ঘরে ফেরা
ঘরে ফেরা
ট্রেন টা হর্ন দিতে দিতে হাওড়া স্টেশন থেকে ছেড়ে কাটওয়া র উদ্দেশে চলতে শুরু করল । আকাশটা এখনো পরিষ্কার সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে ,খবরে বলছিল আজ নাকি বৃষ্টি হতে পারে কই মেঘ তো দেখা যাচ্ছে না ,অবনী একবার ফোনের স্ক্রীন এর দিকে দেখে নিলো কতা বাজে ২ বেজে 20 জাগ ট্রেন টা ঠিক সময়েই ছাড়ল,এসব ভাবতে ভাবতে অবনী ট্রেনের জানলার বাইরে সরে সরে যাওয়া বাড়ি গাছ পোস্ট গুলো দেখতে থাকলো ,কানে হেডফোন তখন গান বাজছে ,দেখতে দেখতে শ্রীরামপুর পেরিয়ে গেলো একবার ভালো করে দেখে মিল স্টেশন টা এখানেই তো বসে ছিলাম আমরা ,গল্প করছিলাম গান গাই ছিলাম তার হাতে হাত রেখে নতুন এর গল্প বানাচ্ছিল ,স্টেশন টা বদলায় নি এই 10 বছরে ,সে বাড়িও যায় নি ফোন দেখা হয় শুধু ,অবনী ভাবনার জাল বুনতে লাগলো 10 বছর আগে এখান থেকেই শুরু হয়েছিল সব তখন কলেজে শেষ হয়েছে এবার কাজের সন্ধানে বেরোতে হবে তখনই দেখা ট্রেন ছেলেটার সাথে এখান থেকে উঠেছিল চঞ্চল চক্ষু একটা সিট খুঁজছিল পেয়েছিল কিন্তু দুটো স্টেশন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গেছিল বুঝেছিলাম আমাকে কিছু বলবে কিন্তু বলতে পারছিল না অবশেষে বলেছিল একটু জায়গা হবে দিদি ,এটা শুনে একটু আহত হয়েছিলাম মুখে কিছু বলি নি হয়তো আন্দাজ করেছিল তাই একটু জায়গা পেতে বসে বলেছিল কিছু মনে করবেন না দিদি বললাম বলে তার ওপর চাপ আর কথা হয় নি অফিসের গেটে এসে আবার দেখা সে থেকে কথা রোজ জোয়া আসা শুরু একসাথে কিন্তু বেশি দিন টেকে নি আসা যাওয়া করা একটু শক্ত ছিল আমাকে পক্ষে বাড়ি থেকে তাই ঘর নি ছিলাম একটা অফিসের কাছেই ছেলেটার সাথে কথা হতে হতে কোথাও যেন ভালো লাগতে শুরু করেছিল বলি কাউকে নিজের মধ্যেই রেখেছিলাম কিন্তু হঠাৎ একদিন একটা ম্যাসেজ আছে একটু দেখা করবে দরকার আছে সেই ছেলে টা তাড়াতাড়ি কোনো রকমে রেডি হয়ে গেছিলাম দেখা করতে ডেকে ছিল হাওড়া স্টেশনে গেছিলাম যেতেই একটা বাদাম এর ঠোঙ্গা দিয়েছিল হতে বলেছিল চলো যাওয়া জাগ আমিও কোনো কথা না জিজ্ঞেস করেই গেছিলাম তার সাথে নিয়েগেছিল তার বাড়ি শ্রীরামপুর কেউ থাকে না একা থাকে ছেলেটি দেখে একটু মায়া হয়েছিল ফেরার সময় বসেছিলাম স্টেশনে বলল আমি একা মানুষ মা বাবা মারা গেছে সে অনেক দিন একটু অগোছালো আমি ,গুছে নেবে আমায় ,কোনো কথা বলতে পারি নি সেদিন শুধু হাতটা শক্ত করে ধরেছিলাম। ,,,বাইরে বৃষ্টি পড়ছে অবনী খেয়াল নেই আর যে সুন্দর হয়েছে উঠেছে পৃথিবী সেটা সে দেখছে কিন্তু মাথায় নিচে না সে আছে নিজের ভাবনায় ।
সেই ছিল শুরু তার পর একসাথে অনেকট পথ হেঁটেছি আমরা ,বাড়িতে জানিয়েও ছিলাম মনেনেও নিয়েছিল কিন্তু ,,,,,,,,,,,,,,,, আর ভাবতে পারে না তার পর কি হয়েছিল ,,,,,,,,এসিডেন্ট নাকি হয়েছিল আমার আর ওর তার পর ,,তারপর আর পারে না মনে করতে আবার একটু চেষ্টা করে না মনে পড়ে না ,এসিডেণ্ট হয়েছিল অবনী র গাড়ি ওই চালাচ্ছিল সাথে ছেলেটা বসে ছিল একটা লড়ি থেকে রড লোহার সোজা লেগেছিল অবনী কানের পাশে সেই থেকে ভুলতে শুরু করে ,আর ছেলেটাকে বাঁচাতে পর যায় নি দুটো রড বুকে ঢুকেছিল ,ডাক্তার বলেছিল আবনীকে সে ভুল যাবে সব কিছু আস্তে আস্তে সেই নি পাঁচটা বছর কাটিয়েছে মনে রেখেছিল আর পারে নি বাড়ি তে যায় নি জানিয়েছে এই তাই ফিরে যাচ্ছে সে ।
অবনী আবার চেষ্টা করে মনে করার নামটা কি ছিল ছেলেটার আবার ভাবতে থাকে ,
ভাবনার জাল ছিঁড়ে যায় ফোন আসে মা করেছে রিসিভ করে হেলো বলে,মা বলে ভুলিস না কালনাই নামতে হবে ।
হ্যাঁ ঠিক কল্যাণ ছিল নামনে পড়ে ,ফোন টা রেখে একবার অ্যাপে দেখে নেই কোথায় আছে ,এবার নামতে হবে কালনা পরের স্টেশন আবার মুখতুলে চারপাশটা দেখে নেই বৃষ্টি পড়ছে ,জানলার কাঁচের রিফ্লেকশন দেখে তার চোখে জল কারণ বুজতে পারে না মুছে নিয়ে উঠে পড়ে ,নেমে যায় স্টেশনে ,,,,,,,,,,,,।

