Sanjoy Roy

Drama Romance Tragedy

4.0  

Sanjoy Roy

Drama Romance Tragedy

অজয় ও ধ্রিতিপ্রিয়া  💕

অজয় ও ধ্রিতিপ্রিয়া  💕

6 mins
204


সম্পূর্ণ পড়ার অনুরোধ রইলো🙏💕 

     💕অজয় ও ধ্রিতিপ্রিয়া 💕


 অজয় কে কিছুদিন আগে একটা মেয়ে ফেসবুক এ ফ্রেন্ড রিকুইয়েস্ট দিয়েছে, যদিও মেয়েটার প্রোফাইলে চেক করলে বোঝা যায় যে মেয়েটা বড়লোক ঘরের, মেয়েটার পরিবার থেকে অজয়ের স্টাটাস তুলনাই হয়না, মেয়েটার পোশাক পরিচ্ছদ সবকিছুরেই ধরণ অনেকটা অজয়ের থেকে আলাদা বলাই বাহুল্য । যাইহোক এইসব পরে মেয়েটির নাম ছিল ধ্রিতিপ্রিয়া ।ফ্রেন্ড রিকুইয়েস্ট আসার পর অজয় অনেকক্ষণ তার প্রোফাইলে তাকিয়ে থাকে আর স্ক্রল করতে থাকে প্রায় ২০-২৫ মিনিট মত স্ক্রল করতেই থাকে, তারপর রিকুইয়েস্ট আ্যকসেপ্ট করে।

আ্যকসেপ্ট করার পর আরো কিছুক্ষণ তার প্রোফাইলেই স্ক্রল করতেই থাকে মেয়েটার প্রতিটা ছবি-ই দেখে কিন্তু রিয়েক্ট বা লাইক করে না একনজরে দেখেই যায়, মনে হয় সে প্রথম কোনো মেয়ে দেখতেছে । সবশেষে তার প্রফাইল ঘাটা শেষ হওয়ার মোবাইল ডাটা বন্ধ করে এবং কাজ করতে লাগে । বিকেল বেলা ওইদিনে ফেসবুক ওন করতেই দেখে মেয়েটা আরো একটা নতুন ছবি আপলোড করেছে, অজয় যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলো সেই মুহূর্তে এবারে সে মেয়েটার ছবিতে একটা লাভ রিয়েক্ট করলো কিন্তু কোনো মন্তব্য (কমেন্ট) করলো না । কিছুক্ষণ পর অজয় মেয়েটিকে মেসেজ দেওয়ার জন্য মেসেনজার এ গিয়ে 'হাই' (Hi) টেক্সট করে কিন্তু ভাবছিলো মেসেজ কি দেবে না দিবেনা কারণ মেয়েটি যদি তাকে ব্লক করে দেয়। আর ব্লক করলে অজয় তার ছবি পযন্ত দেখতে পাবেনা,( Hi) 'হাই'লেখা টা টেক্সট করেছে ওইভাবেই মেসেনজার এ ধরে আছে,,,প্রায় ৫ মিনিট ওইভাবে ছিলো লেখাটা তারপর এক এক করে ক্যান্সেল করলো লেখাটা । 

অজয় ভাবলো বড়লোকের মেয়ে ফ্রেন্ড রিকুইয়েস্ট ও নিজেই দিয়েছে তারপর আমি যদি তাকে মেসেজ দিই সে বিরক্ত হয়ে হয়তো সাথেই সাথেই ব্লক করবে ।যদিও একটা মেসেজ-ই দিতে চেয়েছিলো কিন্তু যদি ওই একটা মেসেজেই ( বার্তা) তার বিরক্তিকর মনে হয় ।

যাক কি কান্ড ৫ মিনিট পর নিজেই মেয়েটি '(Hi) হাই' দিলো।

অজয় তো হতভম্ব! তারপর মেয়েটির কাছ থেকে আবার একটি মেসেজ আসলো বলেছে 'আমি কিছুক্ষণ আগে থেকেই লক্ষ করেছিলাম তুমি কিছু বলতে চেয়েছো আমায়, কারণ মেসেনজার এ টাইপিং (Ajay typing..) লেখাটা দেখতে পেয়েছিলাম, কিন্তু প্রায় ৫ মিনিট হয়ে গেলো এখনো অবধি কোনো কিছুই আসলো না তাই আমি নিজেই (Hi )হাই দিলাম'' 

অজয় তখনো কিছু লিখলো না, কারণ সে ভাবতেও পারছে না এই সবকিছু স্বপ্ন না সত্যি । এবার ভাবলো সে নিশ্চয় কোনো ছেলে মেয়ের ছবি দিয়ে প্রোফাইল বানিয়ে(Fake I'd) তাকে বোকা বানাচ্ছে, এরূপ ভাবতে না ভাবতেই ভিডিও কল করে ফেললো । তক্ষনাৎ অজয় ও কল রিসিভ করলো কারন সে ভেবেছিলো কোনো ছেলে তাকে বিভ্রান্ত করছে হয়তো তাই, কিন্তু কি উদ্ভুদ কান্ড ছবিতে যে মেয়েটিকে দেখেছে সে স্বয়ং একদম জলজ্যান্ত । মেয়েটি হেলো বলে সন্মোধন করলো অজয় ততলার মত করে হেলো বলতে থাকলো.... মেয়েটি তার ততলামি দেখে একটা মুচকি হাশি দিয়ে দিলো । মেয়েটি বললো আমি পরপর দুবার মেসেজ করলাম মেয়ে হয়ে কিন্তু কোনো রিপ্লেও দিলি না অজয় ততলার মতো না মানে..., বলতে না বলতেই মেয়েটি বললো বুঝেছি তুই আমাকে ফেক আইডি( Fake id) ভেবেছিলিশ তো, অজয় বললো হ্যা । অজয় বললো তোমার নাম কি ধ্রিতিপ্রিয়া। কেনো কি মনে হচ্ছে নামটা ভালো লাগছেনা বুঝি? নাহ! মানে আমি জানতে চাইছি এই নামটি তোমার ধ্রিতি বলে উঠলো আসোল না নকল তাই তো! অজয় মৃদু স্বরে.. হ্যা! 

মেয়েটার থেকে অজয় কিন্তু একদমই স্মার্ট নয়!  

অজয় শান্ত শিষ্ট একজন নম্র ছেলে, বাংলা বিভাগে স্নাতকোত্তর বাড়িতে এখন বেকার বললেই চলে। বাবা কৃষিকাজ করে তাই এখন বাবার সাথেই মাঠে কাজ করে এবং প্রাইভেট নার্সারি স্কুলে শিক্ষকতা করে । 

একদিকে অজয় যেমন এক বিত্তহী, মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম অন্যদিকে ধ্রিতিপ্রিয়া এক রাজকন্যা, কথায় বলে না "আকাশ পাতাল পার্থক্য" ঠিক তেমনটাই ।  

অজয় বললো তোমার নামটা খুব সুন্দর এবং তারসাথে তুমিও ! ধ্রিতি হেসে বলে উঠলো! এসব মেয়ে ফাঁসানোর পুরোনো কৌতুক নতুন কিছু বলো ।

না না আমি সত্যি বলছি কোনো কৌতুক নয়! তাই বুঝি.. অজয় হ্যা!! এইভাবে বেশ কিছুদিন ভালোই চলতে থাকে ।

এরপর একদিন মোবাইল নাম্বার একে অপরের দিলো, এইভাবে আস্তে আস্তে তাদের সম্পর্ক কখন যে গভীর হয়ে উঠলো দুজনেই বুঝতে পারলো না । তারপর একদিন তারা দেখা করবে বলে সিধান্ত নিলো, আর দশঁটা প্রেমিক-প্রেমিকার মতই তাড়াও পার্কে দেখা করল । অজয় যদিও প্রতিদিন প্রায় কথা হয় ধ্রিতির সাথে কিন্তু তবুও ওইদিন যেনো তার কেমন কেমন মনে হচ্ছিল তার অবিশ্বাষ্য কাল্পনিক এইরকম কিছু । যাক ধ্রিতি ফোন এ কল দিলো তুমি কোথায় অজয় ? কিন্তু অজয় তার সামনেই ছিলো যদিও সে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছে এমত অবস্থায় বললো এইতো আসছি । অজয় কেমন কেমন অবস্থায় অনেক কষ্টে যেন হাজির হলো‌!  

ধ্রিতি হেশে বললো এতোক্ষণ সময় লাগে বুঝি? 

না মানে..... একটু... মানে, 

কি না মানে একটু মানে ধ্রিতি বলে উঠলো?  

অজয় সাদাঁমাঠা একটা ছেলে‌ এবার মাথাটা নিচুই করে ফেললো ।

এখনও পযন্ত কিন্তু কেউ কাউকে বলে নি যে ভালোবাসে কিনা ।

ধ্রিতি বললো আমাকে ভালোবাসো?

অজয় বললো হ্যা ‌‌‌‌, কিন্তু হ্যা যে বলেছিলো তার গলার আওয়াজ তোমারা বুঝতেই পেরেছো ।

ধ্রিতি অজয়ের হাঁতটি ধরে বললো আমিও তোমায় ভালোবাসি অনেক, তোমাকে আমি প্রথম আমার মামার বাড়িতে দেখেছিলাম ।তোমার গ্রামের পরের গ্রামে আমার মামার বাড়ি , সেখানে আমার মা‌মাতো ভাই ও বোন কে টিউশন পড়াতে দেখেছিলাম তখন থেকেই আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম ।

অজয় বললো আমিও তোমাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি। এইভাবে অনেক গল্প করতে থাকে দুজনেই আর লাজুক অজয় টা যেন মানুষ হতে শিখছে ।

এইভাবে প্রায় ছয় মাস কেটে যায় একদিন ধ্রিতি তার মামার বাড়ি আসলো অজয় নানা বাহানা করে চলে গেলো ধ্রিতির মামার বাড়ি এবারে অজয় যেনো বিড়াল থেকে একবাড়ে সিংহ হয়ে উঠলো আগের মতো না , এখন তো কথা বলতেও তার আটকে যায়না আগের মতো, বরঞ্চ কোনোসময় ধ্রিতির কথাতেই অজয় বলে ওঠে পরিস্কার ভাবে বলো ।

যাইহোক এইভাবে প্রায় দেখাটা করেই ফেলে ধ্রিতির মামার বাড়িতে ।

প্রেম তো গভীর যেতে লাগলো!

 একদিকে ধ্রিতির বাড়ির পরিবার আর একদিকে অজয়ের পরিবার, এই সম্পর্ক বাড়ির লোক কোনোভাবেই মেনে নেবে না উভয়েই জানতো তারা।

ধ্রিতি সাহশ দেয় অজয় কে, এইভাবে চলতে থাকে তাদের প্রেম প্রায় একবছর ।

একদিন হঠাৎ ধ্রিতি অজয় কে (এস.এম.এস) বার্তা দিলো তুমি আমকে ভুলে যাও অজয়! 

অজয় ধ্রিতির মোবাইলে ফোন লাগায় সুইচ অফ বলে, হোটাস্আ্যপ, ফেসবুক ওফলাইন। অজয় আর শান্তিতে থাকতে পারছেনা মাঝে মাঝে রেগেঁও যাচ্ছে ধ্রিতির উপর । কিন্তু কল করেই যাচ্ছে সুইচ অফ বলছে । অজয় এবার রেগেই গেলো আর কল লাগালো না এইভাবে প্রায় তিনদিন হয়ে গেলো ।যতই রাগ করুক না কেনো সে যে কতটা কষ্ট পেয়েছে এই তিনদিনে সেটা একমাত্র অজয় ছাড়া আর কেউ বুঝবে না । তিনদিন পর কল দিলো কিন্তু তবুও সুইচ ওফ্ । অজয় এবার ধ্রিতির বাড়ির দিকে রওনা দিলো , একে তো রেগে আছে ভাবলো আজকে দেখিয়ে দেবো । অজয় ধ্রিতির বাড়ি যেতে বিন্দু মাত্রও ভয় পেলোনা । বাড়ি গিয়ে জিঙ্গেস করলো ধ্রিতি বাড়িতে আছে, অজয়ের কথা শুনে বাড়ির সবাই অবাক এবার একটু চেচিঁয়ে বলতে লাগলো অজয় "শুনতে পাচ্ছো না নাকি তোমারা" কেউ একজন বলে উঠলো ধ্রিতি আর নেই!  

নেইই মানে কি বলতে চাইছো তোমারা!!? 

ধ্রিতির মা এসে বললো ওর তিনমাস আগে ক্যান্সার ধরা পড়েছিলো এবং ধ্রিতি তিনদিন আগে আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে এ বলতে বলতে তার মা কেদেঁ উঠলো। কিন্তু অজয় কিছুতেই বিশ্বাষ করতে পারছেনা চোখে দিয়ে অশ্রুে ঢ়েউ বইতে শুরু করলো ।আর নিমেষেই তার সমস্থ ক্রোধের বিন্যাশ হয়ে হঠাৎ দূর্বল হয়ে উঠলো এবং সেখানেই মাটিতেই হাটুঁ গড়িয়ে কান্নার স্তোত বইতে শুরু করলো, ধ্রিতি যেনো তার পাশে কানে এসে বললো "পাগোল কান্না করে বাচ্চার মতো, আমি সর্বদাই তোমারে ছিলাম তোমারেই থাকবো আমাকে খুজেঁ পাবে তোমার আমার কাটানো রঙ্গীন মুহূর্তে , আমি থাকবো তোমার নামের পাশে তে যেখানে দুজনের দুটো আঙ্গুল দিয়ে পরস্পরে লিখিছি দুজনের নাম"।

 একজন এসে অজয় কে তুলে বাড়ি পৌছেঁ দিয়ে আসলো ধ্রিতির বাড়ি থেকে , কোথায় হারিয়ে গেলো অজয় রাত, ঘুম, খাওয়া , কত স্বপ্ন ।

প্রায় একসপ্তাহ পর অজয় একদিন ফেসবুক খুলে অজয় তার প্রোফাইলে গিয়ে দেখে Bio তে "অজয় আমাকে ক্ষমা করে দিস, আমি যে কয়েক দিনের অতিথী এই পৃথিবীতে আমিও তিনমাশ আগেই জানতে পেরেছি। তোমাকে বলতে পারিনি আমি, আর হ্যা পাগলামি করিস না বিয়ে করে নিবি‌ মা বাবার খেয়াল রাখবি, আমি থাকবো তোমার আমার প্রতিটা ছোয়াঁতে"

       তোমার ধ্রিতিপ্রিয়া!! 

  য়


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama