শিক্ষক দিবস
শিক্ষক দিবস
বিদ্যালয়ে গেলাম অনেক কাল পর।
সবই যেন বদলে গেছে কেমন।
কিছুই আর পুরনো দিনের মত নেই।
পুজোর আগে যেন নতুন জামা গায়ে দিয়েছে।
রঙচটা দেওয়ালে লেগেছে রঙের নতুন প্রলেপ।
চাকচিক্য বেড়েছে স্কুলের, বেশ ভালই দেখতে লাগছে।
কিন্তু মন কি মানতে পারছে এটা আমার স্কুল ছিল!
নাকি ভাবছে বহিরাঙ্গটাই সব ওটা বদলে গেলে আর কি পরে রইল?
বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে এলাম।
সেটাও যেন সেজে উঠেছে নতুন করে।
সেই যে ক্রিকেট-ফুটবল খেলা, আন্তশ্রেনী প্রতিযোগিতা, কত পরামর্শ, টিম মিটিং সব তো এখানে।
ওই তো যেন শোনা গেল যেন রেফারির বাঁশি।
কিন্তু খেলার শেষ না শুরু তা তো ঠিক বোঝা গেলনা।
এর মধ্যেই বাজল ক্লাস শেষের ঘন্টা কিন্তু ছোটদের ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেল একজন বড় স্টুডেন্ট।
জিজ্ঞেস করাতে সে বলল ক্লাস নিচ্ছিলাম দাদা। আজ তো ৫ই সেপ্টেম্বর ছোটদের আমরা বড়রা ক্লাস নি।
এই উত্তর শুনে স্কুল জীবনের দিনগুলোতে কেউ যেন উড়িয়ে নিয়ে গেল আমায়।
দেখলাম সবই আগের মতই আছে।
রোগা মধ্য উচ্চতার একজন হাসিমুখে কত কি বোঝাচ্ছে।
পুরনো ক্লাসের পড়া যতটা স্মৃতিতে আছে পরম আদরে ভাইদের সাথে ভাগাভাগি করছে।
হঠাৎ সব মুছে গেল , বাস্তবের মাটিতে ফিরে এলাম।
ভাবলাম বহিরঙ্গ যতই আলাদা হোক,
এই পরম্পরাগুলো স্কুলকে বদলাতে দেয়না।
মনে হল স্কুলের ইটগুলো, মাঠের বড় গাছটা সকলে তারঃ স্বরে চেঁচিয়ে বলছে আমরা তোকে চিনি আমাদের পরিবর্তন হয়নি। তুই এই বিদ্যালয়ের ছাত্র।
হঠাৎ চটক ভাঙল কতকগুলো পরিচিত কন্ঠের আওয়াজে ,
যাদের বলা কথাগুলোর অনুরণন সারা জীবনেও থামবেনা।
তাই চিনতে ভুল হয়না তাদের। দৈবাৎ যদি দৃষ্টিশক্তি লোপ পায়, যাদের চিনে নিতে অসুবিধা হবেনা কখনো।
শিক্ষক শিক্ষিকা আমার মত কতজন তাদের অভিভাবকত্বে এই বিদ্যালয়ের অঙ্গনে বেড়ে ওঠে।
আজ তাদের সকলকে প্রণাম করলাম। মনে মনে বললাম সকলে ভালো থাকবেন।
তেনারাও বললেন ভালো থেকো, স্কুলে এস আবার।
