সঙ্গীত গেছে ঈঙ্গিতে থামিয়া
সঙ্গীত গেছে ঈঙ্গিতে থামিয়া
সঙ্গীত গেছে ঈঙ্গিতে থামিয়াসুপর্ণা বোসযেভাবে আলোকিত মঞ্চের ওপর থেকে ড্রপসিন উঠে যায় ঠিক সেভাবেই রিনিতার শরীর থেকে উঠে পড়ল দীপজয়।তখনও হাসির দমকে কাঁপছে রিনিতার শরীরটা।দীপজয় অভিযোগের সুরে বলে, ' ধুর এভাবে হয় নাকি? আমাকে কি সার্কাসের ক্লাউন পেয়েছ? সিরিয়াস মুহূর্তে এত হাসি তোমার আসে কোত্থেকে রিনি? একটা কথা জানবে, খেলাচ্ছলে শুরু হলেও সেক্সটা কিন্তু জোক নয়।লাইফের ইনএভিটেবল পার্ট '। মুখ গোঁজ করে দেয়ালে পিঠ দিয়ে সামনে পা দুটো ছড়িয়ে বসে পড়ে দীপজয়।তার মুখে রাগ অভিমান মুছে গিয়ে এবার ষ্পষ্টত বিরক্তির রেখা।
রিনিতা এখনো ওভাবেই বিছানায় শুয়ে আছে।হাসির দমক কিছুটা কমলেও এখনো অল্প হাঁপাচ্ছে সে।ঠোঁটে এবং সমগ্র মুখমন্ডলে ছড়িয়ে আছে হাসির রেশ।নাকের দুপাশ থেকে ঠোঁটের দুকোণ পর্যন্ত লাফলাইন কিঞ্চিত গভীর হয়েছে।চটকে যাওয়া বিনুনী বালিশের ওপর দিয়ে মেঝের দিকে ঝুলছে।একহাতে সে নিজের নাভি চেপে ধরে আছে অন্যহাত স্তনের ওপর আড়াআড়িভাবে চাপা দেওয়া।বন্ধ দুচোখের কোলে জল চিকিচক করছে। সেদিকে তাকিয়ে আরো একবার ভিতরে ভিতরে তপ্ত হয়ে ওঠে দীপজয়।সে অনুনয়ের সুরে বলে, ' প্লিজ রিনি, একটু কনসেনট্রেট করার চেষ্টা করো ' কথা শেষ হয়না রিনিতা হাঁফাতে হাঁফাতে বলে, ' চেষ্টা করি তো, কিছুতেই পারি না। তুমি টাচ করলেই হাসি পায়।পেটের ভিতর হাজার হাজার কেন্নো চলছে। ' বলতে বলতেই আবার সেই লাগামছাড়া বীভৎস হাসি । হাসির দমকে এবার বোধহয় হার্টফেল করবে রিনিতা।
বিছানা থেকে লাফিয়ে নেমে পড়ে দীপজয়।রিনিতা ওর হাতটা ধরে ফ্যালে, ' প্লিজ রাগ কোরোনা। আরেকবার চেষ্টা করি চলো '
_'নো। নেভার।' হাত ছাড়িয়ে বাথরুমে চলে যায় দীপজয়। রিনিতা নাইটিটা টেনে নেয় ।অল্প সরে যাওয়া পর্দার ওপারে সে অস্ফুট দিনের আলো দ্যাখে।কানপেতে শোনে ওয়াশরুমের জলের শব্দ।এই নিয়ে কতবার দীপজয়কে মাস্টারবেট করতে হচ্ছে! একটা নিষ্ঠুর আনন্দ হয় রিনিতার। সে যে খুব একটা পরিহাস প্রবণ মানুষ তা নয় কিন্তু বিছানায় যখন দীপজয় তার বিশেষ অঙ্গগুলিতে হাত রাখে তখন উত্তেজনার পরিবর্তে সুনামির মত এক বিপুল হাসির ঢেউ তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। যেহেতু , হাসির একটা সংক্রামক প্রবণতা আছে। হাসির একটা চেহারা আছে,যেটা দেখলে মস্তিষ্কে সিগন্যাল যায় এবং অন্য ব্যক্তিটির মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। তাই, প্রথমদিকে তেমন গায়ে না মাখলেও ইদানিং দীপজয়ের আত্মসম্মানে লাগে।আত্মবিশ্বাস আঘাত পায়।পৌরুষ জেগে উঠেও তৎক্ষণাৎ নিভে যায়। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা নাকি করতে চায় না রিণিতা? দীপজয়কে শরীরের ওপর নিয়েই রিনিতার শরীরটা ভূমিকম্পের মত কাঁপতে থাকে বেয়াড়া হাসির ধাক্কায়।
দীপজয় ট্রাউজার আর টিসার্ট গলিয়ে ড্রয়িংরুমে গিয়ে টিভি চালিয়ে বসে।রিনিতা শোবারঘরের লাগোয়া ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ছড়ানো শহর দেখে।পথচলতি মানুষজন ও গাড়িগুলিকে খেলনার মত মনে হয়।সূর্য ডোবার পরেও খানিকটা আলোর মায়া ছড়িয়ে থাকে পশ্চিমাকাশে।একটু একটু করে অন্ধকার জমতে থাকে দূরের গাছপালায়।গত চারমাস ধরে গলার কাছে একটা দলাপাকানো অভিমান বয়ে চলেছে রিনিতা। তার নিজের কন্ঠস্বর নিজেরই কানে ঝনঝন করে বাজে, 'এসব তুমি কি বলছ দীপজয়?কোন যুগে পড়ে আছ তুমি?সেই ছোটবেলা থেকে স্পোর্টস করছি, সাইকেল চালাচ্ছি! ওসব হাইমেন টাইমেন আর অবশিষ্ট থাকে নাকি?'অন্ধকার ঘন হয়ে আসে।নিশব্দে হাসে রিনিতা।ধারালো ব্লেডের মত সেই হাসি সন্ধের বুক চিরে ফালাফালা করে দেয়।
______________________________

