হঠাৎ দেখায় অজানা কথা
হঠাৎ দেখায় অজানা কথা


হঠাৎ দেখায় থমকে গেছে আজ আমার চোখ,
কিচ্ছু জানি না, শুধু জানি এই দেখাটা না হলে অনেক কথা অজানা থেকে যেত ।
সকাল ১১ টা,মেয়ে রাই আর বর অতুলকে নিয়ে দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিতে যাচ্ছিলাম,অনেকজন ভিখারি,ভিখারিনী রা বসে ছিলেন,দেখে খুবই কষ্ট হল,আমার ওইটুকু মেয়ের মনে প্রশ্ন উঠল -
" মা এঁরা এমন ভাবে বসে টাকা চাইছে কেন ?? এত বড় পৃথিবীতে এঁদের কি কেউ নেই থাকতে দেওয়ার জন্য??"
কি উত্তর দেব বুঝতে পারিনি, আসলে এই সমাজটাকে ৬ বছরের একটা শিশু এখনও বুঝে উঠতে পারেনি ।উত্তর না দেওয়ায় ও আবার প্রশ্ন করে -
"আমার দিদাও বুঝি এমন বয়স্ক হয়ে গেছে তাই না মা বলো,আচ্ছা মা উনি কোথায় ???"
মেয়েটা ভিক্ষা দিচ্ছিল সবাইকে নীচু হয়ে এমন সময় হঠাৎ করে আমার নাম ধরে ডাকা একটা আওয়াজ ভেসে আসল - "মিষ্টি ,মা কে চিনতে পারলি না ???"
"মা ! মা.......আ আ আ আ ... মা তুমি!!!এখানে এই অবস্থায় !! কি করে হল তোমার এমন অবস্থা !! কেন সেদিন বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিলে?? তুমি জানো আমি,তোমার জামাই কত খুঁজেছি তোমাকে এদিক , সেদিক,পুলিশের কাছে গিয়ে কত খোঁজ করেছি, কিন্তু মা তুমি এখানে কিভাবে ???? "
মা - "আমি সেদিন বাড়ি ছাড়তে চাইনি রে মিষ্টি,তোর দাদা বৌদি আমায় জোর করেছিল এই বাড়ি ছাড়তে ,জোর করে বাড়ির দলিলে সই করিয়ে নিয়েছিল ......"
(কথা কেড়ে নিয়ে বললাম....)
"কিন্তু মা দাদা যে বলেছিল সেদিন আমায় ফোন করে তুমি রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছ, ও অনেক খুঁজেছে তোমায় পায়নি"
মা-"না রে মিষ্টি,সেদিন ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার পরও আমি ১ ঘন্টা বাড়ির সামনে বসে ছিলাম, তোর দাদা দেখতে পেয়ে আমায় একটা বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসে,কিন্তু বিশ্বাস কর মা আমি চাইনি অমন জায়গায় থাকতে,বাধ্য হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলাম,ভেবেছিলাম নিয়তি তে যা আছে তাই হোক,খুব মরতে ইচ্ছা করছিল কিন্তু ভগবানের কি লীলা আজ বেঁচে আছি"
"মা তুমি একদম এসব কথা বলো না,তুমি কেন সেদিন আমার বাড়ি গিয়ে ওঠনি ,কেন ??? কেন একটা বার আমায় সবটা জানালে না মা??"
মা-" না রে জামাইবাড়িতে থাকতে নেই রে মা,তুই বুঝবি না"
অতুল - "এসব কথা ছাড়ুন, সেদিন আমার বাড়ি না গিয়ে খুব অন্যায় করেছেন,মা,আজ ভগবান আপনাকে আরেকটা ছেলে দিলেন, আজ থেকে আপনি আমাদের বাড়িতেই মেয়ে,নাতনীর সাথে থাকবেন, চলুন,এটা আজ থেকে আপনার বাড়ি ।"
(চোখে আনন্দের জল আজ বাঁধ মানল না)