অস্বাভাবিক যখন স্বাভাবিক
অস্বাভাবিক যখন স্বাভাবিক
ধরেন আপনি এমন জায়গায় আছেন যেখানে প্রত্যেকদিন আপনাকে কুকুর কামড়াবে।আর এটা আশীর্বাদ ধরা হয়।আর জলাতঙ্ক হলে বলে আপনি তো সৃষ্টিকর্তার রহমত পেলেন।আর জলাতঙ্ক হলে ওকে মেরে ফেলে আর বলে ও শহীদ হয়েছে।এরকম আজব ঘটনা ঘটতে থাকে নাবপা গ্রামে।
গ্রামের আকাশ সব সময় কালো থাকে।আশপাশে ভূত প্রেতাত্মা শুধু ঘুরঘুর করে।
এই গ্রাম আগে ছিল না।আগে এটা ছিল অনেক বড় কবরস্থান।কবরস্থানের পিছনে ছিল ভয়ংকর জংগল।একদিন রাতে কবরস্থানের দরজা ভেংগে শিয়াল,বাগদশা,কুকুর,বেজি,বাঘ,ভাল্লুক মৃতদেহ চাবিয়ে চাবিয়ে খাওয়া শুরু করলো।আসলে সেই সময় ছিল চন্দ্রগ্রহণ।এই চন্দ্রগ্রহণের রাতে যারা বের হয়েছে তাদের মধ্যেই সব ভূত-প্রেত ভড় করে।আর এই ভূত-প্রেতাত্নারাই গ্রাম প্রতিষ্ঠা করে এসব কাজ করতে থাকে।
আর এসবের শুরু হয় যখন এই পশুরা বাচ্চা দেয়।সেই সব বাচ্চা সবগুলাই শয়তান হয়।পুরো গ্রাম শয়তানের দখলে চলে যায়।
গ্রামের কথা বলতে গেলে আশে পাশে সব মিথ্যা আভাস।পুরো গ্রাম কেমন যেনো দুলছে।কেউ সোজা ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না।
প্রত্যেকটা বাসা দোলকের মতো ঘুরছে।মানুষগুলো কখনো উড়ছে,কখনো কখনো ভাসছে।কিন্তু হাটছে না।ঘড়ির সব কাটা শুধু ঘুরছেই।কিন্তু স্বাভাবিক না।১ থেকে একবারে ১০ এ যায়।আবার ৮ এ আসে।কোনো ঠিক নেই।মানুষ গুলোর চেহারা সব অদ্ভুত।চোখ আছে চোখের হাড় শুধু।আবার এক চোখ থাকলেও আরেক চোখ বল বানিয়ে খেলছে।পুরো গ্রাম চালায় পশু-পাখি।মুরগীর কথা শুনে চলতে হয় ঈগলকে,গরুর কথা শুনতে হয় বাঘকে,তেলাপোকার কথা শুনতে হয় বাজপাখিকে।
তারা বাইরের কিছু খায় না।ক্ষুধা লাগলে নিজের কিডনী,হাত,মাথা,হৃৎপিন্ড চাবিয়ে চাবিয়ে খায়।
সুখ তাদের কাছে কোনদিন ছিল না।তারা একটা সময়ই সুখী হয় যখন কেউ কেউ মারামারি করে।আর কেউ মারামারি করতে গেলে সবাই মিলে ওই মারামারি আরও বাড়িয়ে দেয়।
এই গ্রামে পর্যটক হিসেবে আসে একজন লোক,যার নাম করিম।সে এই অবস্থা দেখে পুলিশকে ফোন দেয়।পুলিশ আরও তাকে থাপ্পড় দিয়ে চলে যায়।আরেক জন লোক এসে পুলিশকে বোঝায় আর তারপরই পুলিশ চলে যায়।
আর যে পুলিশকে বোঝায় সে হলো ডাঃ শফিক।আর এই গ্রামের অস্তিত্বই নেই।এই গ্রাম আসলে নাবপা পাগলাগারদ।
তখনকার সময় পড়ালেখার চাপ ছিল অনেক।পড়ালেখায় ভালো করানোর জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হইতো।ডাক্তার ব্রেন ইম্রুভমেন্টের জন্য অনেক ড্রাগ দিতো।এই ড্রাগের সাইড ইফেক্ট হিসেবে অনেক হ্যালুসিনেশন দেখতো।আর এই হ্যালুসিনেশনের জন্য মানুষকে উড়তে আর ভাসতে দেখে,ঘড়ি এরকম দেখে।
আবার অনেকে অনেক পড়ালেখা করতো।কিন্তু কোনবারই তার ফ্যামিলির কেউ খুশী হতো না।আস্তে আস্তে তাদের পরিবারের বোঝা ভাবতে শুরু করলো।পরিবারের সবার এটেনশন পাওয়ার জন্য আস্তে আস্তে নিজেদের হাত পা কামড়াতে থাকে।
এইসব পড়ার টেনশনে অনেকের ঘুম হয় না।পড়ে তারা এই কবরস্থানের কথা ভাবে,কুকুরের কথা ভাবে।
আর আকাশের কথা কালো বলতে সিলিং কালো।ভূত-প্রেতাত্নার কথা বলতে তাদের ভিতরে যে অন্ধকার,হতাশা,কষ্ট,দুর্দশা,অশান্তি ওইসবই বলে এই দুনিয়া অনেক খারাপ।তোমাকে সব সময় কষ্ট দিবে,তুলনা করবে।ভালো সময়ে কখনো সাহায্য করবে না,কিন্তু দুঃসময়ে খোটা দিবে।একা দুনিয়া মতে এসেছো আর একাই যেতে হবে।কিন্তু তুমি এইসব না মনে করে মানুষ কি বলল তাই ভেবে টেনশন করে জীবন নষ্ট করে দিবে।

