জীবনমৃত্যু
জীবনমৃত্যু
মেয়েটির মা বাবা থেকেও সে অনাথ৷ কাছের মানুষ বলতে আছে কেবল বৃদ্ধা ঠাকুমা ৷ বাবা শুধু আর্থিক খরচ ছাড়া অন্য কোনোরকম দায়িত্ব নিতে একেবারেই অনিচ্ছুক৷
আর অভাগী মেয়ের মা থাকা আর না থাকা প্রায় সমান...রাগ করে বুড়ি প্রায়ই আপন মনে বলে, "আমার কি মরণও হতে নেই? আর কতদিন আমায় এই পাগলী মেয়েকে আগলানোর জন্য বাঁচতে হবে ভগবান?"
বুড়ি যে আবার বড়ই গোঁড়া৷ মুসলমানের হাতে রান্না খাবার থেকে মরে যাওয়া ভাল৷
আমিদা বিবি এতকাল কপালে সিঁদুর লাগিয়ে কাকলি সেজে এদের বাড়িতে আছে৷ মানসিক সমস্যায় জর্জরিত মেয়ের এত অত্যাচার সহ্য করেও থেকে গেছে মায়ার টানে৷
আজ বুড়ি মৃত্যুশয্যায়৷ তাই সে আর পারলনা মিথ্যে অভিনয় করতে৷ মুখে জল দেওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়ে বলল," মাগো, মোচলমানের মেয়ের হাতে শেষ জলটুকু খাবে তো?"
অস্পষ্ট আলোতেও চোখে পড়ল বুড়ির দু— চোখে একাধারে বিস্ময়, অসহায়তা আর আর্তি...অতি কষ্টে বলে উঠল, " জল দাও, আর একটু বাঁচতে চাই" ৷