উচ্ছিষ্ট প্রসাদ
উচ্ছিষ্ট প্রসাদ
আজ জীবনের এক চরম অধ্যায়ে উপনীত।
প্রশ্নবোধক চিহ্ন টা বোধহয় আমার শরীরকে ঘিরে;
নারী শক্তির প্রতিমূর্তি দেবী দুর্গা; অসুর নাশিনী;
কিন্তু বাস্তবে নররূপী অসুর নিয়ন্ত্রণে আমি পরাজিত-
তাই পারিনি সেদিন নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করতে।
আমার শরীরের উষ্ণতা সেদিন নররূপী পিশাচেরা শুধু ভোগ ই করেনি; চারজন মিলে খুবলে খুবলে ছিড়ে ছিল- আমার অসহায়ত্ব কে।
দীর্ঘদিন হসপিটালের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে আজ আমি শয্যাশায়ী।
আমি অন্তঃসত্ত্বা;
কুমারী জননী।
নরক ভোগ করা এ শরীর এখন উপেক্ষায়;
তবু ও উচ্ছিষ্টভোগে আজও অনেক সুশিক্ষিত প্রবৃত্ত- তাদের জিজ্ঞাসায় অন্য সুর!
" আচ্ছা খুব লেগে ছিলনা"!
"আহা ঠিক প্রথমবার না অনেক কষ্ট, আবার চারজন"!
ইস " যদি আমার সঙ্গে হত",
মরে যাই মরে যাই- কি লজ্জা" !!!
কিন্তু আমি আজ বুঝি!
মানুষ আজ জেনে বুঝে কুকুরের উচ্ছিষ্ট খায়-
যখন তাদের পেটের খিদে, তলপেট অতিক্রম করে।
নিম্নাঙ্গের জ্বালা মেটাতে আজও পথের পাগলি গুলো অন্তঃসত্ত্বা হয়!
তাহলে লজ্জা কোথায়?
লজ্জা কাদের?
প্রশ্ন আমার এইখানে।
সাহিত্য, গল্প ,কবিতায় এর বর্ণনা যতই করুন হোক না কেন, বাস্তবে এ নরক যন্ত্রণার চেয়ে কিছু কম নয়। অস্তিত্বের সঙ্গে নিজের সংগ্রাম।
উপদেশ নীতি বাণী শোনাতে সকলে এগিয়ে আসে;
পাশে এসে কেউ দাঁড়ায় না।
আজ আমার সন্তান আমার;
মাতৃত্বের এখানে লজ্জা কোথায়?
আমার ভালোবাসার মানুষটি আজ দূরে সরে গেছে কিছু সুপরামর্শ দিয়ে।
আমি থামিয়ে দিয়েছে তাকে।
আমি মরবো না;
আমি মারব ও না।
ওই চারজন এরচেয়ে তথাকথিত ভদ্র বেশী ভদ্রলোকগুলো অনেক বেশি যন্ত্রণা দেয়।
তাদের প্রশ্ন আজও আমার শরীরকে ঘিরে!
" কতটা যন্ত্রনা; কতটা ব্যথা; কতটা উষ্ণতা"
এর অনুপাত তাদের প্রশ্নে উঁকি দেয়।
উপযুক্ত রেশীয় আজও আমার জানা নেই!
তবুও ধারাপাতে সেই প্রচলিত নামতা;
জীবনের অনুপাতটা বড় জটিল!
এর হরফ গুলি বোঝার উপায় নেই।
অজানা হরফে লেখা বই;
সরলতার ভেতরেও ভয়াবহ জটিল ধারাপাত।
জীবনের ছায়াপথ ধরে;
আজও বহমান নর্দমার পাঁকে
চোরেদের ধর্মগ্রন্থ পাঠ!
প্রসাদ উচ্ছিষ্ট।
