Priyanka Dutta

Romance Tragedy Classics

4.3  

Priyanka Dutta

Romance Tragedy Classics

দীপ্তি।

দীপ্তি।

4 mins
333


জটিলতা টা বড়ো অবাধ্য কিন্তু বড্ডো বেশি অসহায়। দীপ্তি, মনের পুরোনো সব কালি, ময়লা সরিয়ে ফেলেছে। হয়তো নিজেকে মিথ্যে বলে, যে সব যেন চোখের সামনে পুড়ে ছাই আজ , হৃদয় এর দাহকার্য?-তা নিঃসন্দেহে অদৃশ্য, চোখে দেখা যায় না অনুভব করা যায় শুধু,ভাগ বাটোয়ারা করা যায় না , বড্ডো একাকী।নিজের ক্যারিয়ার কে ফোকাস করে দীপ্তি নিজেকে ব্যস্ত করে ফেলেছে, এতো টা ব্যস্ত যে দিন শেষ এ পিঠ টা বিছানায় পাতলেও যাতে এক সেকেন্ড এর জন্য-ও চোখ টা খোলা না থাকে, দেহের ক্লান্তি টাও যেন তার ছক কষা ব্যস্ততার অংশ।ভালোবাসা, যত টা রূপকথা বৃষ্টির র মতো সুন্দর ঠিক ততো টাই বাস্তব এর প্রখর রোদ।ভালোবেসেছিলো দীপ্তি, একদিন দুদিন এর ভালোবাসা নয়, সাবেগী ভালোবাসা।কিন্তু সেই প্রেম ওর পরিস্ফুট হৃদয় টাকে দমিয়ে দিয়েছে, গুড়িয়ে দিয়েছে। খুব বোকা মেয়েটা হয়তো বুদ্ধিমান ও তাই ভুল বয়স এ রঙীন চশমা পড়লেও, মন শক্ত করে সেই চশমা টা খুলেও ফেলেছে। খুব ভুগেছে ওই বাচ্চা হৃদয় টা, দেখেছি আমি!বাড়ির মানুষ গুলো কে মিথ্যে বলার অপরাধ, তাঁদের রাগ করা টা স্বাভাবিক ছিল, রাগ এর সবরকম বহিঃপ্রকাশ, যাকে ভালবাসত তার নোংরা কিছু হ্যারাসমেন্ট, ছলনা, বিস্বাসঘাতকতা, কি আশ্চর্য ওই মেয়েটার মুখ দিয়ে একটা কথা বেরোয় নি। হৃদয় টা কিসের তৈরী ওর? সে সব কাটিয়ে উঠেছে নিজেই, এতো টা আত্মকেন্দ্রিক কি করে কেউ হতে পারে? তবে কি এগুলো ওর ভবিষ্যত এ জটিলতা আনবে?


বয়স টা খুব কম দীপ্তির এই তো স্কুলের গন্ডি টা পেরিয়েছে মাত্র, ওকে এতো focused দেখি নি কখনো, কখনো বুঝি নি ওই নরম গোলাপি গাল গুলো শক্ত খোলস টাকে আড়াল করে রেখেছে। আমার কাছে বসে অনেক মনের কোলাহল গুলো বলতে চায়, বলেও, কিন্তু সব কেমন যেন ভাঙাচোরা, কি শক্ত শক্ত শব্দ বলে, খুব অলংকারিক কিন্তু ও মন টা মেলে ধরতে গেলে ই যেন খেই হারিয়ে ফেলে কেমন। ভাঙাচোরা কথা গুলো জুড়ে বুঝি ও আর পাঁচ টা মেয়ের মতো না, কেমন যেন ছেলেটি ভান করে,লক্ষ্য টা খুব বড়ো ওর, শুনে অবাক হলাম ওর কোনো নির্দিষ্ট dream job বা সেরম কিছু নেই, একামাত্র লক্ষ্য নাকি বুড়ো বয়স এ বাবা মাকে রাজরানী করে রাখবে, দিদি র সব ছোট ছোট শখ পূর্ণ করবে। এটাই নাকি ওর জীবন এর একমাত্র লক্ষ্য, এই স্বপ্ন টা ওকে নাকি ছুঁতেই হবে।


বড্ডো জটিল মেয়ে টা, খুব  অভিমান ওর।বন্ধু বান্ধব ও নেই সেরকম। একাই থাকে, গান শোনে,গান করে, লেখালেখি করে। সত্যি বলতে ওই এলোমেলো বাক্য গুলো নিজের মতো সাজিয়ে দেখেছি, ওর লেখা দিয়ে মুক্ত ঝরে।

   গত ৫ থেকে ৬ মাস ওকে এতো খুশি দেখি নি। মন খুলে হাঁসে এখন। মনে মনে ভগবানকে ধন্যবাদ না জানিয়ে পারলাম না, কি অদ্ভুত ভাবে আমাকে সব বলে যায় অবলীলায়,ওর নাকি অনলাইন এ একটা খুব ভালো বন্ধু হয়েছে, খুব মিল ওর সাথে।পুরোনো ভুলে নতুন কে আগমন করছে, বুঝলাম। তা বেশ ভালো লাগলো যে আমি যেরকম ভেবেছিলামওতো তা জটিল তবে নয় দীপ্তি। পুরোনো শেষ হয়েছে বহু বছর হলো, ও যে ক্ষত গুলো নিজে সরিয়ে নিয়েছে সেটাই কজন পারে। ভয় হলো, আবার যদি মেয়ে তা কষ্ট পায়। কিন্তু না, সৌনক ওর নতুন বন্ধু, ঠিক যেনএকে অন্যের পরিপূরক, যে দীপ্তি কে আমি জানতাম, শক্ত কঠোর দীপ্তি, সৌনক এর কাছে এসে সে যেন পুরো বিপরীত , খোলস এর ভিতর লুকিয়ে রাখা বাচ্চা টা। ওর জটিলতা, trust issues, ভয় সব কি সুন্দর গুছিয়ে দিয়েছে সৌনক, ওর কথা গুলো গুলো যদি মাটির পাত্র র উপর ভাঙাচোরা দাগ হয় সৌনকএর ছোঁয়া যেন Japanese art,Kintsugi। ভাঙা দাগ গুলো সোনা দিয়ে বাঁধানো যেন। ওকে বাচ্চার মতো যত্ন করে বড়ো করছে, ইতিহাস, বিজ্ঞান, গান, সিনেমা সবেতে ওর নতুন করে ভালোবাসা জন্মানোর চেষ্টা করছে, ছোট বয়সএর অধিকাংশ টা ভাঙাচোরা বুক, আর কুলুপ এটা মুখ নিয়ে কাটাতে গিয়ে দীপ্তি এই আনন্দ গুলো থেকে বঞ্চিত ছিল, সেটা সৌনক কে বলে দিতে হয় নি, কি নিদারুন ভাবে দায়িত্ব নিয়েছে ওকে বড়ো করার, সবার অজান্তে।

বছর খানেক গেলো, instagram এর স্টোরি তে ওদের couple পিক দেখে মন টা যেন কি শান্তি পেলো, খুব খুশি

ওরা, তবে? সত্যি ভালোবাসা এক্সিস্ট করে, সময় আর মানুষ গুলো উপযুক্ত হতে হয়।


এখন দীপ্তি আর তেমন আসে না, ফোন ও করে না, পরশু আমাকে হঠাৎ ফোন করে, ওর গলাটা শুনে বুক টা কেমন শীতল হয়ে গেলো। আমি যেন ওর কোথায় সেই ভাঙাচোরা সুর টা শুনতে পেলাম,সাহস হয় নি জিজ্ঞাস করার, কিন্তু অনুভব করতে সময় লাগে নি। অনেক ক্ষণ কথা হওয়ার পর, অনেক সাহস জুগিয়ে বললাম সৌনক কেমন আছে? শুধুমাত্র সিওর হতে যে ওর জোড়া লাগা টুকরো কালো কাছ এর মনটা সুরক্ষিত, অটুট কিনা।কি আশ্চর্য, ও কেমন এড়িয়ে গেলো, অবশ্য জানালো যে সৌনক আর ও ভালো আছে । মন টা শান্তি পেলো।সেদিন সারারাত ঘুমাতে পারি নি, ওর শেষ প্রশ্নগুলো যেন ফাঁকা ঘরে শুন্য বুকে বাজছিলো, কেন ও জানতে চাইলো যে এই ভালোবাসা জিনিস টা আদেও এক্সিস্ট করে কিনা? আর যদি exist করে তবে কথা টার মতো জগৎ টা সুন্দর না কেন, অরবর খানি টিউলিপ আর গোলাপ এর ভিড় এ কাল্ন্ত, তবে ভেতর টা কাঁটায় ভর্তি কেন? ভালো কি শুধু বাসতে হয়? উল্টে পাওয়ার আশা করতে নেই?ভালোবাসা যদি নতুন করে বাঁচতে শেখায় তবে চোখের জলে আর নিঃশব্দের চিৎকারে মানুষ কে তিলে তিলে মেরে ফেলে কেন?


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance