একশো টাকার নোট
একশো টাকার নোট


বহুদিন আমি বাক্সবন্ধী
শহরে চলছে ভোট
আমি তোমাদের সবার প্রিয়
একটা একশো টাকার নোট
শুরুর গল্পটা বেশ চকচকে
মখমলে আমার গতর
ঘুরেছি কদিন রাঙাদার পকেটে
জামাতে লাগিয়ে আতর
রাঙাদা ছিলো পাড়ার দাদা
কারুর ধার ধারেনা
আমার দেখা, সত্যি কথা
গরিবের টাকা মারেনা
একদিন এক গরিবের হাতে
আমাকে দিলো তুলে
পরেরদিন আমাকে জমা করলো
মেয়ে স্কুলে যাবে বলে
আমি থাকলাম স্কুলের ক্যাশ বাক্সোতে
ব্যাংকে কদিন পরে
তারপর এক বৃদ্ধ বন্ধু
আমায় তুললো নিজের ঘরে
মাতাল ছেলে রাতের বেলা
বাপকে চড় মেরে
আলমারি ভেঙে, লকার খুলে
আমাকে নিলো কেড়ে
মেয়েদের পেছনে উড়ালো টাকা
আমিও ভেসে গেলাম মাটিতে
নিচে তাকিয়ে অবাক দেখি
পড়লাম চুমকির চটিতে
বয়সও কম, নাচেও ভালো
আমি এখন তার বকশিস
বাকি মেয়েদের বললো চুমকি
"হাঁ করে কি দেখছিস? "
আমি চললাম চুমকির সাথে
ব্লাউসের কোনে আটকা
খুব জোরে এক চিৎকার শুনে
লাগলো আমার খটকা
বেরুলাম রাতে এক পুরুষের হাতে
চুমকি তো আর নেই
চারপাশে কেমন জঙ্গলের মতো
কোথা গেলো শান্তি সেই?
চুমকি দেখি শুয়ে আছে মাটিতে
বেহুঁশ? নাকি লাশ?
চারপাশে কেমন স্যাতস্যাতে মাটি
আর বড় বড় ঘাস
এরপর গেলাম পুলিশের কাছে
বোধ হয় ঘুষ ছিলাম
বুঝলাম আমি নিয়েছি অনেক
কিন্তু সমাজ কে কি দিলাম?
এরই ফাঁকে কেটেছে বছর
হয়েছি নোংরা ময়লা
পৌঁছলাম আমি ঝাড়িয়া খনি
চারদিকে দেখি কয়লা
রামুদা আমার বর্তমান বাবু
কয়লা খনিতে কাজ করে
ছুটির দিনে ঘোষেদের পুকুরে
ছিফ ফেলে মাছ ধরে
রামুদার থেকে গেলাম বাজারে
সেখান থেকে কলকাতার রাস্তা
পড়লাম এসে মানিকলালের হাতে
ততক্ষনে আমি খাস্তা
ঢুকে গেলাম আমি নতুনদের সাথে
পুরোনো কথা মনে পড়লো
হটাৎ যেন মনে হলো
চেনা হাতের ছোঁয়া পড়লো
তাকিয়ে দেখি রাঙাদা
আমিতো আনন্দে পাগল
রাঙাদা বলে "আব্বে এ মানিকলাল,
এ টাকা চলবেনা ছাগল "
আমাকে ছুঁড়ে দিলো রাঙাদা ধরে
পড়ে থাকলাম মানিকদার কাছে
বাক্সবন্ধী তাই একাকী জীবন
কোনোরকমে আছি বেঁচে
চকচকে ছিলাম বলেই একদিন
ধরেছিলো যে মেলে
তার কাছেই আমি তুচ্ছ এখন
দিলো সে আমায় ফেলে?
পুরাতনকে এতো ঘেন্না?
এতোই সে বদনাম?
এটা বোঝেনা পুরানো হলেও
আমার একশো টাকাই দাম