আদি রাভ
আদি রাভ
.....................◎✺ আদি রাভ ✺◎.......................
- সাহিল মোল্লা
সেই যে দেখা হয়েছিলো মোদের' বার্তা দূতের লেখনীতে
আমি তো তেমন গুরুত্ব দিইনা কাউকে, কোনো মতে।
ভাবিয়াছিলুম আমি....! হয়তো কেউ পঠনস্তরের প্রশ্ন করিবে,
মিটিয়ে দিতে তার লেখা লিখিলাম কিসের শরম ?
করো প্রশ্ন বিনা দ্বিধায়, কারণ মনটা মোর নরম ।
কিন্তু এ যে দেখিলুম আমি, সে মোর সাথে কথা বলিতে চায়।
করিলাম কত গল্প, হয়নি মোটেও অল্প-স্বল্প
মাঝে চাইলো যোগাযোগ করিতে সে.......।
দিলো মোরে ডাকের সংখ্যা,
কিন্তু আমি তো সহজে কাউকেই দিই না সেটিই !
আচ্ছা, দিলুম.... জানলুম সে তো ভালোই জ্ঞানী-মেধাবী
একই বিষয়ে সাহায্য তো করিতে পারিবেই একটুখানি।
দিয়ে দিই কী বা হবে !!
তখন চলছিল শেষ পূজাবকাশের নিস্তার পঠন মুক্তি
খিদেয় খিদেয় যেন হারাচ্ছিলাম মোর শক্তি।।
অসুস্থ শরীর নিয়ে জীবনচালনা করছি
ভাবছি রয়েছি বেঁচে নাকি মরছি...!!
একদিন বলিল সে, ঘুরে যেও মোর গৃহ
কিন্তু আমার তো তার সাথে ঠিক করে সম্পর্কও গড়ে উঠলোনা
বলিলাম, এতো ; অনেক দূরে পার হতে হবে অনেক তৃণ !
যাবো কোনো একদিন ; যদি থাকে মোর ললাট লিখনে, শোনোনা,ডাকিলো ‘মোর' নাম নিয়ে : আমি তোমার কাছে যাবো ?
আমি বিনা দ্বিধায় বলিলাম, আচ্ছা আসিও মোর কাছে।
কারণ আমি চাইনা তারে সামান্য দুঃখ দিতে
খাবার বানাইবো তাহলে আয়োজন করিবো কিছু
কিন্তু সে বলিলো আচ্ছা, সত্যি আসছি...!!!!
আমি আমার ভাইকে বলিলাম আয় মোর পিছু পিছু।
ভাবিয়া বললাম আচ্ছা, দুই ভাই তার ভোজনের জোগাড় করি
বানাইলাম আর না,
আসছে এক্ষুনি সে দূর থেকে, হচ্ছে যে খুবই দেরি।
সূর্য গেছে প্রায় দুই ঘন্টা আগে ঢলিয়া
লাগিলো অন্ধকার, বিরাজমান কালো আলোর অস্তিত্ব
শরতের সমাপ্তি ঘটার শেষ মুহূর্তে হতে লাগিলো বৃষ্টি
ভাবিলাম সে কী ভিজে যাচ্ছে..!!
সে আমায় বলেছিলো ভিজিয়া গেলে একটা কাপড় দিয়ে দিও,
অবশ্য আমিই বলেছিলাম চিন্তা করোনা।
আজকে তুমি না হয় এসো না, বৃষ্টিভেজা জলবায়ুতে,
কিন্তু সে আসিলো সাইকেল চালিয়ে ছাতা নিয়ে ভিজিতে ভিজিতে
আচ্ছা, সে এলো কেন ? কী জন্য ?
কোনো কী কারণ বা ব্যাপার আছে..?
সে এলো কিসের টানে..?
কে তাকে বাধ্য করিলো আসিতে আমার কাছে ?
তার আসার পিছনে কী কোনো শিক্ষা লুকিয়ে আছে...!
লুকিয়ে কী আছে মঙ্গল-অমঙ্গল, ঈশ্বরের পরীক্ষা.....?
চিন্তায়!!! চিন্তায়!!! ডাক দিলাম জ্ঞানী দূরভাসে.......
কেন এতো দেরি হচ্ছে, চিন্তা মোর মনে আসে।
শেষে জানালো আসিলো কাছাকাছি সে,
লম্বা সাইকেলে ছাতি হাতে ধরিয়া
আমি বেরুলুম তাকে আনিতে; হাতে কালো ছাতি নিয়া।
প্রধান রাস্তায় গিয়া দেখিলাম, আসছে লম্বা একটা যুবক
বলছে ভিজে গেলাম পুরো, আমি বুঝেছিলাম এটাই আদি রাভ।
কী লম্বা সে, আমি খালি রয়েছি তার দিকে তাকাইয়া
মুখই দেখা পাইলাম না ঠিক করে, মনে হচ্ছিলো যেন বৃষ্টির মধ্যে
অন্ধকারে গেলো মুখমন্ডল মিলাইয়া।
গম্ভীর-প্রেমময় আওয়াজ শুনে তার, আমি অবাক হইয়া গেলাম !
যখন তার ভিজে মাথার কেশ দেখিলাম, হতভম্ভ হইয়া গেইলাম।
দুই ভাইয়ের লাগছিলো একটু হাসি প্রথমে দেখিয়ে মুখমন্ডল
হাসিলাম না তো সহজে সামনে তার,
বিশ দিন পর তারই জন্য মোর মনে ধরলো গন্ডগোল।
হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখিলাম চুল যে তার ভেজা
ওতো দূরের পথে আসতে গিয়ে,
জামা-কাপড় হয়েছে জলে ভাজা ভাজা।
ভিজলো জামা : ভিজলো পায়া, ছুঁয়ে দেখিলাম সব
মোদের পোশাক খুজলাম অনেক মিলছে না গো গৌরভ।
শেষে তাকে দিলাম আমি একটা জামা -পায়া
বড়ো লাল জামাটা ফিট হলেও, ফিট হচ্ছে না পায়া।
ভিজে পায়াই পরে সে গল্প করিতে লাগিলো মোদের সাথে
ভাইকে বললাম খাবার আনো,
যত যা আনতে দিয়েছিলাম তোমার হাতে।
খুবলে খুবলে খাচ্ছিলো সে ঠুকরে ঠুকরে খাবার
ভৌতিক কথা শুনে আমাদের ভয় লাগলো আবার,
চেষ্টা করলাম সাহায্য করবো, যত যা মোরা জানি
আমরা যে প্রার্থনা করি, আমরা রব কে মানি।
ইশাইওদের কত গল্প শোনাচ্ছিলো সে বাইবেলের থেকে,
গল্প শুনে শুনে সময় ফুরোলো,
সময় হলো, রওনা হইলো সে বাড়ির পথে।
যাকগে, মোর এটাই কামনা,
ঈশ্বর রক্ষা করুক তাদের সর্বদা —
একদিন তার বাড়িতে গেলাম-ইহা মোর বাসনা
কোনোদিন যে দেখিনি ইচ্ছা ছিলো মোর,
দেখবো আমি তার সহিত বড়দিনের গির্জার প্রার্থনা।
মাঝে একখানে কী যে উত্তর দিলাম ; কাঁচ গেল নাকি ভাঙ্গিয়া ।।
কিন্তু আমি যে হবু কবি— আমার বাক্য চয়ন এমন
অর্থ অনুভব না করিতে পারলে, আমার দোষই বা হয় কেমন...!?
তবুও যদি অজান্তে বলে ফেলি কিছু ভুল
ও মোর বন্ধু দাদা ক্ষমা করো গো কবুল।।
বিপদে পরে চাহিলাম একটি বই তিন দিনের জন্য,
বুঝলাম ভালো করে,মনের প্রকৃতি হয়েগিয়েছে তার অন্য,
মাথায় মোর বাজ্ পরিলো !! আমি আবার সেই ভুল করলাম!!
তাড়াহুড়োর চক্করে মায়ায় পরে আমি পিরিত করে বসলাম।
ছাড়লো সে যে আগে, অবশ্যই কষ্ট হবে আমার
প্ৰিয় বন্ধু করেনিয়েছিলাম,
মনে পড়ছে সুগন্ধ ছড়াচ্ছে ফেরত পাওয়া সেই জামার।
দুই দিন ঘরে তার সুগন্ধ ছিলো, ভুলতে পারছে না ছোটভাইও,
এসব দেখে আমি যে চিন্তায় পরে গেলাম
পিরিত আমি করে বসলাম,
মনের খুশিকে হারিয়ে ফেললাম........
শত চেষ্টা করেও তাকে আর ফেরাতে না পারলাম।
দুইবছর এক কাছের বন্ধু-বিচ্ছেদের
কষ্ট যে কী করে করেছি সহ্য ,
কত যত্ন করতাম তারে ; শেষে হয়েছি যে আপদ-বর্জ্য।
শেষ বিচ্ছেদে তার জোড়া - ভাঙ্গন আর সামলাতেও পারিনি,
সাত -আটবার এই নিয়েও, আর শেষে আমি শব্দ করিনি।
মন থেকে সে পুরোপুরি এবার সরে যে গেছে
আমিও এবার ছেড়ে চলে গেছি তারে
থাক বাবা তুই তোর মতোন ; আর ফিরবো না তোর কাছে।
দুই বৎসর একটা কষ্ট থেকে রেহাই নিয়ে বিশ্রামই নিচ্ছিলাম,
চারটি সপ্তাহ ধরে........
পাছেই তাড়াহুড়োয় নতুন মানুষ এলো,
একই রকম,কিন্তু ভিন্ন আরো শক্তিশালী রূপে
আমি তো ছোটো করতে চাইনি তারে
হাজার চেষ্টা হয়ে গেল.........
বন্ধুত্বের মায়ার ফলে জানিনা কেনই বা খালি কাঁদছি...!
আল্লাহর কাছে ।
সে বলিয়াছিলো কেউ পারিবেনা তার সাথে আমায় মিলাতে ,
নালিশ করলাম ভোরে তাহাজ্জুদের নামাজে আল্লাহর কাছে
কেঁদে কেঁদে বলিলাম যেই করুক ভুল,
আপনি ফিরাইয়া দিন দয়া করে তারে
যদি না ফেরান মুছে দিন মোর মনের কষ্টের ঝুল ।
কতশত আর্জি করিলাম আমার মাবুদের কাছে
কেটে গেলে তো সেরে যেত -
সামান্য তিল নিয়ে–তাল করিলো যে কত
কথার ভয়াবহ আঘাত আমি পেলাম
বন্ধুত্বের ভিক্ষা চাইয়া চাইয়া হাফিয়া হচ্ছি নত,
অতীত রাগারাগি, অভিমান মুছে যাই
ভলোবাসা শ্রদ্ধা জন্মাক চারিদিকে —
ছড়িয়ে যাক যেন শতশত।
করিও না কাউকে গো এমন সামান্য বিষয়ে অপমান,
যাতে তার না কেঁপে যায়...!!! রূহ শুদ্ধ প্রাণ......।
যাতে না সে খইয়ে ফেলে নিজের মিষ্টি স্মৃতি
বদদোয়া যেন না লাগে তোমার আপনাআপনি ,
আসবে বিপদ,ভয়ভৃতি।
তুমি আমার সোনা বন্ধু, তুমি আমার ভ্রাতা
যাকে আমি ভালোবাসি তাকে দেওয়া যায়না কাঁটা ।
আমি একটু কাঁদতে চাই..........
তোমায় বুকে জড়িয়ে গো,
অনেক কিছু শিক্ষা পেলাম, মনের আড়ালে থেকে তো।
মাফ করো ক্ষমা করো, মিলে যাও তোমরা সকলে
দোয়া করো রবের কাছে যাবেনা গো বিফলে।
বন্ধুত্বকে লম্বা করো , থাকুক তো রাগ-ঝাল —
বন্ধুত্ব যে বয়স মানে না, মানেনা অভিমান
ছোটো হও না একটু, যাবে না গো সম্মান।
কখনো তোমরা সম্পর্ক, নষ্ট হতে দিওনা,
যদি ভেঙ্গে যায় একটু জোড়া লাগিয়ে নিওনা।
কেমন লাগতো যদি এমন হতো,
মহাবিদ্যালয় থেকে এসে দেখিতাম
বসে রয়েছে এসে সে মোর বাড়ি,
চোখটা হতো ছলো ছলো, ধরতাম আগে হাত তারই....
হয়তো ঐদিন মোর থেকে এই বিশ্বমাঝারে
আর কেউ হতোনা খুশি,
মনের মধ্যে এই স্বপ্ন-আশা
জানিনা কেনই বা খালি আমি পুষি !
কেমন হতো যদি দেখা হতো মেলা-রাস্তায় সাথে
নাম ধরে ডাকতাম একবার তার ,
ইশারায় তুলে মোর শুষ্ক হাতে।
আজকে কতগুলো দিন হলো, সহ্য করে রয়েছি কষ্ট
যার সাথে কথা না বললে শ্বাস আটকে যেত,
এখন হচ্ছে হৃদয় বাষ্ট।
ফিরিয়ে দাও না তাকে, অশ্রু শুষ্ক হওয়ার আগে
ও আমার রব আপনিই শেষ ভরসা,
বদলে দিন ললাট লিখন ,কথাটি না আর যেন জাগে।
অশ্রু ঝরিছে ছল্ ছল্ করে
চাতক পাখির ন্যায় তাকিয়া আসমানে......!
বলি রব্বানাকে, গল্প করিবো কবে..?
আদি রাভের সাথে !! কাঁধের উপরে রেখে কাঁধে হাতে
কতটাই না মানুষকে ভালোবাসি.......
আবার মোরা বন্ধু দুইজন অভিমান ভুলে
গল্প করিবো কবে..?
তার ফেরার অপেক্ষায় নীরবে হাসি................।।

