নিজের ভবিষ্যৎ কে জলাঞ্জলি দিয়ে বাবা - মা র জন্য নিজেকে উজার

করে চলে, আর অদ্ভুত এই সমাজ যারা মেঘনার মত কম শিক্ষিত মেয়েদের অজগ্য বলে

তিরস্কার করে।কিন্ত নিজেদের জগ্য প্রমান করার কনও সুজগই তারা পায় না।


লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এরাই সমাজের প্রক্রত হিরে, যারা ভাল জহুরি না পাওয়ায় নিজেদের

চকচকে করতে পারে না, আর একবার যদি কোন ভাল জহুরির হাতে পরে তাহলে এদের থেকে

চমকের ধারের কাছে কেউ আস্তেই পারবে না। আর আমাদের হিরের কাছে ভাল এক জহুরি আছে

যে এই হিরেকে এমন চমক দিতে চলেছে যে তার ধারের কাছে কেউ আস্তে পারবে না।


মেঘনার কাজ দেখে অফিসের প্রায় সবাই দেখে চমকে গেল, সব চেয়ে বড় কথা যে মেঘনার

কাজ করার ধরণ অনেকটাই একজনের মত, কাজ করার সময় সেই Dedecation,

Seriousness, Time Scene আর Hard Working এই অফিসে একজনেরই আছে আর সে

আর কেউ না এই ঝা চকচকে অফিসের বস Mr. Gourmoye Banerjee, গৌড়ের আগে তার

বাবার এই Dedecation ছিল অফিসের প্রতি, অফিসের প্রত্যেকটি দেওয়ালে আভিজাত্যের

ছোঁয়ার সাথে সাথে অফিসের প্রত্যেকটি Project সে ছোট হক বা বড় তার Seriousness আর

Hard Working ছিল দেখার মত।


বাবার মতই ছেলে ঠিক তা না বাবা শান্তিময়ের কাছে অফিসের প্রায় প্রত্যেকটি লক

নির্দ্বিধায় নিজেদের ছোট - বড় ভুল শুধরে নিতে পারত কিন্তু গৌড়ের Dictionary ভুল আর

দেরী বলে কনো শব্দ নেই, ২৩ বছর বয়সে যেমন বাবার ব্যবসা আর এই অফিসকে ফুলিয়ে

ফাপিয়ে রেখছে তাই নয় নিজের গাম্ভীর্য, আর শান্ত চাউনিতে সবাইকে আতঙ্কেও রেখেছে,

যার অফিসের Ground floor, এর Entrance থেকে আসার সময় 5th Floor এ তার অফিস

রুমে ঢোকা অবধি সবার নিঃশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে যায়, আর একটা যদি ভুল কারোর হয়ে থাকে

তবে তার শীতল চোখের ঠাণ্ডা চাউনি ঠিক জেন ঝড়ের আগে পূর্বাভাস তার ভয় প্রায় হাফ ডেড

হয়ে যায়, সে এই মেয়েটিকে কেন এতবড় Chance দিল তা অফিসের প্রায় প্রত্যেকে এখন

মেয়েটির কাজ দেখে বুঝতে পারছে।


মেঘনার presentasion শেষ হলে সে হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে এখনো আধ ঘন্টা সময়ে

আছে, সে একবার ভাল করে presentasion টি দেখে নিয়ে ম্যনেজারের থেকে Client এর

Email ID জোড় করে চেয়ে presentasion টি attached করে send click করতেই সে টেবিলের

ল্যপ্টপ টি বন্ধ করে দিল। এবং ম্যনেজার কিছু বলতে যাবে তখনী ম্যনেজারের পকেটে থাকা

মবাইল্টি বেজে উঠল, ফোনটা Client এর ছিল যাকে মেঘনা একটু আগেই Email টি

পাঠিয়েছিল, ম্যনেজার কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা তুলতেই ওপাস থেকে ‘We just see your

mail, ম্যনেজার এইবার কি বলবে বুঝতে পারছিল না, আসলে মেয়েটি যে হুট করে mail টা

পাঠিয়ে দেবে তা ভাবিনি, মেয়েটি কে যে বস কিছু বলবে না তা সে যানে, কিন্তু এবার যে তার

চাকরি টা যেতে বসেছে তা সে বুঝতেই পারছিল, তবে যত না ভয় তার চাকরি যাওয়ার তার

থেকেও বেশি ভয় হচ্ছিল ওই শীতল চোখের ঠাণ্ডা চাউনির কথা ভেবে, ‘Actually we did a

small mistake,কথাটা ম্যনেজারে শেষ হতে না হতেই অপাস থেকে Oh ! No no


the presentation was excellent, We accept your proposal and we wants to sign.

the contract paper as early as possible, wait I send you the agreement paper,

and next week we will wants to meet with Mr. Gourmoyee Banerjee . বলেই ফোন্টা

কেটে দিয়ে অবাক হয়ে গেল ম্যনেজার সামনে সেই পাহাড়ের মত লোকটি তার পিছনে দাঁড়িয়ে

দেখেছে সবটা, ‘বস’ ! এই কথাটাই ম্যনেজারের মুখ থেকে বেরল আরো কিছু বলতে যাবে টিক

তখনই ‘ Appointment Letter টা Miss Meghna Sen কে দিয়ে সমস্ত Procedure বুঝিয়ে

কাল থেকে Training শুরু কর’। গম্ভীর গলায় ম্যনেজারকে থামিয়ে গৌড় বলে চলেই যাচ্ছিল

নিজের রুমের দিকে কিন্তু ফিরেও সে পেছনে এসে আবার বলল ‘ আমি এরই মধ্যে আর

একজনের কথা ভেবেছি যে এই পদের জন্য perfact আর কী জেন নাম ভাবতে না ভাবতেই

একজন মেয়েলি কন্ঠে বলে উঠল ‘রিমি, রিমি রায়, গৌড়ের ঠিক সামনে এসেই বলল কথাটা,


‘কিন্তু বস আপনি যে এই পদের জন্য Miss Meghna Sen Train করতে বললেন? ‘

ম্যনেজার আমতা আমতা করে প্রশ্ন করল, ‘মনে হয় বস আমি…’ গম্ভীর ভাবে এই কথাটা

বলার পর গৌড় ঠক ঠক করে লিফটের দিকে চলে গেল। গৌড়কে যেতে দেখে রিমি ও বেশ খুশিতে

নাচতে নাচতে বেরিয়ে গেল। তবে ম্যনেজার বুঝল যে সে একটু বেশী কথা বলে ফেলেছে…


মেঘনার সামনে এতক্ষণ যা যা ঘটছিল তাতে সে একটা কথাই ভাবছিল সে এক

Thankless, আর Heartless একজন মানুষের সাথে কাজ করতে চলেছে, নাহলে তার

আটকে থাকা প্রজেক্টি যার জন্য Complete ই শুধু হলনা বরং তাদের ডিলটাও Sanction

হয়ে গেল তাকে বাহবা না দিলেও একটা ধন্যবাদ ত দেওয়াই যেত, হঠাৎ তখনি‘ এইনিন

আপনার Appointment Letter আর কাল ঠিক সকাল ৯ টার মধ্যে অফিসে আসবেন।

মনে রাখবেন ৯ টা মানে ৯ টা তার এক মিনিট ও দেরি জেন না হয়,’ এখন আপনি

আসুন ম্যানেজার একটু হেসে মেঘনার হাতে


Appointment Letter টি দিয়ে বসের রুমের দিকে চলে গেলেন। মেঘনা Appointment Letter টি

নিয়ে ওই মিটিং রুম থেকে বেরিয়ে লিফটের দিকে চলে গেল যাতে সে Ground floor এ যেতে

পারে, লিফটের বাটান টিপলে লিফট খালি অবস্থাতেই নামে কিন্তু মেঘনা লিফটে গিয়ে লিফট

এর দরজাটা বন্ধ করবে ঠিক তখনই একটা ব্লাক Stylish Boot এসে লিফটইকে আটকে দিল

মেঘনা কে এই কাজ করেছে দেখতে সামনে এগিয়ে এলে একজন ব্যক্তি তারাহুর করে লিফটে

ঢোকার চেস্টা করছিল এবং ফলে দুজনের জোরে ধাক্কা লাগে তাতে তারা দুজনেই টাল সাম্লাতে

না পেরে লিফটের ভিতরে পরে যায় আর বাধা নাও পাওয়ায় লিফট ও বন্ধ হয়ে যায়, ব্যক্তিটি

আর কেউ না আমাদের গৌড়বাবু, ‘ আপনি কী বরাবরই সব জায়গায় এইভাবে পরতে থাকেন?’


গৌড় শান্তভাবে বলে উঠল, ‘ আপাতত আপনই পরে আছেন আমার ওপর ’ মেঘনা কাঁপা কাঁপা

গলায় বলে উঠল, সতীই ত পাহাড়ের মত শরীরটার ভার কী এই ফুলের মতো নরম শরীর কী নিতে

পারে? গৌড় যখন এইসব কথা ভাবছে তখন আবারও বলে উঠল “ স্যার “ ! এইবার মেঘনাকে

একটু অসস্তিতে দেখে গৌড় তাড়াতাড়ি উঠে নিজেকে সামলে নিইয়ে লিফটে 5th floor এর বাটান

টি টিপতে দেখেও মেঘনা কিছু বলতে গিয়েও বলল না, পাহাড়ের মত Heartless মানুষটি যে তার

বস তার মনে পরার কারনে। গৌড়ের অস্থিত্ত্য যে এক সম্রাটের মতোই তা মেঘনা ভালোই সে

গৌড়ের পিছনে দাঁড়িয়ে , তার floor এসে যাওয়ায় পেছনে না তাকিয়ে গৌড় শক্ত বুটের গট্মট

গট্মট শব্দ করে লিফট ছেরে বেরিয়ে গেল, মেঘনা এইবার একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে আবার

লিফট এ করে অবশেষ Ground floor এ এসে exit দিয়ে বাইরে বেরতে যাবে ঠিক এমন সময় “

মেঘনা, মিস মেঘনা এই যে একটু দারান” পুরুষ কন্ঠে কে চেঁচিয়ে তার নাম নিয়ে ডাকছে ?

দেখতে সে পেছনে ফিরে নীলকে দেখে একটু মুচকি হেসে “ ওহ! তুমি… তাই ভাবি কে আবার এই

অফিসে তার নাম জানল……। আ…আ… আমি ত… নীল তখনো ও হাফাচ্ছে… এবার একটু

থেমে “ আমি তোমায় একটা Good News দেওয়ার জন্য ডাকছিলাম…।


কথাটা শেস হতে না হতেই মেঘনা একটু অবাক হল “ কী Good News? নীল সাথে

সাথেই বলে উঠল “ আমি এই কম্পানির Finance Department এর Select হয়েছি যানো

মেঘনা এই দিনটার জন্য আমি অনেক wait করেছি, এবার আমি আমার বাবার সামনে

মাথা উচু করে দারাতে পারব, এতদিন আমি বাবার থেকে Pocket Money নিয়েছি এবার

থেকে আমি বাবাকে Pocket Money দেবো……” কথা গুলো বলতে বলতে নীল প্রায়

আনন্দে আত্যহারা হোয়ে গেছে তা বোঝাই জাচ্ছিল, “Realy?


Congratulations” মেঘনা হাসি মুখে বলল, “তা তোমার Interview কেমন হল?” নীল একটু

কৌতুহলের সাথে প্রস্নটা করল… হম ভালোই, আমার ও Selection হয়েগেছে,” সত্যি?

কথাটা নীল তো জোরে বলল যে আসে পাসের সবাই ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে, “তুমিও”...।।

এইবারোও নীল যে চেচাবে মেঘনা বুঝতে পেরে তার হাতটা নীলের মুখের অপর চেপেদিয়ে “ আরে

আস্তে আস্তে” কী করছো? এটা অফিস, বলেই নীলের চোখে চোখ পরতেই সে বুঝল যে সেও

একটু বারাবারি করে ফেলেছে, তাই তখনই সে হাত টা সরিয়ে নিল, ‘ সরি একটু…’ মেঘনাকে

লজ্যা পেতে দেখে নীল আর চোখ সরাতে পারলনা, মনের ভেতরে হঠাৎ ই উঠাল পাথাল অনুভব

করল তাও মুখে সে কিছুই বলতে পারল না, শুধু বলল যে না না ঠিক আছে আর দোস্টা আমারই

আসলে আমি এরকমই জানেন, একবার ও আগে পিছু ভাবিনা, যাগ গে তা আপনার কোন

Department এর জন্য Select হলেন? নীল পরিস্থিতিকে সাধারণ করার জন্য বলল, “

যানিনা আমায় শুধু কাল ৯ টায় জয়েন করতে,” মেঘনা হতাস গলায় কথাটা বলছে দেখে নীল

প্রশ্ন করল “ আকী যবটা পেয়ে খুসি ন ও? না তা না আমি ভিশন খুশি, মেঘনা উত্তর দিল,

তবে আপনাকে এত মন মরা লাগছে কেন? মেঘনা উত্তরটা দেওয়ার সময়ে মনে মনে ভাবছিল যে

যবটা পেয়ে যতটা খুসি ততটাই সে এটা ভেবে মন খারাপ করছিল যে তাকে তো বলাই হয়েনি যে

তাকে কোন পদে নিযুক্ত করা হল, আর সে যে পদটির জন্য এসেছিল তার


জন্য তো তার সামনেই অন্য এক মেয়েকে নিযুক্ত করা হল, তবে কী সে কম শিক্ষিত বলে

তাকে কনো নিচু পদের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে? তবে তার জন্য Training এর ই বা

কী প্রয়োজন?


পর্ব

- ৬


মান আভিমান


আর যদি সত্যি তাকে নিচু পদের জন্য নিযুক্ত করা হয় তবে সে কালই নিজের ইস্তফা দিয়ে

দেবে, সে কম শিক্ষিত হতে পারে কিন্তু আত্মসম্মান তারোও আছে।


মেঘনাকে অন্যমনুস্ক লাগছে দেখে নীল আর কথা না বারিয়ে বলল যে “ দেখলেন আমার জন্য

আপনার কতটা দেরী হয়েগেল? চলুন যাওয়ায় জাক, আজকের দিন্টাই বিস্রাম পাওয়ার কাল

থেকেতো ব্যস্ততার দিন শুরু” মেঘনা এবার ভাবনা থেকে বাস্তব জীবনে ফিরল, “হুম চলুন…”

বলে মেঘনা আর নীল হাটা দিল। মেঘনা নীলের সাথে কথোকথনে এতই ব্যস্থ যে তাকে অফিস

রুমের কাচের জানালা দিয়ে যে গৌড় তাকে দেখছিল সেটা বুঝতেই পারিনি বা সে ওপর

দিকে তাকিয়েই দেখেনি, তবে গৌড় যে নীলের ভালো Experience থাকার জন্য তাকে

Finance Department নিযুক্ত করার শিধান্ত ঠিক হল কীনা তা ভাবছে, তার এই ভাবনার

কারনটা নীলের এত তাড়াতাড়ি মেঘনার সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা, অফিসের কাচের

জানালা দিয়ে নীচের দিকে সে শুধু মেঘনার চলে যাওয়াটা দেখার জন্য দাঁড়িয়েছিল কিন্তু

নীলের সাথে তাকে কথা বলতে দেখে বিশেষ করে মেঘনা যখন ছেলেটার মুখে হাত দিয়ে

চুপ করাচ্ছিল তখন নীলের রক্ত প্রায় ফুটছিল, এতটাই রেগে গেছিল যে হাতে থাকা জলের

গ্লাস্টা তার শক্ত মুঠোর চাপে সশব্দে ফেটে গেল আর রক্তে তার হাত ভেসে জাচ্ছে,

ম্যনেজার কিছু একটা ফাটার আওয়াজে বসের রুমে এসে সে অবাক হয়ে যায়, সে বুঝতে

পারে বস কিছু একটা কারনে ভীষণ রেগে আছে, তাই বুকে ওনেকটা সাহস নিয়ে সে ‘

বস! রক্ত পরছে, Fast Aid box কী? ‘

ম্যনেজার এর ডাকে জানলা থেকে চোখ সরিয়ে গৌড় গম্ভীর আর রেগে ‘ ড্রাইভারকে বলো গাড়ী

বার করতে,’ ম্যনেজারের আর কিছু বলার সাহস হল না সে মাথা নাড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে

ড্রাইভারকে ফোন করে বলল গাড়ী বার করতে, গৌড় টেবিলে রাখা ফাইল গুল নিয়ে অফিস থেকে

বেরিয়ে গেল।


মেঘনা বাড়িতে এসেই সু খবরটা বাবা, মা ও দিদিকে দিল, খবরটা পেয়ে তারা প্রায়

খুশিতে কেঁদেই ফেলে, মেঘনা বাবা-মা র চোখের জল মুছে “ কাল থেকে আমার অফিস

তাই ঘরের কাজ সে রকম করতে পারব না, তাই একটা মাসি ঠিক করে এলাম যে কাল

থেকে ঘরের সব কাজ করবে, মা কে এই অসুস্থ শরীর নিয়ে কিছু করতে হবে না, “ এই

কথাগুল আনদের সাথে বলল, বাবার চোখ তখনোও ছলছল করছে, “


অনেক কষ্ট পেয়েছিস রে মা আমাদের জন্য, আমার আবস্থা এরকম না হলে তোকে আরোও

পড়াতাম রে মা!, তবে সত্যি বলতে আমরা তর হওয়ার সময়ে ছেলে চেয়েছিলাম, কিন্ত দেখ আজ

তুই আমাদের জীবনে ছেলের থেকেও বেশি দায়িত্ব পালন করছিস, তার বিনিময়ে আমরা তোকে

কিছুই দিতে পারলাম না, তবে এবার সে বেশ বিরক্ত হয়ে বলল 'মা তুমিও?তো যদি এইভাবে

আর একবারও কথা বল আমি সত্যিই এইবার বাড়ি ছেড়ে চলে যাব। '


এরকম ভাবে বলিস না, আচ্ছা অনেক হয়েছে কখন নে এবার হাত-মুখ ধুয়ে আয় আমি খাবার

বারছি, আর হ্যাঁ শোন তুই মাসিকে রান্না করতে বারন করবি, ওটা আমিই করব, আমি এতটাও

অসুস্থ না যে নিজের মেয়েকে রেঁধে খাওয়াতে পারব না, তুই আর এদিক নিয়ে ভাবিস না, আমি

আর তোর বাবা সব সামলে নেব, তুই মন দিয়ে অফিসের কাজ করবি, কেমন?" মেঘনার মা

মেঘনাকে শান্ত করিয়ে কথাগুলো বলল। " আচ্ছা আমি আসছি তুমি খাবার বারো আজ একসাথে

খাব" মেঘনা শান্ত হয়ে বলে বাথরুমে চলে গেল।


রাত ১০টা, ছেলের আস্তে দেরী হচ্ছিল বলে গৌড়ের মা বেশ চিন্তায় পরেগেছিল, ছেলেকে ফোন

করতে যাবে এমন সময় সে গাড়ীর হর্ন পেয়ে বুঝল ছেলে এসেছে, , গাড়ী থেকে বেরিয়ে বারীতে

ধুকেই তাড়াতাড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে বুটের সশব্দে নিজের রুমে গিয়ে ধরাস করে রুমের দরজাটা

বন্ধ করেদিল, " কী রে বাবাই তোর এতো......" মায়ের চিন্তায় ভরে আসা কথাগুল গৌড়ের কান

অবধি পৌঁছাল না ।


গৌড়ের মা এবার আরো চিন্তায় পরেগেছিল, সে নিজের রুমে গিয়ে গৌড়ের বাবাকে জিনি

নিউজ পেপার পরতে ব্যস্ত তার কাছে এসে চিন্তিত গলায় " কী গো বাবাই এর বোধহয়ে

কিছু হয়েছে, এইমাত্র ঘরে ফিরল, আর আমার সাথে কথাও বলল না, আজ অবধি তো

ছেলেটা কোনদিনও এমনি করেনি, বাইরে যতোই শক্ত হয়ে থাকুক না কেন, বাড়িতে এলে

সে আমার সেই ছোট্ট বাবাই হয়ে যায়, মা এটা করে দাও, আজ এটা খাব বলে, আর

আজ, ওকে দেখে আমার বেশ ভয়ই হচ্ছে গো, কী গো দেখনা একবার ছেলেটার কি হল ?

এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো " এক নিমুখের সামনে থেকে পেপারটা নামিয়ে সে তার স্ত্রী কে এত

চিন্তিত দেখে, তাকে পাসে বসিয়ে আস্তে আস্তে তাকে বোঝাচ্ছেন " দেখ রমা আমাদের ছেলে

এখন আর সে ছোট্ট বাবাই নেই, এখন সে বড় হয়ে গেছে, একটা বিশাল বড় সাম্রাজের

মালিক এখন সে, আর তার এই শক্ত সভাবের জন্যই তাকে এই সাম্রাজের মালিক বানিয়েছি

আমি, জার ফল আমাদের সামনে,


অনেক কথাই সে এখন আমাদের বলতে পারবে না, তাই এই পরিস্থিতি থেকে তাকে একাই

বেড়তে দাও, আমরা সারাজীবন ওর পাশে থাকতে পারব না তাই ওকে একটু সময়ে দাও দেখবে

ও ঠিক নিজেকে সামলে নেবে, " বেশ শান্ত ভাবে কথাগুল বললেন, স্বামীকে এত শান্ত দেখে


গৌড়ের মা রমাদেবী আর কথা বারালেন না, তবে ছেলের চিন্তা করাও ছাড়লেন না, " আচ্ছা

আমি রান্না ঘরে যাচ্ছি দেখ যদি ছেলেকে বুঝিয়ে খাবার টেবিল অবধি আনতে পারো, বলে যেতে

যেতে ' কি যে হল ছেলেটার' বিরবির করতে করতে চলেগেলেন।


গৌড়ের বাবার যে ছেলেকে নিয়ে একদম চিন্তা হচ্ছিল না তা নয় সে শুধু তার স্ত্রী কে শান্ত

করার জন্য কথাগুল বললেন, তিনি জানতেন ছেলেকে নিয়ে তার মা প্রায় রাতদিন চিন্তা করেন

যেটা তার শরীরের পক্ষে একডম ভালনা, তাই তিনি নিজেকে স্ত্রীর সামনে শান্ত রেখেছিলেন।


গৌড় রুমে ধুকে কাধ থেকে কোনোরকমে ব্লেজারটা খুলে ছুরে ফেলে দিল, তারপর বাথরুমে গিয়ে

আয়নায় নিজেকে দেখতেই তার সে মুহূর্ত টা মনে পরে গেল। যখন মেঘনা ছেলেটার মুখে হাত

দিয়ে তাকে চুপ করাচ্ছিল, রাগ যেন কমছেই না, যে হাত দিয়ে রক্ত বেরহচ্ছিল জেটা গাড়ীর

এসি তে রক্ত প্রায় হাতই সুকিয়ে এসেছিল সেই হাত দিয়েই সামনের আয়নায় এক ঘুসি

মারতেই আয়নার কাঁচ মাটিতে টুকরো টুকরো হয়েগেল। রক্তে ভেসে যাচ্ছে মারবেলের সাদা

চকচকে বাথরুমের ফ্লোর, " গৌড় ! তুমি ঠিক আছো বাবা ?? হঠাত বাবার গলা পেয়ে চমকে

সে " হ্যাঁ বাবা আমি ঠিক আছি " উত্তর দিল, " বাবা তোমার Fresh হওয়া হয়ে গেলে বাইরে

এস আমার একটু কথা আছে, " গৌড়ের বাবা বাইরে থেকে বললেন।


গৌড় তাড়াতাড়ি করে বাথরুমের ফ্লোর ধুয়ে হাতে একটা টাওয়াল জড়িয়ে হাতের ক্ষত লুকিয়ে

বাথরুম থেকে বেরিয়ে সে দেখল এখনো ও বাবা বেড্রুমে বসে আছে। " বাবা তুমি নিচে যাও আমি

আসছি," গৌড় একটু গম্ভীর হয়েই কথাটা বলল, গৌড় এর দিকে একঝলক দেখে তার পাশে এসে

বসতে বলেন গৌড়ের বাবা, গৌড় তার ক্ষত হাতটা লোকানোর চেস্টা করলেও সে তার বাবার

কাছে ধরা পরে যায়, তার বাবা তার ছেলেকে কোনও প্রশ্ন না করেই তার হাত থেকে টাওয়াল টা

সরিয়ে ভাল করে তার হাতে মলম লাগিয়ে ব্যন্ডেজ করতে করতে বলেন " বাবাই হতে পারে তুমি


এখন বড় হয়েছ কিন্তু আমার আর তোমার মায়ের কাছে তুমি আজোও সেই ছোট্ট ছেলেই আছো,

যে আজোও রাতে মায়ের কোল ছাড়া ঘুমায় না, তোমার কী হয়েছে তা জানার জন্য তোমার মা

অনেক চিন্তিত,


প্রায় কেঁদেই ফেলে আর কী " এবার তিনি একটু থামেন, তারপর গৌড়ের কাধে হাত রেখে আবার

বলেন " আমি তোমায় তোমার মায়ের থেকেও বেশি চিনি , তাই বলছি, ভালোবাসা ভাল কিন্তু

ছিনিয়ে নেওয়া নয়, ভালবাসলে তাকে সময় দাও নাহলে তাকে যেতে দাও" এই বলে সে চলেই

জাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই " বাবা ভালবাসা নয় ও আমার জীবন" তবে তোমার কথাও মনে রাখব,

গৌড় গম্ভীর গলায় বলে ওঠে, এই কথা শুনে তিনি গৌড়কে মুচকি হেসে বলেন জানি তো যেমন

তোমার মা আমার জীবন, যিনি এখন তোমার চিন্তায় টাবিলে খাবার সাজিয়ে বসে আছেন চল

যাওয়া যাগ"।


গৌড় এতক্ষণে একটু শান্ত হল আর শুধু "হুম" উত্তর দিয়ে বাবার সাথে নীচে গেল। ছেলে ও

বাবাকে একসাথে নীচে আস্তে দেহে রমা দেবী একটু চিন্তা মুক্ত হলেন, সে তারাতারি খাবার

সাজিয়ে দিল, গৌড় টেবিলে বসে খাবার টা প্লেট টা সামনে টানতেই তার মা " কী রে বাবাই তোর

হাতে কী হল? ইস !!!! খুব ব্যথা হচ্ছে না? কত করে বলি যে সাবধানে কাজ করবি, কিন্তু কে

শোনে কার কথা?" মায়ের কথা শেস হতে না হতেই গৌড় মা কে সান্ত করিয়ে বলল ও কিছুনা

একটু চোট লেগেছে আর বাবা ভালো করেই ব্যন্ডেজ দিয়েছে, যতোই হোক মা তো তাই সে

ছেলেকে খাবারে হাত দিতেই দিল না সেই ছেলে যত্নের সাথে খাইয়ে দিল। মায়ের এত স্নেহ,

মমতা দেখে গৌড় এর ও মন ভরে এল। ভাবল সে জীবনের সব কিছুই পেয়েছে তবে এখনো তার

কিছু পাওনা বাকি আছে, এখনো ও তার জীবনে এক সাথীর বরোই আভাব।


খাবার সেরে ছেলে ও মা একসাথে ওপরে গৌড় এর রুমে গেল, গৌড়কে রোজের মতোই

মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পারিয়ে মা রমা দেবীর মন এতক্ষনে শান্তি পেল, রুমের বারিয়ে

গৌড়ের বাবা তাদের দেখে এক্টাই কথা ভাবছিলেন যে এ সংসারে আরোও একজনের

আভাব আছে, এমন একজনের যার আসার পর এই সংসারেই না তার পাগল ছেলেকে সে

সামলাবে, তবে আজ যে ভাবে ছেলেকে তিনি দেখলেন এর আগে কখনোই তিনি


ছেলেকে এই ভাবে দেখেননি, তবে ছেলেকে দেখে তিনি বুঝতেই পেরেছেন যে তার ছেলে প্রেমে

পরেছে।


রমা দেবীকে ছেলের ঘরের লাইট নিভিয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখেন গৌড়এর বাবা রুমের বাইরে

দাঁড়িয়ে, প্রস্ন করলেন " কী গো তুমি এখনো ও ঘুমাওনি? " "তোমার জন্যই অপেক্ষা

করছিলাম বলে স্ত্রী কে নিয়ে নিজেদের রুমে চলেগেলেন।


মা - বাবার সাথে রাতের খাবার শেস করে মেঘনা তার ঘরে গিয়ে তার ডায়েরিটা খুলে বসল,

মেঘনা ডায়েরি লিখতে খুব ভালোবাস্ত, সারাদিনের ক্লান্তির পরোও সে মনের সব কথা তার

এই বন্ধুকে বলত।


আজ সারাদিনের ধকলের পর মেঘনা বেসি কিছু লিখতে পারলনা, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ডায়েরিটা

বন্ধ করে নিজের ক্লান্তি ভরা শরীরটাকে বিছানায় ফেলেদিল, শুয়ে শুয়ে সে ভাবছে আজ বাবা

মা কতোই না খুসিছিল, যখন তারা জানবে যে আমি কাজ টা ভালো না লাগলে ছেরে দেব তখন কী

হবে? তাছারা আমি তো এটাই জানতে পারলাম না যে আমি কোন পদের জন্য নিজুক্ত হলাম,

তবে আজ বাবা মার এই খুসির জন্য সে যে কোন কাজই করতে পারে, এই কথাও সে ভেবে সে


নিজের সিদ্ধান্তকে বদলাল, কাজটা আর চাইলেও সে ছারতে পারবে না, কাজ করতে হবে তাকে

সেই হ্রদয় হীন বসের সাথে , বসের কথা মনে করতেই তার চখের সামনে সেই লিফট্টের কথাই

মনে পরছিল, তবে তার সেই রাতের ছেলেটার কথাও মনে পড়ছিল যেদিন সে তার কানেরটা আবার

ফিরে পেল, ছেলেটার আর তার বসের মধ্যে কত অমিল খুজে পেল মেঘনা। এইসব ভাবতে ভাবতে

চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ল।


পর্ব - ৭

Made for eachother


সকাল ৭ টায় গৌড়ের ঘুম অ্যালার্ম ঘড়ির শব্দে ভেঙ্গেগেল, উঠে সে Fresh হয়েই নীচে এসে

দেখল মা Breakfast টাবিলে সাজিয়ে বসে আছেন, গৌড় যে টাইমে চলে সেটা তার মায়ের ভালোই

জানা ছিল, সে Breakfast করে গারী করে বেরিয়ে পরল।


মেঘনা বারি থেকে সঠিক সময়ে বেরিয়ে ছিল, কিন্তু জ্যামে এ ভরা রাস্তায় ট্যস্কি সে

কিছুতেই থামেতে পারছিল না, ভাবল যদি সামনের দিকে এগোলে বোধহয় সে ট্যস্কি পেয়েযাবে,

কিন্তু তার সামনে হঠাৎ একটা গারী এসে দারাল, মেঘনা ভাবল হয়েত গারী থেকে কেউ নাম্বে

তাই সে সরে দারাল, কিন্তু গারী থেকে ড্রাইভার বেরিয়ে এসে বলল ‘ ম্যাডাম আপনি মিস

মেঘনা সেন কী’? সে উত্তরে হ্যাঁ বললে, তাকে ড্রাইভার বলে যে বস আপনাকে একটু ডাকছে,

মেঘনা গাড়ীটির ভেতরে দেখে অবাক হয়েগেল, “ আপনার আজকে Office এ 1st day না? “


একটা গম্ভীর গলা বেরিয়ে এল গাড়ি থেকে, মেঘনা এবার একটু ঘাবড়েই গেল ‘ বস আমি এই

এক্ষুনি পৌছে যাব, ট্যস্কিটা পেলেই…… আমতা আমতা করে কথাটা শেষ করতেই পারল

না…। “ আমি রোজ এই রাস্তা দিয়ে Office যাচ্ছি, এখানে ট্যস্কি পাওয়া অতো সজা নয়,”

লিফট চাইলে নিতে পারেন, আবার সেই গম্ভীর গলায় গাড়িটিতে বসে থাকা ব্যাক্তিটির

কথাগুলো শুনে মেঘনা বেশ ভয় ভয় মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিয়ে গাড়িতে উঠে বসল।


গাড়িটিতে বসে থাকা এই ব্যাক্তিটি আর কে হবে? গৌড় জানত যে মেঘনা এই রাস্তা দিয়েই

যাবে তাই সে অনেক্ষন ধরে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছে নিজের প্রিয়তমার, কাল বাবার

কথায় মাথা ঠাণ্ডা করেছিল, তবে বাবা যে তার প্রেমে পরার ব্যপারটা জেনে গেছে তা সে

বুঝতেই পেরেছিল। কাল সে বুঝতে পারল যে সে মেঘনাকে কতটা বেশি ভালোবাসে, ভালোবাসলে

কী তাকে অন্যকারোর সাথে দেখলে কী এতটা রেগে যেত সে? ভালোবাসা যে মানুষকে এতটা

সার্থকপর বানিয়ে দেয় সেটা সে কাল বুঝল,


আর কাল সে মেঘনার সাথে অনেকটা খারাপ ব্যবহার ও করেছে, সে চাইলেই যে তার প্রতি সে

কতটা দুর্বল তা বোঝাতে ও পারবে না।


গোলাপি রঙ্গের চুরিদার, সাদা ওরনা, কানে সেই সোনার কানের, কপালে ছোট্ট কালো টিপ আর

কাজল রাঙ্গা চোখ যেন মেঘনার সৌন্দর্যকে আরোও উজ্জল করে তুলেছে , তাই আজ আর

মেঘনার থেকে চোখ সরাতে চলন্ত গাড়ির হাওয়ায় ক্লিপের বাধনে অবাধ্য হয়ে উরন্ত চুল গুল

যখন মেঘনার অজান্তে গৌড়ের মুখের সামনে আসছিল তখন গৌড় যে কী তৃপ্তি পাচ্ছিল তা শুধু

তারাই বুঝবে যারা এক তরফা ভালবাসা করেছে ।

দেখতে দেখতে তারা অফিসের প্রায় সামনেই এসেগেছে, তারা একসাথে অফিসসের সামনে নামলে

সবাই তাদের সন্দহের সাথে দেখবে গৌড়ের সামনে কিছু বলতে পারবে না কিন্তু মেঘনার জন্য

ব্যপারটা এতটাও সহজ হবে না, এত সুন্দর সুন্দর মহিলারা অনেক চেষ্টা করেও আজ অবধি

যে গৌড়ের গারীতে কাউকেই লিফট পায়নি, তবে মেঘনার কথা আলাদা কিন্তু মেঘনা কে যে সে

নিজেই লিফট দিয়েছে কীভাবে বলবে তাকে আগে নেমে যেতে সে ভাবছিল ঠিক তখনই মেঘনা “

বস… বলছিলাম যে আমরা তো অফিসের অনেকটাই কাছে এসেগেছি আমাদের এক সাথে নামতে

যদি কেউ দেখে ফেলে তবে তারা বাজে কিছু ভাবতে পারে…।। তাই আমি এখানেই মেনে যাচ্ছি…।

আর ধন্যবাদ আমায় সাহায্য করার জন্য…। কথা গুল আমতা আমতা করেই বলল যাতে তার

বস রেগে না যায়, গৌড় শুধু মেঘনার দিকে একবার তাকিয়ে “Ok, as your wish… বলে

ড্রাইভারকে গাড়ী থামাতে বলে, আর মেঘনা মাথা নামিয়ে গাড়ী থেকে নেবে অফিসের দিকে চলে

গেল ।


মেয়েটা কীভাবে বুঝল আমার মনে কী চলছে? যে কাজটা কীভাবে করব ভেবেই পাচ্ছিলাম

না সেটা মেয়েটা কত সহজেই করেদিল, আমার বলার আগেই সে ভেবেনিল আমি কী

ভাবছি, তবে একেই কী “ Made for eachother” বলে?


তবে ও যদি এতটাই মনের কথা বুঝতে পারে তবে কেন বুঝতে পারছেনা যে আমিই সেই রাতের

ছেলেটা, যে তার একটা হারানো কানের তিন দিন পকেটে নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছিলাম যদি একবার

দেখা হয় তবে তাকে ফেরত দেওয়ার বাহানায় একবার কথা বলব, তবে আমি কী এতটাই পাল্টে

গেছি যে ও আমায় চিনতেই পারছে না? এই সব ভাবনায় মগ্ন গৌড়ের ড্রাইভারের ডাকে

বাস্তবে ফি্রে বুঝল যে অফিসের পারকিং লটে সে আধ ঘ্নটা আগেই পৌছে গেছে, মনে মনে

হেসে সে গাড়ী থেকে নেমে আফিসের দিকে এগোলো।


মেঘনা অফিসে এসে দেখল যে সে যেই পদের জন্য Interview দিয়েছিল এবং যে পদের আসায়

সে এই আফিসে এসেছিল সেই পদে আর সেই কেবিনে অন্য একটি মেয়ে বসে আছে, তবে কী তার

মনের ভাবনাই সত্যিই? তার শিক্ষাগত জগ্যতা কম বলে তাকে কী কেরানির পদের জন্য

নিযুক্ত করা হল? না কী সেদিন সে বসের অনুমতি ছাড়াই presentasion টা পাঠিয়েছে বলে?

রাগে তার মাথার ঠিক ছিল না, রেগে মেগে সে ম্যানেজারের রুমের গিয়ে তাকে “ আমায় কোন

পদের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে তা জানতে পারি? প্রশ্নটা সে বেশ জোরেই করল।


“ দেখুন মিস মেঘনা সেন আপনাকে কোন পদে রাখবেন আর আপনার কাজটা কী সেটা বস আসার

পরই জানা যাবে, কারণ আমিও সেটা জানিনা, আপনি আপাতত waiting room গিয়ে অপেক্ষা

ক্রুন, বস আসলে আপনাকে ডাকা হবে।” ম্যানেজার কৌশিক কথা গুল মুখে হাসি রেখে আর

পরিস্থিতি সামলে বলছিল ঠিক তখনই রিমি মানে যে মেয়েটি মেঘনার জায়গাটা নিতে পেরে

নিজেকে বিশাল কিছু একটা ভাবছে সে এসে উপস্থিত হল “কৌশিক স্যার বলছি যে আমি না ঠিক

বুঝতে পারছি না যে আপনি আমায় আমার কাজের ব্যপারটা না ভালো করে বুঝিয়ে আপনি একটা

Low Standard.


মেয়ের সাথে কথা বলছেন কীভাবে? “Low Standard” মেঘনা কিছু বলতে যাবে তখনই একটা

গম্ভীর গলায় “ What”? কথাটা সুন্তে পেয়েই সবাই প্রায় স্তভিত হয়ে গেল, ম্যানেজার

কৌশিকের রুমের ভেতরের গরম আবহাওয়ার তাপ বারিয়ে থেকে বাকিরাও পাচ্ছিল, অফিসে ঢুকে


নিজের কেবিনের দিকে যেতে গিয়েও সে দাঁড়িয়ে গেল রিমির কথাটা শুনে, রিমির তাকে দেখে তো

হাত- পা পাথরের মতোই হয়ে গেছে, ভয় সে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে, কৌশিক কিছু বলতে

যাবে তখনই তাকে হাত দেখিয়ে থামতে বলে, ব্লেজারের মাঝের বোতামটা আগলা করতে করতে

আবার সেই রাগী আর গাম্ভীর্য গলায় বলে উঠে “ What did you say right now Miss Rimi

?” “ না মানে…………ব ব ব স…… তুতলাতে লাগল এবার রিমি…… তার এবার মনে হচ্ছিল

রূমের ফ্লোরটা খুরে তাতে মিসে যেতে, প্রথম দিনেই সে এনার মুখমুখি হয়েছে আজ ই বোধহয়

তার শেষ দিন, রিমি যে এইবার কেঁদেই ফেলবে বুঝতে পেরে সে এবার কৌশিকের দিকে তাকিয়ে

রাগী আর গম্ভীর কন্ঠে বলল যে “Miss Rimi কে আজ থেকে দশ দিন অফিসের সবাইকে তার

আফিস টাইমএ চা ও জলখাবার সার্ভ করবেন, তাকে আফিসের সবার অর্ডার অনুযায়ী খাবার

ক্যান্টিন থেকে এনে দিতে হবে, এই দশ দিনে যেন কারোর কাছ থেকে সে তার নামে যেন কোন

অভিযোগ না পায়ে যদি পায় তবে তার দশদিনে আরোও এক দিন যোগ হবে, অভিযোগ যত বারবে

দিনের সংখ্যাও তত বারবে, বিনা অভিযোগের হাসিমুখে কাটাতে হবে তাকে এই দশ দিন। তবে

এই দশ দিন পর তিনি তার পদে পুনরায় নিযুক্ত হতে পারেন আর তা যদি না করেন তাকে এই

অফিস আজই Block করেদেবে, আর এই কম্পানি জাকে একবার Block বা Reject করে তাকে

Employee হিসাবে নিজেকে দাড় করান যে কতটা কঠিন তা Miss Rimi ভাল করেই জানেন ”

এবার মেঘনার দিকে তাকিয়ে তাকে তার সাথে নিজের কেবিনে আস্তে বলে সে ওখান থেকে চলে

যায়।


পর্ব - ৮


বসের অ্যাসিস্ট্যান


রিমির সাথে এটা হওয়ারই ছিল, গৌড় সবার থেকে আলাদা অ যানে কাকে কখন কীভাবে

সায়েস্তা করতে হয়, সে চাইলে রিমিকে কিছু না জানিয়েই Block করে দিত আর কৌশিককে

দিয়ে তা জানিয়ে ও দিত তাকে নিজেকে এখানে আনার কোন প্রয়োজনই ছিল না, কিন্তু এমনটা

করলে রিমি সঠিক সাস্তিটা পেত না, তাছারাও গৌড় নিজের সম্পর্কে খারাপ কিছু শুনলে হয়েত

এইভাবে রিয়েক্ট করত না কিন্তু কথাটা যেখানে মেঘনার সেখানে সে কখনই চুপ থাকবে না।

মেঘনা আর কথা না বারিয়ে ওখান থেকে বেরিয়ে বসের রুমের গিয়ে নক করতেই

গৌড় তাকে রুমে আসার অনুমতি দিল, “ আচ্ছা মিস মেঘনা আপনার কী আত্মস্মমান বলে

কিছুই নেই? ওই মেয়েটা আপনাকে অপমান করছিল আর আপনি তা শুনছিলেন?” গৌড়ের

কথায় যে কতটা রাগ মিসে আছে তা স্পস্ট বোঝা যাচ্ছিল, “ ও তো কিছু ভুল বলেনি

বস,” মেঘনা এইভাবে ঠান্ডা উত্তর পাবে তা গৌড় মটেই আসা করেনি, “ মানে?” গৌড়

আর রাগ চেপে রাখতে পারছে না তাই জোরেই কথাটা বলল, এবার মেঘনা মুখে একটা

ব্যঙ্গময় হাসি দিয়ে বলল যে “ বস আমার সত্যিই কোন Standard নেই, Standard

জিনিসটা কী সেটা খায় না মাথায় দেয় তাই জানিনা, যদি জানতাম তাহলে সামান্য নিজের

পদের জন্য এইভাবে অপমানিত হতাম না, আসলে আজই না আর আমি একাই না আমার

মত যারা শিক্ষাগত জগ্যতায় পিছিয়ে তাদের প্রায়ই প্রতিনিয়ত এই সমাজের কাছে

অপমানিত, অবহেলিত হতে হচ্ছে, সমজে নিজের বয়সী যারা সুজগ পেয়ে এগিয়ে গেছে

তাদের সাথে তালে তাল মেলাতে হচ্ছে, পাছে যদি পিছিয়ে পরি বাকীদের ব্যঙ্গের শিকার হতে

হয়, যারা আপনাদের ভাসায় Well Educated তারা কাজে ভুল করতেই পারে কিন্তু

আমরা ভুল করলে আমাদের বলা হয় uneducated, আজ এই দেখুন না আমি কত


আসা নিয়ে অজানা এক জায়গায়, অজানা লোকেদের ভীরে এই বিলাসবহুল অজানা অফিসে

চাকরিতে


এসেছি তবে জান্তেই পারলাম না যে আমি কী কাজের জন্য নিযুক্ত হয়েছি? আথচো ওই মিস

রিমি যে আগে থেকেই আমার জায়গায় বসে গেল, আসলে বস আমি ওর কথায় আপমানিত হয়েনি

আমি আপমানিত তখন হয়েছি যখন আফিসে এসেই দেখলাম যে ও আমার জায়গায় বসে আছে,

এক নিশ্বাসে কথাগুল বলে থামল, গৌড় এবার কিছু বলতে যাবে তখনই কৌশিক রুমে নক করে

ভেতরে এসে বলল যে একটা খুব আর্জেন্ট ভিডিয় কনফারেন্স তাকে এটেন্ড করতে হবে।

এবার মেঘনা আমি বরং বাইরে অপেক্ষা করি বলে বাইরে চলে গেল।


একঘন্টা পর গৌড় তার ভিডিয় কনফারেন্স শেষ করেই কৌশিককে একটা ডকুমেন্ট দিল

বাইরে অপেক্ষারত মেঘনা কে দিয়ে সই করানোর জন্য, কৌশিক ডকুমেন্টটা দেখে অবাক

হয়ে চেয়ে একবার বসের দিকে তাকাল, তারপর আবার ডকুমেন্টটা ভালো করে দেখল, তবে

কী মিস মেঘনাকে বসের মনে ধরেছে?


তবে কী তাই জন্যই বস আমায় দিয়ে মিস মেঘনার প্রতিনিয়ত খোঁজ রাখত? তবে আজ থেকে

তার এই পার্টটাইম জবের থেকে সে মুক্তি ভেবেই সে ভীষণ খুশি, বসের চয়েস আছে মানতে হবে

মনে মনে কথাটা বললেও মুখে তার কিছুই ফুটল না, ডকুমেন্টটা হাতে নিয়ে বসের রুম

থেকেবেরিয়ে খুশি মনে waiting room এ বসে থাকা মেঘনাকে গিয়ে দিয়ে বলল যে ডকুমেন্টটা


ভলো করে পরে সই করে বসের ঘরে দিয়ে আস্তে,আর একটা ফোটকপি করে নিজের কাছেও

রেখে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে সে নিজের কাজে চলে গেল।


ওই দিকে রিমি তার প্রাপ্য শাস্তি মাথা পেতে নেবে বলেই ঠিক করেছে এটা না করলে যে তার

ফল কী হতে পারে সেটার ব্যপারেও সে যানে, অফিসের একে একে সবার অর্ডার মানতে মানতে

সে বিরক্ত হয়ে জাচ্ছে, একের পর একে তাকে শুধু ডেকেই জাচ্ছে, এদিকে ওদিকে ছুটতে ছুটতে

সে পাগলই হয়ে যাবে এবার।


রাগে ভেতরে ভেতরে গজগজ করছে রিমি আর পারছে না সে, তবে মায়ের কাছে শুনেছে গৌড় এই

কম্পানি আর বিশাল বড় সম্পত্তির মালিক হওয়ায় সাথে সাথে এই ব্যাবসায়ি জগতের Most

handsom & Charming Eliglble Bachler ও তাই ওকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে যাতে সে

গৌড়ের কাছে যেতে পারে, আর তাই সে সব কিছু সজ্য করছে মুখ বুজে, মুখে হাসিটা বজায়

রাখলেও মনে মনে সে মেঘনাকে নিজের শত্রু বানিয়ে ফেলেছে, তার এই অবস্থার জন্য সেই

দাই, আর সে তো কিছু ভুল বলেনি যা সত্যি তাই বলেছে, আর তাই আজকের জন্য প্রতিশোধ যে

সে নেবেই তাও মনে মনে ঠিক করেই ফেলেছে।


ও দিকে মেঘনা এখনোও নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেনা, সে ভুল দেখছে কিনা ভাবতেই

বারবার দেখছে ডকুমেন্টটা, ওতে স্পষ্ট করে লেখা আছে যে আজ থেকে ও গৌড়ের

অ্যাসিস্ট্যান্টের পদে নিযুক্ত করা হয়েছে, অ্যাসিস্ট্যান্ট !!! যা সে কল্পনাও করেনি, এই


কম্পানির বসের অ্যাসিস্ট্যান্ট………???? সে কী করবে বুঝতেই পারছিল না ,আনন্দে সে

রিতিমত লাফাতে শুরু করল, আনন্দে তার মুখ থেকে শুধু বারবার একটাই কথা বের হচ্ছিল।

“ হ্যাঁ, আমি পেরেছি, আমি পেরেছি, ধন্যবাদ ভগবান, আনন্দ এতটাই যে সুন্দর কাজল

রাঙ্গা চোখ ভরে আসছে, বারবার তার মায়ের কথা মনে পরছিল, তবে তার পথ চলা

এখনো অনেক বাকি সেটাও সে যানে, এবার থেকে সে আবসর সময় পড়াশোনা করে


গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করবে, নিজেদের বারিটা সারাবে, মা আর বাবাকে একটা ভালো জামাকাপড়

কিনে দেবে, আজ অবধি তো সে পড়িয়ে যা মাইনে পেত তাতে এর মধ্যে কোনটাই হত না, কিন্তু

আজ থেকে সে এসব কিছুই করতে পারবে কারোর সাহায্য ছাড়াই…… আরো কত কী ভাবছে সে,

বদ্ধ waiting room এ সে ভালো ভাবে নিজের খুশির প্রকাশ করতে পারছিল।


Waiting room সামনের দেওয়ালে একটা আয়না আছে যেটা গৌড়ের রুম থেকে Waiting room

এ যাওয়ার গোপন রাস্তা, আর এটা কেউ জানেনা, তবে গৌড় Waiting room এ থাকা

মেঘনাকে অনেক্ষন ধরেই দেখতে পাচ্ছে কারণ তার গোপন রাস্তা দরজাটাও যে কাঁচের

আয়নাও বটে। তবে মেঘনা গৌড়কে দেখতে পাচ্ছে না, এমনভাবেই করা দরজা ও আয়নাটা।

অনেক সময় যাদের গৌড় সন্দেহ করে বা নতুন কোন প্রজেক্ট সাইন করে তার আগে

ক্লাইন্টদের সে এই Waiting room এই নানান অজুহাতে অপেক্ষা করায় যাতে সে তাদের

প্ল্যানিং গুল জানতে পারে এবং পরে আসা বিপদ থেকে নিজের কম্পানিকে বাঁচাতে পারে,

কম্পানিতে আসার সাথে সাথেই এরকম অনেক পরিবর্তন সে করেছে যেটা তার বাবার পক্ষে

ভাবনার ও বাইরেছিল। আর এই আধুনিকত আর Smartness জন্য বোধহয় গৌড় খুব কম

সময়ে এখনকার সবচেয়ে কম বয়সী Perfect Businessman হয়ে উঠেছে।


Waiting room এ আনন্দে উচ্ছ্বাসিত মেঘনার কাণ্ড কারখানা দেখে গৌড় ভীষণ হাসছিল, মন

ভরে দেখছিল তার, আর ভাবছিল যে তার মেঘনার এই আনন্দ টা দেখার জন্যই সে কাল তাকে

জানাইনি যে সে তাকে অ্যাসিস্ট্যান্টএর পদে নিযুক্ত করেছে। সে পারত Appointment

Letter এ লিখে দিতে তবে এটা করলে যে সে এই মেঘনাকে দেখতেই পেতনা, এই হাসিটা যে সে

খুব মিস করত।


পর্ব - ৯


গোপন প্রেমের বহিরপ্রকাশ


তবে আজ যে মেঘনাকে এইভাবে তার এই সিধান্তের জন্য এতটা কষ্ট পেতে হবে তা বুঝলে সে

এই কাজটা কখনই করত না। শুধু নিজের স্বার্থের জন্য সে তারই অজান্তে মেঘনাকে কষ্ট

দিয়েছে এটা ভেবে গৌড়এর ভেতরটা ফেটেজাচ্ছিল। কিন্তু সে এটা চাইনি, সে ভেবেছিল অফিসে

এসেই সে মেঘনার হাতে তার অ্যাসিস্ট্যান্টএর পদে নিযুক্তকরনের ডকুমেন্টটা দিয়ে দেবে

কিন্তু এতকিছু হবে তা কে যানে? তাছারাও নিজের জায়গায় অন্যকাউকে দেখে যে মেঘনার মনে

এতটা খারাপ লাগবে এটাও তো সে ভেবে দেখেনি।

তাছারাও মেঘনা যে কথা বলে গেল, সেগুলোও তো ফেলার মতোনা, সত্যি এত সরল সাদা একটা

মেয়ে মেঘনা, ওকে দেখলে বঝাই জায়না যে ও এত কম বয়সে এই সমাজের কঠিন সত্যটা শুধু

জেনেছে তাইনা, সেটা মেনেও নিয়েছে, আজ যদি গৌড় না থাকত বা ও অন্যকোথাও চাকরির

সন্ধানে যেত তবে হয়েত আরো খারাপ কিছু ফেস করতে হত তাকে, কিন্তু মেয়েটা সাহস আছে

মানতে হবে আজ অবধি ওফিসের কেউ গৌড়ের সাথে এইভাবে কথা বলার দুঃসাহস দেখায়নি,

তাই তো গৌড় তাকে নিজের অ্যাসিস্ট্যান্ট বানানোর সিদ্ধান্তটা নিয়েছে, আজ অবধি এই


পদটার জন্য কত সুন্দরি মেয়েরা শুধুই স্বপ্ন দেখে বাস্তব টা যে অসম্ভব কারন গৌড়ের আজ

পর্যন্ত কনো অ্যাসিস্ট্যান্টের দরকার হয়েনি, এই পদটি শুধু সে শূন্য রেখেছিল শুধু মেঘনার

জন্য আজ যেটা বাস্তবে হতে চলেছে, ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে গৌড় এই সিদ্ধান্তটা নেয়নি, সে

মেঘনার কাজ দেখেছে আরালে সেদিন আর মেঘনাই পারে গৌড়ের মত চিন্তা ভাবনা করে কাজ

করতে । গৌড়ের অনুপস্থিতিতে একমাত্র মেঘনাই পারবে গৌড়ের মত সব ভার নিতে।


মেঘনা এবার নিজেকে শান্ত করে সোফায় বসাল ডকুমেন্টটা সাইন করবে বলে, তবে

ডকুমেন্টটা সাইন করতে গিয়ে তার মুখের হাসিটা কোথায় যেন উধাও হয়ে গেল, গম্ভীর ভাবে

ডকুমেন্টটা ভাল করে খেয়াল করে দেখল যে Authorized Singnature এ বসের সই আর তার

নীচে গত কালকের date দেওয়া আছে, আবার অবাক হয়েগেলো সে । উদাস হে ভাবতে লাগল যে

তবে কি কালকেই তার বস তকে অ্যাসিস্ট্যান্টএর পদে নিযুক্ত করার সিধান্ত নিয়ে

ফেলেছেন?? তাহলে আমায় আগে জানালেন না কেন??? কাল থেকে সে তার বসকে সে ভুল

ভেবেই চলেছে, আর আজ কী আমি একটু অপেক্ষা করতে পারলাম না? কেন আমি ধৈর্য হারিয়ে

ফেল্লাম? আর একটু অপেক্ষা করলেইতো আমার জায়গাটা কী তা জানতেই পেরে যেতাম, আর

তাছারাও আমি যে একটু আগেই বোকার মতে এতগুল কথা বসকে শুনি…য়ে…য়ে …………


না না না আর কিছু ভাবতে পারছেনা মেঘনা, মাথাটা দু হাত ধরে নিচু করে বসে আছে সে , সইটা

করার মত ক্ষমতা হচ্ছে না আর, হাত থেকে পেনটা পড়ে যাচ্ছে বুঝতে পেরেও সে পেনটা শক্ত

করে ধরতে পারল না, মাথাটা কেমন জানো ঘুরছে চারিদিক আন্ধকার হয়ে আসছে সে বুঝতে


পারছে, মাথা ঘুরে সে পরেই যেচ্ছিল মাটিতে ঠিক তখনই কোনএক ব্যক্তির শক্ত দুটো হাতের

স্পর্শ সে তার কোমরে আনুভব করল সে জানত যদিনা শক্ত দুটো হাত দিয়ে কেউ তাকে জড়িয়ে

ধরত, তবে সে পরেই যেত, কিন্তু কে জড়িয়ে ধরেছে সেটা বুঝতে পারার আগেই চোখটা বন্ধ

হয়ে গেল মেঘনার।।


মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকা ওব্দি ঠিকছিল কিন্তু মেঘনার হাত থেকে পেনটা পড়ে যেতেই আর

দেরী না করে দৌরে এসে মেঘনাকে না ধরলে আজ একটা অনেক বড় বিপদ হয়ে যেত, তবে এখন

আর কনো বিপদই মেঘনাকে স্পর্শ করতে পারবে না, গৌড় আছে যে তার পাশে।


অজ্ঞ্যান আবস্থায় থাকা মেঘনাকে কলে তুলে সোফায় শুইয়ে দিয়ে নিজে পাশে হাঁটু মুরে বসে

পড়ল গৌড় তারপর নিজের হাতে মেঘনার মুখের সামনে থেকে চুল গুল সরাতে সরাতে লাগল,

আর আস্তে আস্তে বলতে লাগল যে “ কে তুমি? কী ভাবে আর কেমন করে এলে আমার শুকিয়ে

যাওয়া জীবনে বসন্তের ছোঁয়া নিয়ে? কেন এলে??? তুমি কী জানো যেদিন তোমার কানেরটা

ফিরত নিয়ে তুমি চলে গেলে ট্যাস্কি করে আর ফিরেও দেখলে না যে এই অজানা মানুস্টা তোমার

ফিরে দেখাটা দেখার জন্য কতক্ষন ওখানে সে দাঁড়িয়েছিল? আচ্ছা তুমি কী এখনোও আমায়

সত্যি চিনতে পারোনি? তবে একটা কথা বলতেই হবে সে রাতের পর যে আমায় তুমি এতটা

পালটে দেবে তা ভাবিনি, সে রাতের পর থেকে পারিনি ভুলতে তোমায় কিন্তু সামনে আস্তেও

পারিনি, আর আজও পারছিনা কাছে ডাকতে তোমায় কিন্তু দূরে সরে থাকতেও পারছিনা, তোমায়

না পাওয়ার ব্যথা যে এত গভীর তা এখন বুঝলাম, কিন্তু তোমায় এত সহজে আমি নিজের

করতেও যে পারব না, তার আমাদের এক হতে হলে দুজনকেই অনেক কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে,


তোমায় নিজেকে দাড় করাতে হবে আর আমায় নিজেকে তোমার জগ্য করে তুলতে হবে, তবে এই

পরীক্ষায় তুমি একা নও আমি আছি তোমার সাথে,......মেঘনা I…………I………..L……..,

কথাটা পুরোটা শেষ করতেই পারল না, মেঘনা এবার একটু একটু করে চোখটা খুলছে দেখেই গৌড়

থেমে গেল। মেঘনা এবার আস্তে আস্তে উঠে বসল, সে উঠে বসকে দেখেই চমকে গেল…”বস’

আপনি?????? কিছু বলতে গিয়েও আর বলতে পারল না, গৌড় ততক্ষণে নিজের আবেগকে

শান্ত করিয়ে তাড়াতাড়ি উঠে পরেই নিজের গাম্ভীর্য বজায় রেখেই বলল


যে “ আপনার আস্তে দেরি হচ্ছিল বলে আমি আসলাম ডকুমেন্টটা আপনি পেয়েছেন কিনা

দেখতে কিন্তু এসে দেখলাম আপনি পড়ে জাচ্ছিলেন তাই……পরের কথা গুল লজ্জায় শুনতে

চাইনি তার বসকে থামিয়েই মেঘনা আস্তে গলায় বলল সরি, বস, আমার শরীরটা খারাপ

লাগছিল, আর হ্যাঁ কৌশিক স্যার আমায় ডকুমেন্টটা দিয়ে গেছে, মেঘনা কথা গুল শেষ করতেই

গৌড় তাকে আজকের মত সে বাড়ী যেতে পারে, কিন্তু কাল থেকে তাকে গৌড়ের আসার আগেই

অফিসে আস্তে হবে, আর গৌড়ের না আসা অব্দি তাকে গৌড়ের অফিস রুমেই তাকে অপেক্ষা

করতে হবে অন্য কোথাও সে বসে থাকবে না বলে সে মেঘনার হাত থেকে ডকুমেন্টটা নিয়ে চলে

গেল।


মেঘনা বেশ কিছুটা অবাক হয়ে মনে নানান রকমের প্রশ্ন নিয়ে Waiting room থেকে

বেরিয়ে এল, মেঘনা দেখে নীল তার কাছে এসে বলল যে সে অফিসে এসে আগে তাকেই

খুজেছে কিন্তু মেঘনাকে না দেখতে পেয়ে সে তার Dipartment এ চলে যায়, মেঘনার মুখটা

শুকন শুকন লাগছে দেখে সে প্রশ্ন করল কী হয়েছে? আর তুমি কী জানতে পারলে যে

তোমার পোষ্টটা কী আর আমি তো তোমার জায়গায় অন্যএক মেয়েকে দেখলাম, আবশ্য

পরে ওর সাথে যা হল সবটাই আমি শুনলাম, তবে তার পর এই আমি একটু সময় বের

করে ভাবলাম যে দেখি এবার তোমার দেখা পাই কিনা…নীলের এই বকবকানি শেষই হচ্ছে

না দেখে মেঘনা নীল কে ক্যান্টিন যাওয়ার কথা বলতেই নীল তো এক পায়ে রাজি, এক

টেবিলে মুখমুখি বসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে নীল আবার মেঘনা তার পষ্ট সম্পর্কে

জানতে চায়, মেঘনা ও আস্তে করে তার কফির কাপে চুমুক দিয়ে আস্তে আস্তে বলল “

আমায় বসের অ্যাসিস্ট্যান্টএর পদে নিযুক্ত করা হয়েছে, আজ থেকে আমি বসে পারসোনাল

অ্যাসিস্ট্যান্ট” কথাটা শোনার পর নীল কিচ্ছুক্ষন চুপ করে বলতে লাগল” কী অ্যাসিস্ট্যান্ট??

মানে পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট, দারাও দারাও তুমি আজ থেকে বসের পারসোনাল

অ্যাসিস্ট্যান্ট???


প্রশ্নটা শুনে মেঘনা একটু মুচকি হেসে বলল যে “ এতে এত আশ্চর্য হওয়ার কী আছে নীল

?? “ নীল আবার আবাক হয়ে গিয়ে মেঘনা বলল যে “ মানে তুমি কী কিছুই জানো

না??” তুমি কী বলতে চাইছ তা স্পষ্ট করে বলো, আমি সত্যি কিছু বুঝতে পারছিনা”

মেঘনা নীলের আগের কথায় বেশ বিরক্ত হয়েছে তা বোঝাই জাচ্ছে তার এই কথায়, নীল

আবার তার কফি কাপে চুমুক দিয়ে বলতে শুরু করল, যে বস! মানে Mr. Gourmoye

Banerjee, এই কম্পানির মালিক হয়েছে প্রায় তিন বছরেরও বেশি হয়েছে তবে আজ অবধি

সে তার অ্যাসিস্ট্যান্টের পদে কাউকেই বসায়নি, কত সুন্দরী সুন্দরী মেয়েরা শত চেস্টার পর

ও বসের অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়ে উঠতে পারিনি, এক কথায় বলতে গেলে বস কাউকেই এই


জায়গাটা দেয়নি যেটা তুমি পেয়েছ, তবে একটা কথা আরোও তোমায় জানিয়ে দিই যে এটা

Compitition এর জায়গা মেঘনা, উচু পোস্টে যাওয়ার জন্য সবাই কষ্ট করে তবে তুমি যেই

জায়গাটা এত সহজেই পেয়ে গেলে সেই জায়গাটা ধরে রাখতে হলে তোমায় ভীষণ কঠিন হতে হবে,

না হলে কিন্তু বিপদের সম্মুখীন হতে তুমি পারবে না। আমি অবশ্য আছি তোমার পাশে, তুমি

চিন্তা করো না,” । এতক্ষন কথা গুল শুনে মেঘনা বলল “ Thank You নীল, আমি সত্যি এই

কথাগুল জানতাম না, আর আমি ঠিক নিজেকে তৈরি করে নেব দেখ, তবে তুমি পাশে আছো জেনে

ভালো লাগল,” মেঘনা মেঘনার কথায় সম্মতি জানিয়ে নিজের হাত মেঘনার হাতের ওপর রেখে

শুধু একটা কথাই বলল “ সব সময়ে আছি তোমার পাশে। মেঘনা ও নীল একে অপরের দিকে

তাকিয়ে আছে, নীল ডুবে যেতে চাইছে ওই কালো দুটি চোখের গভীরে। কিছুক্ষণ পর নীলের

ফোনের রিঙ্গে দুজনে বাস্তবে ফিরল। নীল ফোনটা ধরে জানতে পারল যে আজকের মত তারও

ছুটি, আনন্দে সে হাসতে হাসতে ফোনটা রেখে মেঘনার দিকে তাকিয়ে বলল “ চল আজ আমারো

ছুটি হয়ে গেছে তোমায় ছেরে দিয়ে আসি, মেঘনা প্রথমে একটু কিন্তু কিন্তু করলেও নীলের


জেদের কাছে হার শিকার করলে তারা দুজনেই উঠে পড়ে Parking Lot এ যাওয়ার জন্য। ওখান

থেকে নীল তার বাইকটা নিয়েই মেঘনাকে নিয়ে যাবে।


এদিকে নীল-মেঘনার কথা গুল পুরোটাই রিমি যে কিনা অন্যেকজনের খাবার নিতে এসে মেঘনাকে

দেখে ওদের অজান্তেই পাশের টেবিলে বসে শুনছিল এতক্ষন ধরে, ‘কী? বসের অ্যাসিস্ট্যান্ট?

যে পদটি এখনও অব্দি কেউ নিতে পারল না সে পদটি কিনা এই মেয়েটা নিয়ে নিল?? কী এমন

আছে মেয়েটার মধ্যে? ওর থেকে লাখ গুনে আমায় দেখতে ভালো, তবে ওকে এই পদটা থেকে

হাটানো আমার পক্ষে খুব একটা কঠিন ব্যপার নয়, শুধু চাই একটা পারফেক্ট প্ল্যান, অবশ্য

একদিকে ভালই হল অন্য কোন মেয়ে হলে ব্যপারটা এতটাও সহজ হত না, এই মেয়েটা আমার

টক্করেরই না, একে হারাতে আমার এক মিনিটও সময় লাগবে না, তবে অপেক্ষা আমায়

করতেই হবে ভালো সুজগের।” মনে মনেই ভেবেনিল সে।


ওদিকে মেঘনা ও নীলকে একসাথে হাতে হাত রেখে দেখে নিল গৌড় সে সেই সময়ে ওখান দিয়েই

যাচ্ছিল, মেঘনা ও নীলকে Parking Lot এর দিকে যেতে দেখে সে পকেট থেকে ফোনটা বার করে

একটা ফোনকল সেরে নিয়ে কৌশিক বলল যে অফিসের বাকি কাজ তাকে সামলে নিতে তার আর

ভাল লাগছে না তাই সে বাড়ি জাচ্ছে, বলে সেও Parking Lot এর দিকে এগোল।


পর্ব - ১০


শেষমেশ না হয় চোরটাই ধরা দেবে


নীল নিজের বাইকটা বার করতে যাবে ঠিক এই সময় নীলের পকেটে রাখা ফোনটা বেজে উঠল

ফোনটা অ্য়টেন্ড করতেই কিছুটা হতাস হয়ে গেল নীল, সে শুধু ঠিকআছে বলে ফোনটা রেখে

উদাস ভাবে মেঘনার দিকে চেয়ে সে বলল যে তার সিনিয়র একবার তাকে ডাকছে খুব জ্রুরি

একটা কাজের জন্য আজ আর তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা হবে না, নীল কথাগুল বলার সময় যে খুব

লজ্যিত হচ্ছিল তা বুঝতে পেরেই মেঘনা মখে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে যে “ তুমি কিছু চিন্তা

করোনা, আমি খারাপ মনে করিনি, এই কাজের জন্যই তো আমারা এখানে এসেছি, আর

দায়িত্বটা সবার আগে,” মেঘনা কিছু মনে করেনি দেখে সে একটু নিশ্চিন্ত হলেও সে চিন্তা

করছিল যে মেঘনা বাড়ি কিভাবে যাবে?? তাই সে মনের ভাবনাটা মুখে এনেই ফেলল “ কিন্তু তুমি

বাড়ি কি ভাবে যাবে? না আমি কী ক্যাব বুক করে দেব?” মেঘনা তো কথাটা শুনে আবার হেসে

ফেলল “ কি ক্যাব আর কিছুনা? দেখ নীল আমি এই কাজে এসেছি সম্পূর্ণ নিজের ভরসায়, তুমি

আমায় নিয়ে এত ভাবো তা জেনে ভালো লাগল তবে আমি একাই যাতায়াত করতে পারব, আর ওই

যে বললে আমায় অনেক কিছু শিখতে হবে , তাহলে শেখাটা আজ থেকেই শুরু হোক!! মেঘনার

কথায় নীল তো হেসেই গরিয়ে যাচ্ছে, “ ঠিক আছে সাবধানে যাও আমি তাহলে ওপরে যাই,”

মেঘনা ও ঘার নেড়ে সম্মতি দিতেই নীল চলে গেল।


মেঘনা ও অফিস থেকে বেড়িয়ে ম্যান রোডে এসে ট্যাস্কির জন্য অপেক্ষা করছে, একটা

ট্যাস্কির দেখা পাওয়ায় মেঘনার মন একটু সস্তি পেল, ট্যাস্কি এসে তার সামনে আসলে সে

তার বাড়ির সামনা সামনি একটা জায়গা বলতেই ট্যাস্কির ড্রাইভারটা তাকে বলল হ্যাঁ সে

যাবে, মেঘনা আরোও একটু সস্তি পেল যে সে এবার নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে পারবে, মুখে

একটু হাসি নিয়েই সে ট্যাস্কিতে উঠতে যাবে তখনই সেই একজন


কোর্ট পরা ভদ্রলোক ট্যাস্কিটির সামনে এসে বলে “ খুব আর্জেন্ট আছে আর তার গাড়ীটা

খারাপ হয়ে জেছে বলে সেও মেঘনার বাড়ির সামনা সামনি ওই একইজায়গা বলে যেটা মেঘনা

একটু আগেই বলেছে,” লোকটির গলাটা সে চিনতে পারে তাই সে আর ঘুরে দেখার সাহস দেখায়না,

তবে ট্যাস্কির ড্রাইভারটি লোকটিকে বলে যে “দাদা ওই ম্যাডামটি আগে এসেছেন তাই,”

ড্রাইভারের কথা শেষ হতেই দিল না মেঘনা সে ড্রাইভারটিকে বলল যে সে ওনার নিশ্চয়ই তারা

আছে আপনি চলুন, আমি না হয় ওনার সাথে ট্যাস্কিটা শেয়ার করে নেব।” মেঘনার কথায়

অবাক হয়ে লোকটি তাকে দেখেই যাচ্ছে, তবে ড্রাইভারটিকে তাদের গাড়ীতে তুলে নিয়ে গাড়ি

স্টার্ট দিল।


দুজন একসাথে বসে ঠিকই কিন্তু কেউ কোন কথা বলছে না, লোকটি কিন্তু আর চোখে

মেঘনাকে দেখেই চলেছে। মেঘনার মনে যে তখন কত প্রশ্নের ঝড় উঠছে তা সেই যানে, কীভাবে

সে তার বসকে এতগুল কথাশোনাল? যদিও তার কোনও দোষই ছিল না। আর আরোও একটা

ভাব্বার বিষয় যে, যেই পোস্টটি এতদিন ধরে ফাঁকা ছিল সেটায় তার বস তাকে কেন বসালো??

ভাবতে ভাবতে সে তার গন্তব্যস্থানে এসে গেছে সেটা বুঝতে পেরেই ট্যাস্কি থেকে নেমে ভারা

দিয়ে বাড়ির দিকে চলে গেল।


রাত ৮ টা নীল অফিসের সব কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরল। তবে তার মন আজ ভালো নেই।

ছেলে যে বেশ একটা উদাসহীনতায় ছিল তা নীলের মা খাবার টেবিলে ছেলেকে চুপচাপ খেয়ে উঠে

যেতেই বুঝতে পারলেও সে ছেলেকে কিছুই জিজ্ঞ্যেস করতে পারল না এই ভেবে যে অফিসে

প্রথম দিকে একটু চাপ থাকে তবে ধীরে ধীরে তা ঠিক হয়ে যাবে।

নীল সারাদিনের কাজের জন্য এতটাই ক্লান্ত যে এতক্ষনে তার ঘুমিয়ে পরার কথা, কিন্তু ঘুম

তার কিছুতেই আসছে না, চোখ বন্ধ করলেই মেঘনার মিষ্টি মুখটা মনে পরছে, তবে


কী সে তাকে?? ভাবতেই লজ্যা পেল নীল, ২৪ বছর বয়সী নিলের প্রথম ভালোলাগা, তবে

অনেকেই নীল কে প্রোপজ করেছিল কিন্তু নীল তাদের কাউকেই পাত্তা দেয়নি, কারন সে

রঙচঙ মাখা, জিন্স-টপ পরা মেয়ে চায়না, সে চায় মিষ্টি কিউট, শাড়ী- শালোয়ার পরা মেয়ে, আর

নীলের পচ্ছন্দ কে তার বাবা-মা যে মানা করবে না তাও সে জানত। তবে সে আগে আর একটু

নিজেকে গুছিয়ে নিক, আর তাছারাও সে তো যানে না মেঘনার জীবনে কেউ আছে কিনা? তার

মনের কথাওতো জানতে হবে। তাই সে ঠিক করল সে আগে ঠিক করে বুঝুক যে এটা ভালোলাগা

না ভালোবাসা, সময় দেবে সে আরোও মেঘনাকে জানতে, সে কেমন মেয়ে বা সে এত সরল - সাদা

হয়েও কেন এই চাকরির জায়গায় নিজেকে নিয়ে এসেছে? এইসব ভাবতে ভাবতে ঘুমে আচ্ছোন্ন

হয়ে গেল নীল।


মেঘনা নেবে যেতেই মেঘনার পাশে থাকা লোকটিও নেমে গেল ভারা দিয়ে, তবে সে সামনের দিকে

না গিয়ে পিছন দিকে তাদেরকে ফোলো করে আসা গারীটিতে উঠে পরল।

ট্যাস্কির ড্রাইভারটি কিছুই বঝতে পারল না, “ লোকটির গাড়ি যদি ঠিকই থাকবে তবে

সে কেন ট্যাস্কিতে উঠল? আর গারীটিই বা কেন তাদের ফোলো করতে করতে এখান অব্দি

আসল?”উফফ……………… আর কিছু ভেবে লাভ নেই তার ভারা নিয়ে দরকার মনে মনে বলে ট্যাস্কি স্টার্ট দিল। মেঘনা বাড়ি ফিরে কোনরকমে মুখে কিছু দিয়েই নিজের ঘরে চলে গেল।

মেয়ের মনটা ভালো নেই তার বাবা আন্দাজ করতেই মেয়েকে তাড়াতাড়ি শুয়ে পরতে বলে।


মেঘনার নিজেকে খুবই ছোট বলে মনে হচ্ছিল, তবে সে ভাবছিল যে বস কীভাবে

জানতে পারল তার মাথা ঘুরছে? শুধু তাই নয় সে মাথা ঘুরে পড়ে যাচ্ছিল সেটা বস

কীভাবে জানল যে বস সঠিক সময় এসে পড়ল ? আর আমি বুঝতে পারছিলাম যে বস

কিছু একটা যেন বলছিল আমায় , কিন্তু কী সেটা বুঝতে পারিনি। বতে আর যাই হোক বসের

প্রতি আমার চিন্তাটা ভুল প্রমানিত হল আজ, তবে নীল ও খুব ভালো ছেলে, আমি ওকে বন্ধুর

মতই ভাবি।


তবে আমি অপেক্ষা করে আছি সেই ছেলেটার যার সাগরের মত চোখদুটো অনেক কিছু বলছিল,

অবশ্য তাকেও তো সেদিন অনেক কিছু বলেছি, আর কী দেখা হবে না ওর সাথে? সেদিন

ট্যাস্কির লুকিং গ্লাসে স্পষ্ট দেখতে পারছিলাম যে আমার দিকেই সে তাকিয়ে আছে, আমি

আর লজ্যায় পেছন ঘুরে দেখতে পারিনি, আর তাছারোও তো জামাইবাবু ছিল আমার সাথে ওইদিন

কীভাবেই বা দেখতাম ওকে ? ওকি রাগ করেছে আমার ওপর? ভেবেছে মেয়েটা তো পাত্তাই

দিলনা তাই আর মেয়েটার সামনে আসবে কনদিন? একদিকে আমি ওর জায়গায় থাকলে হয়েতো

এটাই করতাম। মেঘনা এখন যার কথা ভাবছে সে যে ওর কাছেই আছে তার কোন ধারনাই নেই

ওর, সেও যে তাকেই চায় আর এই কথাটা যে তার মুখ থেকেই শুনবে একদিন সেই দিনটারই

অপেক্ষা করছে সে, লুকোচুরি খেলছে সে, সারাজীবন তাকে পাশে পাওয়ার জন্য যে মেঘনাকে তার

মনের চোরটাকে ধরে ফেলতেই হবে, আর মেঘনা না পড়লে শেষমেশ না হয় চোরটাই ধরা দেবে

তার কাছে।


মেঘনা কি পরবে চিনতে তার আসল মানুষটিকে?? নাকি নিজের অজান্তে সে ভুল দিকে পারি দেবে?? আর 

অন্যদিকে


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance