রাজপুত্র ও নদী
রাজপুত্র ও নদী
এক ছিল রাজপুত্র। আনমনা চুপচাপ। বাঁশি বাজাত সুন্দর। এক ছিল সাধারণ মেয়ে... সে ভালোবাসত রাজপুত্র কে। রাজপুত্র জানত না। জানবে কী করে?সে যে রাজার ছেলে। প্রতি রাতে মেয়েটি পাখি হয়ে যেত, ছোট্ট একটা নীলপাখি। উড়ে এসে বসত রাজপুত্রের ঘরের জানালার ধারে তমাল ডালে। ঘুমন্ত কুমার কে দেখে চোখ দিয়ে মুক্তোদানার মত জল পড়ত টুপটুপ। একদিন আনমনে বাঁশি বাজাতে বাজাতে রাজপুত্র ফেলল পথ হারিয়ে। গভীর রাতে নীল পাখি তাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে এল রাজপুরীতে। তারপর থেকে সারারাত ধরে রাজপুত্র বাঁশি বাজায় আর নীলপাখি গলা ফুলিয়ে দুলে দুলে গান গায়.. সে সুরের আবেশ ছড়িয়ে পড়ে আকাশে বাতাসে... গাছের পাতায়, ফুলে ফুলে। রাত ফুরালে পাখি উড়ে যায়। রাজপুত্র ব্যাকুল হয়। পাখি বলে... থাকতে পারি না যে কুমার... চোখ ভরে যায় জলে। একদিন নীলপাখি ধরা পড়ে শিকারীর জালে। কাঁদতে কাঁদতে সে নদী হয়ে যায়। রাজপুত্র আকুল হয়ে তাকে ডাকতে থাকে। অপেক্ষা করতে করতে রাত ভোর হয়ে আসে। কুলকুল নদীর জলের শব্দ শুনে সে ছুটে আসে। তখন ও গভীর ঘুমে ঘিরে থাকে চরাচর। নীল রঙের নদীর সাথে হারিয়ে যায় রাজপুত্র।কেউ আর কোনোদিন তাকে খুঁজে পায় না..... কত যুগান্ত পার হয়ে যায়..... আজও, যদি কান পেতে থাকো, নীরব চাঁদনি রাতে রাজপুত্রের বাঁশির সুর ও বহতা নীল নদী জলের মিলিত কুলকুল স্বর শুনতে পাবে... তারা কিন্তু জেগে থাকে।।

